ইন দ্য স্কালপটর’স স্টুডিও নরওয়ের আকাদেমিক শিল্পী ক্রিস্টিয়ান মেয়ের রসের (১৮৪৩-১৯০৪) আঁকা। এই ছবিতে রস একজন ভাস্করের কাজের গভীরতাটি ধরেছেন। একটি দিব্যপ্রকৃতির শিল্পকর্ম শিল্পীর যে নিষ্ঠা ও গভীর মনোযোগের ফসল তারই প্রতীকী একটি রূপ ধরা পড়েছে এই ছবিতে। মূল ছবিটি রয়েছে একটি ব্যক্তিগত সংগ্রহে। সেটির আকার ২০.২ X ১৩.৫ ইঞ্চি।
Monthly Archives: জুলাই 2011
বৈদিক দেবতাদের সাধারণ পরিচিতি
মূল রচনা: ডব্লিউ. জে. উইলকিনস (হিন্দু মিথোলজি: বৈদিক অ্যান্ড পৌরাণিক থেকে)
অনুবাদ: অর্ণব দত্ত
যাস্ক (সম্ভবত বেদের প্রাচীনতম ভাষ্যকার) বৈদিক দেবতাদের নিম্নলিখিত শ্রেণীগুলিতে ভাগ করেছেন। “বেদ-ব্যাখ্যাকারীদের মতে তিন জন দেবতা রয়েছেন: অগ্নি, যাঁর স্থান মাটিতে; বায়ু, যাঁর স্থান বাতাসে; এবং সূর্য, যাঁর স্থান আকাশে। এঁদের মহত্ব ও কাজের বৈচিত্র্য অনুযায়ী নানা অভিধায় ভূষিত করা হয়ে থাকে।” (ম্যুর, ও.এস.টি. খণ্ড ৮) খোদ ঋগ্বেদেই দেবতাদের এই সংখ্যাটি বেড়ে হয়েছে তেত্রিশ। এঁদের মধ্যে এগারোজন বাস করেন স্বর্গে, এগারোজন পৃথিবীতে এবং এগারোজন মধ্য-আকাশে বাস করেন। “সর্বজ্ঞ দেবতা অগ্নি, পূজকের কথা শোনেন। তিনি রক্তিম ঘোড়ার আরোহী এবং স্তব শুনতে ভালবাসেন। তিনিই তেত্রিশ জনকে এখানে নিয়ে আসেন।” এই সংখ্যাটাই সাধারণভাবে উল্লেখ করা হয়। তবে এ থেকে বোঝা যায় না যে কোন তেত্রিশ জনের কথা বলা হয়েছে। কারণ, অন্যান্য সূত্র থেকে প্রাপ্ত তালিকাগুলি পরস্পরবিরোধী তথ্যে ভরা। অন্য একটি স্তোত্র থেকে জানা যায়, “তিনশো, তিন হাজার, উনচল্লিশজন দেবতা অগ্নির পূজা করে।”
টেলস ফ্রম শেকসপিয়র: অ্যাজ ইউ লাইক ইট

”অ্যাজ ইউ লাইক ইট” নাটকের একটি মুহুর্তে অর্ল্যান্ডোর ভূমিকায় জ্যাক ল্যাসকি ও রোজালিন্ডের ভূমিকায় নাওমি ফ্রেডেরিক। ফটোগ্রাফ: ট্রিস্ট্রাম কেন্টন।
অ্যাজ ইউ লাইক ইট
মূল রচনা: উইলিয়াম শেকসপিয়র
পুনর্কথন: মেরি ল্যাম্ব
অনুবাদ: অর্ণব দত্ত
সেকালের ফ্রান্স বিভক্ত ছিল একাধিক প্রদেশে (যেগুলিকে বলা হত ডিউক-শাসিত রাজ্য)। এমনই এক প্রদেশ শাসন করতেন জনৈক প্রবঞ্চক, যিনি তাঁর দাদা তথা রাজ্যের ন্যায়সঙ্গত শাসককে বলপূর্বক উচ্ছেদ করে মসনদ দখল করেছিলেন।
স্বরাজ্য থেকে বিতাড়িত হয়ে উক্ত ডিউক জনাকতক বিশ্বস্ত অনুচর নিয়ে আশ্রয় নিয়েছিলেন আর্ডেনের বনে। সহমর্মী স্বেচ্ছানির্বাসিত এই সব বন্ধুদের নিয়ে সেই বনেই বাস করছিলেন মহান ডিউক। আর তাঁদের জমি ও রাজস্বভাগ ভোগদখল করে ফুলে ফেঁপে উঠছিলেন সেই প্রবঞ্চক। ধীরে ধীরে বনের সরল নিরুদ্বেগ জীবনযাত্রা রাজোচিত জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠানবহুল জীবনযাত্রার তুলনায় প্রিয়তর হয়ে উঠল তাঁদের কাছে। তাঁরা বসবাস করতে লাগলেন সেকালের ইংল্যান্ডের রবিন হুডের মতো। রোজই রাজসভার কোনো না কোনো সম্ভ্রান্ত ব্যক্তি আসতেন বনে। নিরুদ্বেগে কাটিয়ে যেতেন কিছুটা সময়। তাঁদের কাছে সেই সময়টুকু মনে হত সুবর্ণযুগ। গ্রীষ্মে প্রকাণ্ড বুনো গাছের শীতল ছায়ায় শুয়ে থাকতেন তাঁরা। খেলা করতেন বুনো হরিণের সঙ্গে। বনের এই অবলা হরিণগুলিকে তাঁরা এত ভালবাসতেন যে, খাদ্যের প্রয়োজনে এগুলিকে হত্যা করতে খুব কষ্ট হত তাঁদের। শীতের হিমেল বাতাস ডিউককে তাঁর দুর্ভাগ্যের কথা স্মরণ করিয়ে যেত। তিনি সহ্য করতেন। ধৈর্য ধরতেন। বলতেন, “এই যে হিমেল হাওয়া আমার শরীরে কাঁপন ধরাচ্ছে, এরাই আমার সত্যিকারের সভাসদ। এরা চাটুকথা বলে না। সত্যি কথা বলে প্রতিনিয়ত আমাকে আমার প্রকৃত অবস্থাটা দেখিয়ে দেয়। এরা কামড় বসায় তীক্ষ্ণ দাঁতে। কিন্তু সে দাঁত এদের অকৃতজ্ঞের দাঁত নয়। মানুষ দুর্ভাগ্য চায় না। কিন্তু দুর্ভাগ্য মানুষকে কতই না অমূল্য সম্পদ দিয়ে যায়। অশুভের মধ্যেও লুকিয়ে থাকে শুভ। যেমন গরল থেকেও পাওয়া যায় জীবনদায়ী ওষুধ, অমৃত।” সবকিছু থেকেই একটা না একটা নীতিবাক্য ঠিক টেনে বার করতেন ডিউক। এই জনহীন বনের সব কিছুই তাঁর চোখে মঙ্গলময় ঠেকত। তাই তিনি গাছের মধ্যে খুঁজে পেতেন ভাষা, বহমান সোঁতার মধ্যে খুঁজে পেতেন পুথি, পাথরের মধ্যে দেখতেন উপদেশমালা আর সব কিছুর মধ্যে পেতেন পরম ভালকে।
বেদ
মূল রচনা: ডব্লিউ. জে. উইলকিনস (হিন্দু মিথোলজি: বৈদিক অ্যান্ড পৌরাণিক থেকে)
অনুবাদ: অর্ণব দত্ত
বৈদিক দেবতাদের কথা বলার আগে বৈদিক দেবতা বিষয়ে আমাদের তথ্যের উৎস বেদ সম্পর্কে কিছু বলে নেওয়া প্রয়োজন। শব্দটির উৎস হল বিদ্, “জানা”; অর্থাৎ বেদ শব্দের অর্থ জ্ঞান। এই বইগুলি রচনার বহু বছর পরে লিপিবদ্ধ হয়েছিল। এর অর্থ, যে জ্ঞানের কথা বলা হচ্ছে, তা শুনে শুনে মনে রাখা হত বা মৌখিকভাবে প্রদত্ত হত। বেদসমূহ কোনো একক ব্যক্তির দ্বারা রচিত নয়। লোকবিশ্বাস অনুযায়ী, একাধিক ঋষির নিকট বেদসমূহ প্রদত্ত হয়েছিল। এই ঋষিগণ আবার তাঁদের শিষ্যদের কাছে বেদসমূহ হস্তান্তরিত করেন। মহর্ষি ব্যাস হলেন বেদসমূহের বিন্যাসক, বা আমাদের আজকের ভাষায় বললে, সম্পাদক।
এই রচনাসমূহে যে নির্দেশাবলি গ্রন্থিত রয়েছে, তা স্বয়ং ঈশ্বর কর্তৃক কথিত হয়েছে বলে লোকের ধারণা। অন্যান্য লেখকেরা বলে থাকেন, আগুন থেকে যেমন ধোঁয়া বের হয়, তেমনি ঈশ্বর থেকে বেদ উৎপন্ন হয়েছে। অপর মতে, বেদ পঞ্চভূত থেকে উৎসারিত। বেদের উৎস সম্পর্কে নানা মুনির নানা মত। কিন্তু একটি ব্যাপারে সবাই একমত। সেটি হল, বেদ মানুষের প্রতি ঈশ্বরের একটি প্রত্যক্ষ উপহার। এই জন্য বেদের প্রতি মানুষের শ্রদ্ধাবোধও সর্বোচ্চ স্তরের। বেদসমূহ ব্রাহ্মণদের বিশেষ সম্পত্তি। আইন রচয়িতা মনুর সময়কাল পর্যন্ত নিম্ন বর্ণের কোনো ব্যক্তির বেদের একটি শব্দও প্রকাশ করা মহা-অপরাধ বলে গণ্য করা হত। উল্লেখ্য, মনু বেদ রচনার দুই-তিন শতাব্দী পরের লোক। অবশ্য কেউ কেউ বলেন তিনি খ্রিস্টীয় পঞ্চম শতাব্দীর মানুষ ছিলেন।
পশ্চিমবঙ্গের নাম পরিবর্তন
স্বাধীনতার পর যখন ব্রিটিশ বাংলা প্রদেশ দ্বিধাবিভক্ত হয়, তখন তার পূর্বার্ধের নাম হয় ‘পূর্ব বাংলা’ ও পশ্চিমার্ধের নাম হয় ‘পশ্চিমবঙ্গ’। ১৯৫৬ সাল নাগাদ পূর্ব বাংলার নাম পরিবর্তিত হয়ে হয় পূর্ব পাকিস্তান। তারপর ১৯৭১ সালে পূর্ব পাকিস্তান হয় বাংলাদেশ। এইভাবে কালের গর্ভে বিলীন হয়ে যায় ইতিহাসের পূর্ববঙ্গ। কিন্তু পূর্ব না থাকলেও, পশ্চিমটি কিন্তু ঠিকই থেকে যায় আমাদের রাজ্যের নামের আগে।
১৯৯৯ সালে জ্যোতি বসুর মুখ্যমন্ত্রিত্বকালের একেবারে শেষপর্বে ‘পশ্চিমবঙ্গ’ থেকে পশ্চিম ছেঁটে ফেলার চিন্তাভাবনা শুরু হয়। বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর ‘ক্যালকাটা’-কে ‘কলকাতা’ আর ‘পশ্চিমবঙ্গ’কে ‘বাংলা’ করার উদ্যোগ নেন। ‘ক্যালকাটা’ ‘কলকাতা’ হয়, কিন্তু রাজ্যের নাম পরিবর্তনের ইস্যুটি হিমঘরে চলে যায়। রসিক নিন্দুক বলে থাকে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সে সময় তাঁর দলের মুখপত্রের ‘জাগো বাংলা’ নামকরণ করে ‘বাংলা’ নামটির প্রতি বুদ্ধবাবুকে বীতশ্রদ্ধ করে তুলেছিলেন!
মাচ অ্যাডু অ্যাবাউট নাথিং (বাংলা) :: ১ম অঙ্ক, ৩য় দৃশ্য
তৃতীয় দৃশ্য
ডন জন ও কনরাডের প্রবেশ
কনরাড। সত্যি বলুন তো, প্রভু। আপনার কিসের এত দুঃখ?
ডন জন। আমার দুঃখের কারণ অগুনতি। তাই আমার দুঃখেরও কোনো সীমা-পরিসীমা নেই।
কনরাড। আপনি ব্যাপারটা যুক্তি দিয়ে বিচার করুন।
ডন জন। বেশ, না হয় তাই করলাম। কিন্তু করে পাবোটা কী?
কনরাড। তাতে যদি আপনার দুঃখ নাও ঘোচে, অন্তত দুঃখ সহ্য করার শক্তিটুকু পাবেন।
ডন জন। তুই নিজে জন্মেছিস শনির দশা নিয়ে, আর আমার অবস্থা নিয়ে আমাকেই লম্বাই-চওড়াই ঝাড়ছিস। আমি নিজেকে গোপন করতে পারি না। আমার মন খারাপ হলে আমি গোমড়া মুখে বসে থাকি; তখন কারোর হাসির কথাতেও হাসি না। খিদে পেলে খাই; দেখি না খাবার সময় হয়েছে কিনা। ঘুম পেলে ঘুমাই; অকারণে ঘুম নষ্ট করি না। আবার মন ভাল থাকলে হাসি; কাউকে তোষামোদ করে বা কারোর দিকে ভুরু কুঁচকে হাসি না।