RSS

শ্রীশ্রীচণ্ডী (মূল সহ বঙ্গানুবাদ) :: প্রথম পর্ব :: অর্গলাস্তোত্রম্‌

18 মার্চ

।। ওঁ নমশ্চণ্ডিকায়ৈ ।।

                                                             

ওঁ অস্য শ্রীঅর্গলাস্তোত্রমন্ত্রস্য বিষ্ণুর্ঋষিঃ অনুষ্টুপ্ছন্দঃ শ্রীমহালক্ষ্মীর্দেবতা শ্রীজগদম্বাপ্রীত্যর্থং সপ্তশতীপাঠাঙ্গজপে বিনিয়োগঃ।

এই অর্গলাস্তোত্রের ঋষি হলেন বিষ্ণু, ছন্দ হল অনুষ্টুপ ও দেবতা হলেন শ্রীমহালক্ষ্মী। জগজ্জননীর প্রীতির জন্য শ্রীশ্রীচণ্ডীপাঠের অঙ্গরূপে এই স্তোত্র পাঠ করা হয়।

ওঁ মার্কণ্ডেয় উবাচ।

মার্কণ্ডেয় বললেন–

ওঁ জয় ত্বং দেবি চামুণ্ডে জয় ভূতাপহারিণি।[*]

জয় সর্বগতে দেবি কালরাত্রি নমোঽস্তু তে।। ১

হে দেবী চামূণ্ডা, তোমার জয় হোক। হে দেবী, তুমি জীবের দুঃখনাশকারিণী; তুমি সর্বভূতে অবস্থিতা; আবার তুমিই প্রলয়ের অন্ধকার স্বরূপিণী কালরাত্রি। তোমায় নমস্কার করি।

জয়ন্তী মঙ্গলা কালী ভদ্রকালী কপালিনী।

দুর্গা শিবা ক্ষমা ধাত্রী স্বাহা স্বধা নমোঽস্তু তে।। ২

হে দেবী, তুমি সর্বোৎকৃষ্টা জয়যুক্তা দেবী জয়ন্তী; তুমি জন্মমৃত্যুবিনাশিনী মোক্ষপ্রদায়িনী দেবী মঙ্গলা; তুমি সর্বসংহারকারিণী কালী; তুমি সুখদায়িনী ভদ্রকালী; আবার তুমিই প্রলয়কালে ব্রহ্মা প্রমুখের মাথার খুলি হস্তে নৃত্যরতা কপালিনী। তুমি দুর্গা, কারণ বহু কষ্ট স্বীকার করে তবে তোমায় লাভ করা যায়; তুমি চৈতন্যময়ী শিবা; তুমি করুণাময়ী ক্ষমা; তুমি বিশ্বধারিণী ধাত্রী; তুমি দেবগণের পোষণকর্ত্রী স্বাহা ও পিতৃগণের পোষণকর্ত্রী স্বধা। তোমায় নমস্কার করি।

মধুকৈটভবিধ্বংসি[†] বিধাতৃবরদে নমঃ।

রূপং দেহি জয়ং দেহি যশো দেহি দ্বিষো জহি।। ৩

হে দেবী, তুমি মধুকৈটভ নামক দুই অসুরকে বিনাশ করেছিলে। তুমি ব্রহ্মাকে বরপ্রদান করেছিলে। তোমায় প্রণাম করি। তুমি আমাকে রূপ অর্থাৎ পরমাত্মবস্তু, জয় অর্থাৎ বেদ ইত্যাদি শাস্ত্রের জ্ঞান এবং যশ অর্থাৎ বেদ ইত্যাদি শাস্ত্রজ্ঞের খ্যাতি প্রদান কর। তুমি আমার কামক্রোধ ইত্যাদি শত্রুগুলিকে নাশ করো।

মহিষাসুরনির্ণাশি ভক্তানাং সুখদে নমঃ।

রূপং দেহি জয়ং দেহি যশো দেহি দ্বিষো জহি।। ৪

হে দেবী, তুমি মহিষাসুরমর্দিনী। আবার তুমিই ভক্তগণে সুখ প্রদান করে থাকো। তোমায় প্রণাম করি। তুমি আমাকে রূপ অর্থাৎ পরমাত্মবস্তু, জয় অর্থাৎ বেদ ইত্যাদি শাস্ত্রের জ্ঞান এবং যশ অর্থাৎ বেদ ইত্যাদি শাস্ত্রজ্ঞের খ্যাতি প্রদান কর। তুমি আমার কামক্রোধ ইত্যাদি শত্রুগুলিকে নাশ করো।

ধূম্রনেত্রবধে দেবি ধর্মকামার্থদায়িনি।

রূপং দেহি জয়ং দেহি যশো দেহি দ্বিষো জহি।। ৫

হে দেবী, তুমি ধূম্রলোচন অসুরকে বধ করেছিলে। আবার তুমিই ভক্তকে ধর্ম, অর্থ ও কাম প্রদান করো। তুমি আমাকে রূপ অর্থাৎ পরমাত্মবস্তু, জয় অর্থাৎ বেদ ইত্যাদি শাস্ত্রের জ্ঞান এবং যশ অর্থাৎ বেদ ইত্যাদি শাস্ত্রজ্ঞের খ্যাতি প্রদান কর। তুমি আমার কামক্রোধ ইত্যাদি শত্রুগুলিকে নাশ করো।

রক্তবীজবধে দেবি চণ্ডমুণ্ডবিনাশিনি।

রূপং দেহি জয়ং দেহি যশো দেহি দ্বিষো জহি।। ৬

হে দেবী, তুমি রক্তবীজ, চণ্ড ও মুণ্ড অসুরত্রয়কে বধ করেছিলে। তুমি আমাকে রূপ অর্থাৎ পরমাত্মবস্তু, জয় অর্থাৎ বেদ ইত্যাদি শাস্ত্রের জ্ঞান এবং যশ অর্থাৎ বেদ ইত্যাদি শাস্ত্রজ্ঞের খ্যাতি প্রদান কর। তুমি আমার কামক্রোধ ইত্যাদি শত্রুগুলিকে নাশ করো।

শুম্ভনিশুম্ভনির্ণাশি ত্রৈলোক্যশুভদে নমঃ।

রূপং দেহি জয়ং দেহি যশো দেহি দ্বিষো জহি।। ৭

হে দেবী, তুমি শুম্ভ ও নিশুম্ভ অসুরদ্বয়কে বধ করেছিলে। আবার তুমিই তিন লোকের কল্যাণকারিনী। তোমায় প্রণাম করি। তুমি আমাকে রূপ অর্থাৎ পরমাত্মবস্তু, জয় অর্থাৎ বেদ ইত্যাদি শাস্ত্রের জ্ঞান এবং যশ অর্থাৎ বেদ ইত্যাদি শাস্ত্রজ্ঞের খ্যাতি প্রদান কর। তুমি আমার কামক্রোধ ইত্যাদি শত্রুগুলিকে নাশ করো।

বন্দিতাঙ্ঘ্রিযুগে দেবি সর্বসৌভাগ্যদায়িনি।

রূপং দেহি জয়ং দেহি যশো দেহি দ্বিষো জহি।। ৮

হে দেবী, ব্রহ্মা প্রমুখ দেবগণ তোমার পদযুগল বন্দনা করেন। তুমি সকল প্রকার সৌভাগ্য প্রদান করো। তুমি আমাকে রূপ অর্থাৎ পরমাত্মবস্তু, জয় অর্থাৎ বেদ ইত্যাদি শাস্ত্রের জ্ঞান এবং যশ অর্থাৎ বেদ ইত্যাদি শাস্ত্রজ্ঞের খ্যাতি প্রদান কর। তুমি আমার কামক্রোধ ইত্যাদি শত্রুগুলিকে নাশ করো।

অচিন্ত্যরূপচরিতে সর্বশত্রুবিনাশিনি।

রূপং দেহি জয়ং দেহি যশো দেহি দ্বিষো জহি।। ৯

হে দেবী, তোমার রূপ ও কার্য চিন্তার অগম্য। তুমি সকল শত্রুকে বিনাশ করে থাকো। তুমি আমাকে রূপ অর্থাৎ পরমাত্মবস্তু, জয় অর্থাৎ বেদ ইত্যাদি শাস্ত্রের জ্ঞান এবং যশ অর্থাৎ বেদ ইত্যাদি শাস্ত্রজ্ঞের খ্যাতি প্রদান কর। তুমি আমার কামক্রোধ ইত্যাদি শত্রুগুলিকে নাশ করো।

নতেভ্য সর্বদা ভক্ত্যা চাপর্ণে দুরিতাপহে[‡]

রূপং দেহি জয়ং দেহি যশো দেহি দ্বিষো জহি।। ১০

হে অপর্ণা[§], তুমি আশ্রিত ভক্তের পাপ নাশ করো। তুমি আমাকে রূপ অর্থাৎ পরমাত্মবস্তু, জয় অর্থাৎ বেদ ইত্যাদি শাস্ত্রের জ্ঞান এবং যশ অর্থাৎ বেদ ইত্যাদি শাস্ত্রজ্ঞের খ্যাতি প্রদান কর। তুমি আমার কামক্রোধ ইত্যাদি শত্রুগুলিকে নাশ করো।

স্তুবদ্ভ্যো ভক্তিপূর্বং ত্বাং চণ্ডিকে ব্যাধিনাশিনি।

রূপং দেহি জয়ং দেহি যশো দেহি দ্বিষো জহি।। ১১

হে দেবী চণ্ডিকা, যে ভক্তিসহকারে তোমার স্তব করে, তুমি তার ব্যাধি নাশ করো। তুমি আমাকে রূপ অর্থাৎ পরমাত্মবস্তু, জয় অর্থাৎ বেদ ইত্যাদি শাস্ত্রের জ্ঞান এবং যশ অর্থাৎ বেদ ইত্যাদি শাস্ত্রজ্ঞের খ্যাতি প্রদান কর। তুমি আমার কামক্রোধ ইত্যাদি শত্রুগুলিকে নাশ করো।

চণ্ডিকে সততং যুদ্ধে জয়ন্তি পাপনাশিনি।

রূপং দেহি জয়ং দেহি যশো দেহি দ্বিষো জহি।। ১২

হে দেবী চণ্ডিকা, তুমি সতত যুদ্ধে বিজয়িনী ও পাপনাশিনী। তুমি আমাকে রূপ অর্থাৎ পরমাত্মবস্তু, জয় অর্থাৎ বেদ ইত্যাদি শাস্ত্রের জ্ঞান এবং যশ অর্থাৎ বেদ ইত্যাদি শাস্ত্রজ্ঞের খ্যাতি প্রদান কর। তুমি আমার কামক্রোধ ইত্যাদি শত্রুগুলিকে নাশ করো।

দেহি সৌভাগ্যমারোগ্যং দেহি দেবি পরং সুখম্।

রূপং দেহি জয়ং দেহি যশো দেহি দ্বিষো জহি।। ১৩

হে দেবী, তুমি আমাকে সৌভাগ্য ও আরোগ্য প্রদান করো। আমাকে দাও পরম সুখ। তুমি আমাকে রূপ অর্থাৎ পরমাত্মবস্তু, জয় অর্থাৎ বেদ ইত্যাদি শাস্ত্রের জ্ঞান এবং যশ অর্থাৎ বেদ ইত্যাদি শাস্ত্রজ্ঞের খ্যাতি প্রদান কর। তুমি আমার কামক্রোধ ইত্যাদি শত্রুগুলিকে নাশ করো।

বিধেহি দেবি কল্যাণং বিধেহি বিপু্লাং শ্রিয়ম্।

রূপং দেহি জয়ং দেহি যশো দেহি দ্বিষো জহি।। ১৪

হে দেবী, তুমি আমার কল্যাণ করো। আমাকে প্রদান করো বিপুল ঐশ্বর্য। তুমি আমাকে রূপ অর্থাৎ পরমাত্মবস্তু, জয় অর্থাৎ বেদ ইত্যাদি শাস্ত্রের জ্ঞান এবং যশ অর্থাৎ বেদ ইত্যাদি শাস্ত্রজ্ঞের খ্যাতি প্রদান কর। তুমি আমার কামক্রোধ ইত্যাদি শত্রুগুলিকে নাশ করো।

বিধেহি দ্বিষতাং নাশং বিধেহি বলমুচ্চকৈঃ।

রূপং দেহি জয়ং দেহি যশো দেহি দ্বিষো জহি।। ১৫

হে দেবী, তুমি আমার শত্রুনাশের সহায়ক হও। আমাকে দাও প্রচুর বল। তুমি আমাকে রূপ অর্থাৎ পরমাত্মবস্তু, জয় অর্থাৎ বেদ ইত্যাদি শাস্ত্রের জ্ঞান এবং যশ অর্থাৎ বেদ ইত্যাদি শাস্ত্রজ্ঞের খ্যাতি প্রদান কর। তুমি আমার কামক্রোধ ইত্যাদি শত্রুগুলিকে নাশ করো।

সুরাসুরশিরোরত্ননিঘৃষ্টচরণাম্বুজে।

রূপং দেহি জয়ং দেহি যশো দেহি দ্বিষো জহি।। ১৬

হে দেবী, দেবতা ও অসুরগণের মুকুটের মণি তোমার চরণপদ্মে লুটায়। তুমি আমাকে রূপ অর্থাৎ পরমাত্মবস্তু, জয় অর্থাৎ বেদ ইত্যাদি শাস্ত্রের জ্ঞান এবং যশ অর্থাৎ বেদ ইত্যাদি শাস্ত্রজ্ঞের খ্যাতি প্রদান কর। তুমি আমার কামক্রোধ ইত্যাদি শত্রুগুলিকে নাশ করো।

বিদ্যাবন্তং যশোস্বন্তং লক্ষ্মীবন্তঞ্চ মাং কুরু।

রূপং দেহি জয়ং দেহি যশো দেহি দ্বিষো জহি।। ১৭

তুমি আমাকে ব্রহ্মবিদ্যা, যশ ও ধন প্রদান করো। তুমি আমাকে রূপ অর্থাৎ পরমাত্মবস্তু, জয় অর্থাৎ বেদ ইত্যাদি শাস্ত্রের জ্ঞান এবং যশ অর্থাৎ বেদ ইত্যাদি শাস্ত্রজ্ঞের খ্যাতি প্রদান কর। তুমি আমার কামক্রোধ ইত্যাদি শত্রুগুলিকে নাশ করো।

দেবি প্রচণ্ডদোর্দণ্ডদৈত্যদর্পনিষূদিনি।

রূপং দেহি জয়ং দেহি যশো দেহি দ্বিষো জহি।। ১৮

হে দেবী, তুমি প্রবল পরাক্রমশালী দৈত্যের দর্প চূর্ণ করেছো। তুমি আমাকে রূপ অর্থাৎ পরমাত্মবস্তু, জয় অর্থাৎ বেদ ইত্যাদি শাস্ত্রের জ্ঞান এবং যশ অর্থাৎ বেদ ইত্যাদি শাস্ত্রজ্ঞের খ্যাতি প্রদান কর। তুমি আমার কামক্রোধ ইত্যাদি শত্রুগুলিকে নাশ করো।

প্রচণ্ডদৈত্যদর্পঘ্নে চণ্ডিকে প্রণতায় মে।

রূপং দেহি জয়ং দেহি যশো দেহি দ্বিষো জহি।। ১৯

হে দেবী চণ্ডিকা, তুমি প্রচণ্ড দৈত্যের দর্প হরণ করেছো। তোমার পায়ে সতত আমার প্রণাম রাখি। তুমি আমাকে রূপ অর্থাৎ পরমাত্মবস্তু, জয় অর্থাৎ বেদ ইত্যাদি শাস্ত্রের জ্ঞান এবং যশ অর্থাৎ বেদ ইত্যাদি শাস্ত্রজ্ঞের খ্যাতি প্রদান কর। তুমি আমার কামক্রোধ ইত্যাদি শত্রুগুলিকে নাশ করো।

চতুর্ভূজে চতুর্বক্রসংস্তুতে পরমেশ্বরি।

রূপং দেহি জয়ং দেহি যশো দেহি দ্বিষো জহি।। ২০

হে চতুর্ভূজা দেবী, হে পরমেশ্বরী, ব্রহ্মা চার মুখে তোমার স্তব করেন। তুমি আমাকে রূপ অর্থাৎ পরমাত্মবস্তু, জয় অর্থাৎ বেদ ইত্যাদি শাস্ত্রের জ্ঞান এবং যশ অর্থাৎ বেদ ইত্যাদি শাস্ত্রজ্ঞের খ্যাতি প্রদান কর। তুমি আমার কামক্রোধ ইত্যাদি শত্রুগুলিকে নাশ করো।

কৃষ্ণেন সংস্তুতে দেবি শশ্বদ্ভক্ত্যা সদাম্বিকে।

রূপং দেহি জয়ং দেহি যশো দেহি দ্বিষো জহি।। ২১

হে দেবী অম্বিকা, কৃষ্ণ সর্বদা ভক্তিসহকারে তোমার স্তব করেন। তুমি আমাকে রূপ অর্থাৎ পরমাত্মবস্তু, জয় অর্থাৎ বেদ ইত্যাদি শাস্ত্রের জ্ঞান এবং যশ অর্থাৎ বেদ ইত্যাদি শাস্ত্রজ্ঞের খ্যাতি প্রদান কর। তুমি আমার কামক্রোধ ইত্যাদি শত্রুগুলিকে নাশ করো।

হিমাচলসুতানাথসংস্তুতে পরমেশ্বরি।

রূপং দেহি জয়ং দেহি যশো দেহি দ্বিষো জহি।। ২২

হে পরমেশ্বরী, হিমালয়ের কন্যা উমার পতি শিব সর্বদা তোমার স্তব করেন। তুমি আমাকে রূপ অর্থাৎ পরমাত্মবস্তু, জয় অর্থাৎ বেদ ইত্যাদি শাস্ত্রের জ্ঞান এবং যশ অর্থাৎ বেদ ইত্যাদি শাস্ত্রজ্ঞের খ্যাতি প্রদান কর। তুমি আমার কামক্রোধ ইত্যাদি শত্রুগুলিকে নাশ করো।

ইন্দ্রাণীপতিসদ্ভাবপূজিতে পরমেশ্বরি।

রূপং দেহি জয়ং দেহি যশো দেহি দ্বিষো জহি।। ২৩

হে পরমেশ্বরী, দেবরাজ ইন্দ্রের পত্নী শচী স্বামীর সন্ধান পাওয়ার জন্য তোমার পূজা করেছিলেন।[**] তুমি আমাকে রূপ অর্থাৎ পরমাত্মবস্তু, জয় অর্থাৎ বেদ ইত্যাদি শাস্ত্রের জ্ঞান এবং যশ অর্থাৎ বেদ ইত্যাদি শাস্ত্রজ্ঞের খ্যাতি প্রদান কর। তুমি আমার কামক্রোধ ইত্যাদি শত্রুগুলিকে নাশ করো।

দেবি ভক্তজনোদ্দামদত্তানন্দোদয়েঽম্বিকে।

রূপং দেহি জয়ং দেহি যশো দেহি দ্বিষো জহি।। ২৪

হে দেবী, তুমি ভক্তের হৃদয়ে প্রদান করো অপার আনন্দ। তুমি আমাকে রূপ অর্থাৎ পরমাত্মবস্তু, জয় অর্থাৎ বেদ ইত্যাদি শাস্ত্রের জ্ঞান এবং যশ অর্থাৎ বেদ ইত্যাদি শাস্ত্রজ্ঞের খ্যাতি প্রদান কর। তুমি আমার কামক্রোধ ইত্যাদি শত্রুগুলিকে নাশ করো।

ভার্যাং মনোরমাং দেহি মনোবৃত্ত্যানুসারিণীম্।

রূপং দেহি জয়ং দেহি যশো দেহি দ্বিষো জহি।। ২৫

হে দেবী, আমার মন বুঝে চলবে এমন মনোরমা পত্নী আমাকে প্রদান করো। তুমি আমাকে রূপ অর্থাৎ পরমাত্মবস্তু, জয় অর্থাৎ বেদ ইত্যাদি শাস্ত্রের জ্ঞান এবং যশ অর্থাৎ বেদ ইত্যাদি শাস্ত্রজ্ঞের খ্যাতি প্রদান কর। তুমি আমার কামক্রোধ ইত্যাদি শত্রুগুলিকে নাশ করো।

তারিণি দুর্গসংসারসাগরস্যাচলোদ্ভবে।

রূপং দেহি জয়ং দেহি যশো দেহি দ্বিষো জহি।। ২৭

হে গিরিসূতা, দুস্তর সংসারসমুদ্রে আমাকে রক্ষা করো তুমি। তুমি আমাকে রূপ অর্থাৎ পরমাত্মবস্তু, জয় অর্থাৎ বেদ ইত্যাদি শাস্ত্রের জ্ঞান এবং যশ অর্থাৎ বেদ ইত্যাদি শাস্ত্রজ্ঞের খ্যাতি প্রদান কর। তুমি আমার কামক্রোধ ইত্যাদি শত্রুগুলিকে নাশ করো।

ইদং স্তোত্রং পঠিত্বা তু মহাস্তোত্রং পঠেন্নরঃ।

সপ্তশতী সমারাধ্য বরমাপ্নোতি দুর্লভম্।। ২৭

এই স্তোত্র পাঠ করে মহাস্তোত্র সপ্তশতীস্তব পাঠ করতে হয়। এইভাবে সপ্তশতীর পূজা করলে মানুষ দুর্লভ বর পায়।

ইতি অর্গলাস্তোত্রম্ সমাপ্তম্।

অর্গলাস্তোত্র সমাপ্ত।


[*] পাঠান্তরে ভূতার্ত্তিহারিণি বা ভূতাপসারিণি।

[†] পাঠান্তরে মধুকৈটভবিদ্রাবি।

[‡] পাঠান্তরে নতেভ্য সর্বদা ভক্ত্যা চণ্ডিকে প্রণতায় মে।

[§] পার্বতী যখন শিবকে পতিরূপে লাভ করবার জন্য তপস্যা করছিলেন, সেই সময় তিনি একটি গলিত পাতাও ভক্ষণ করেননি। তাই তাঁর অপর নাম হয় অপর্ণা।

[**] পুরাণ বলে, দুর্বাশার অভিশাপে লক্ষ্মীহারা হয়ে ইন্দ্র সকলের অজ্ঞাতে একটি সরোবরের পদ্মের মৃণালে আত্মগোপন করেন। সেই সময় ইন্দ্রের পত্নী পৌলোমী চণ্ডীর আরাধনা করে স্বামীর সন্ধান পান।

 
১ টি মন্তব্য

Posted by চালু করুন মার্চ 18, 2012 in পুরনো লেখা

 

ট্যাগ সমুহঃ

One response to “শ্রীশ্রীচণ্ডী (মূল সহ বঙ্গানুবাদ) :: প্রথম পর্ব :: অর্গলাস্তোত্রম্‌

  1. Anudip Saha

    ডিসেম্বর 3, 2017 at 8:29 পুর্বাহ্ন

    খুব ভালো লাগল দাদা।
    জয় মা দূর্গা দূর্গতিনাশিনী

     

মন্তব্য করুন

Fill in your details below or click an icon to log in:

WordPress.com Logo

You are commenting using your WordPress.com account. Log Out /  পরিবর্তন )

Facebook photo

You are commenting using your Facebook account. Log Out /  পরিবর্তন )

Connecting to %s

 
%d bloggers like this: