RSS

Monthly Archives: অগাষ্ট 2012

সহজ শিবপূজাপদ্ধতি

এই রচনাটি কপিরাইটমুক্ত। হিন্দুধর্মের প্রচারার্থে এটি অন্যত্র প্রকাশে কোনো বাধা নেই। তবে বাণিজ্যিকভাবে প্রকাশ করা নিষিদ্ধ।

যোগীবর শিব

দেবের দেব মহাদেব। এমন মহাশক্তিধর, অথচ অল্পে-তুষ্ট দেবতা হিন্দু দেবমণ্ডলীতে বিরল। রামপ্রসাদের গানে আছে, ‘শিব আশুতোষ মহান দাতা’। সামান্য ফুল-বেলপাতা তাঁর মাথায় দিলে তিনি যা প্রতিদান দেন, তার তুলনা ত্রিজগতে নেই। এমন যে শিব, তাঁকে পূজা করতে কে না চায়? তাছাড়া তাঁর পূজা যে কেউ করতে পারে।

শিবরাত্রিব্রত বা বিশেষ ফলকামনায় যে ১৬টি সোমবারব্রত করা হয়, তার নিয়ম আলাদা এবং একটু জটিল। যাঁরা দৈনিক কর্মব্যস্ততার মধ্যেও তাঁদের প্রিয় দেবতা শিবকে নিত্যপূজা করতে চান, কিন্তু শিবপূজার বিধান সম্পর্কে সম্যক অবগত নন, এমন আপামর জনসাধারণের জন্য সরলভাবে এই পূজাপদ্ধতি প্রণীত হল। বাচ্চা ছেলেমেয়েরা শিবের পূজা করে থাকে। কারণ, ছেলেবেলায় শিবের পূজা করা বিশেষভাবে উপকারী। আপনার বাড়িতে এমন ছেলে বা মেয়ে থাকলে, তাদের এই পদ্ধতিতে শিবপূজা করা শিখিয়ে দিতে পারেন। প্রবাসী ধর্মপ্রাণ হিন্দুরাও এই পদ্ধতি মেনে সহজেই নিত্য শিবপূজা করতে পারেন। মন্ত্রপাঠ কেউ করতে পারেন, কেউ পারেন না। তাই মন্ত্রপাঠের সমর্থরা কেমনভাবে পূজা করবেন, অসমর্থরাই বা কেমনভাবে করবেন, তাও আলাদা আলাদাভাবে বলে দেওয়া হয়েছে।

মন্ত্রপাঠ প্রসঙ্গে

 

শিবলিঙ্গ; উপরের U-আকৃতির অংশটি হল শিবপীঠ, নিচের হাতের মতো অংশটিকে বলে গৌরীপীঠ বা গৌরীপট্ট। গৌরীপট্টের মুখ উত্তর দিকে রাখতে হয়।

মন্ত্রপাঠ প্রসঙ্গে প্রথমেই মনে রাখতে হবে যে, শিব মন্ত্র বা উপচারের বশ নন। আর যাই হোক, যিনি দেবের দেব, তাঁকে আপনি মন্ত্রে ভুলিয়ে উপচার ঘুষ দিয়ে কার্যসিদ্ধি করতে পারবেন, এমন চিন্তা মনেও স্থান দেবেন না। শিব ভক্তির বশ। ভক্তের হৃদয় তাঁর আড্ডাঘর। শুধুমাত্র ভক্তিদ্বারা পূজা করলে পূজা তাতেই সিদ্ধ হয়। একথাও শাস্ত্রেও স্বীকার করা হয়েছে। কিন্তু আপনার অন্তরের ভক্তি আপনাকে মন্ত্রপাঠে উদ্বুদ্ধ করলে, অবশ্যই মন্ত্র পড়ে পূজা করতে পারেন। সেক্ষেত্রে মন্ত্রপাঠ শুদ্ধ উচ্চারণে হওয়া উচিৎ এবং আপনারও মন্ত্রের অর্থ জেনে তা পাঠ করা উচিত। তা না করলে মন্ত্রপাঠ বৃথা। তাই নিচে পূজাপদ্ধতি বলার আগে ক্রিয়াকর্ম ও মন্ত্রের অর্থ বা ভাবার্থও দিয়ে দেওয়া হল। মন্ত্র পড়তে না পারলে মন খারাপ করার কোনো প্রয়োজন নেই। ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ বলেছেন, মন্ত্রপাঠে অসমর্থ ব্যক্তিরাও ঈশ্বরের কৃপা পেতে পারেন। সেক্ষেত্রে তাঁদের যথাযথ ভক্তিসহকারে পূজার মূল অর্থটি হৃদয়ঙ্গম করে পূজা করতে হবে। তাঁরা কিভাবে সেই পূজা করবেন, তাও পরে বলে দেওয়া হয়েছে। তবে মনে রাখবেন, দুই পদ্ধতির মূল কথা একই।

পূজাসামগ্রী ও সাধারণ নিয়মকানুন

দক্ষিণ ভারতীয় জনপ্রিয় চিত্রকলায় স্ত্রী গৌরী ও দুই পুত্র গণেশ ও কার্তিক সহ শিব।

এই জিনিসগুলি সাজিয়ে নিয়ে পূজা করতে বসবেন।—

১। একটি শিবলিঙ্গ।

২। একটি ছোটো ঘটিতে স্নান করানোর জল।

৩। একটি থালা, একটি গ্লাস ও কোশাকুশি। কোশাকুশি না থাকলে তামা বা পিতলের সাধারণ ছোটো পাত্র ব্যবহার করবেন।

৪। একটু সাদা চন্দন।

৫। একটুখানি আতপ চাল।

৬। কয়েকটি ফুল ও দুটি বেলপাতা (বেলপাতা না থাকলে দুটি তুলসীপাতা দিতে পারেন)।

৭। ধূপ, দীপ।

৮। নৈবেদ্য ও পানীয় জল (আপনার সাধ্য ও ইচ্ছামতো দেবেন। একটা বাতাসা হলেও চলবে।)

৯। প্রণামী (অন্তত একটি টাকা দেবেন। ইচ্ছা করলে বেশিও দিতে পারেন।)

১০। একটি ঘণ্টা।

উপচার সম্পর্কে বিশেষ জ্ঞাতব্য হল এই যে, চন্দন, ফুল-বেলপাতা, ধূপ, দীপ ও নৈবেদ্য এই পঞ্চোপচার পূজার ক্ষেত্রে অপরিহার্য্য। কোনো একটি উপচারের অভাব ঘটলে, সেই উপচারের নাম করে একটু জল দিলেও চলবে। আপনার প্রকৃত ভক্তিই সেই অভাব পূর্ণ করবে, এই কথা জানবেন।

শিবপূজা সর্বদা উত্তরমুখে বসে করবেন এবং শিবলিঙ্গকেও উত্তরমুখী করে রাখবেন। উত্তরদিক ব্রহ্মলোকপথ। তাই পরমব্রহ্মময় শিবের পূজা সর্বদা উত্তরমুখে বসে করাই নিয়ম। শিবলিঙ্গকে তামা বা পাথরের পাত্রে বসানো হয়ে থাকে।

Read the rest of this entry »

 
28 টি মন্তব্য

Posted by চালু করুন অগাষ্ট 31, 2012 in পুরনো লেখা

 

ট্যাগ সমুহঃ

শ্রীরামকৃষ্ণের সাক্ষাৎ শিষ্যগণ: স্বামী ব্রহ্মানন্দ

স্বামী ব্রহ্

স্বামী ব্রহ্মানন্দের পূর্বাশ্রমের নাম রাখালচন্দ্র ঘোষ। জন্ম ১৮৬৩ সালের ২১ জানুয়ারি (স্বামী বিবেকানন্দের চেয়ে মাত্র ৯ দিনের ছোটো)। জন্মস্থান কলকাতার ৩৬ মাইল উত্তর-পশ্চিমে অধুনা উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার সদর বারাসতের নিকটবর্তী সিকরা-কুলীনগ্রাম।

বাল্যকাল থেকেই রাখালচন্দ্র ছিলেন ঈশ্বরভক্ত ও ধ্যানশীল। বারো বছর বয়সে কলকাতায় আসেন পড়াশোনা করতে। সেখানেই নরেন্দ্রনাথ দত্তের (পরবর্তীকালে স্বামী বিবেকানন্দ) সঙ্গে আলাপ। নরেন্দ্রনাথের প্রভাবে ব্রাহ্মসমাজেও যোগ দেন। সেযুগের প্রথা অনুসারে, বিশ্বেশ্বরী নাম্নী জনৈকা বালিকার সঙ্গে রাখালচন্দ্রের বিবাহ হয়। বিশ্বেশ্বরীর দাদা মনোমোহন মিত্র ছিলেন ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণের ভক্ত। তিনিই রাখালচন্দ্রকে ঠাকুরের কাছে নিয়ে যান। ইতিপূর্বে ঠাকুর ভাবচক্ষে দেখেছিলেন, জগজ্জননী একটি ছেলেকে ঠাকুরের পুত্র রূপে পাঠাচ্ছেন। রাখালচন্দ্র দক্ষিণেশ্বরে আসা মাত্রই ঠাকুর চিনতে পারলেন, এই ছেলেটিই তাঁর ভাবচক্ষে দেখা সেই ছেলে। সেই থেকে ঠাকুর রাখালচন্দ্রকে নিজের পুত্রের ন্যায় আদরযত্ন করতে থাকেন।

বেলুড় মঠ ব্রহ্মানন্দ মন্দিরে স্বামী ব্রহ্মানন্দের মর্মরমূর্তি

কয়েকবার দক্ষিণেশ্বরে আসাযাওয়া করার পর রাখালচন্দ্র শ্রীরামকৃষ্ণের সঙ্গেই বসবাস করতে শুরু করেন। ঠাকুর স্বয়ং তাঁকে আধ্যাত্মিক শিক্ষা দিতে থাকেন। ১৮৮৬ সালে ঠাকুরের মহাসমাধির পর বরাহনগরে যখন প্রথম রামকৃষ্ণ মঠ প্রতিষ্ঠিত হয় তখন রাখালচন্দ্র সেই মঠে যোগ দেন। সন্ন্যাস গ্রহণের পর তাঁর নাম হয় স্বামী ব্রহ্মানন্দ। দুই বছর পর বরাহনগর মঠ ত্যাগ করে পরিব্রাজক সন্ন্যাসীর জীবন নিয়ে বারাণসী, ওঙ্কারনাথ, বৃন্দাবন, হরিদ্বার প্রভৃতি তীর্থস্থান দর্শন করেন। ঠাকুরের সাহচর্যেই তিনি উচ্চ অধ্যাত্মিক অবস্থায় উন্নীত হয়েছিলেন। পরিব্রাজক জীবনে তিনি অদ্বৈততত্ত্বের সর্বোচ্চ শিখরে আরোহণ করেন। এই সময় দিনের পর দিন তিনি সমাধিস্থ হয়ে থাকতেন। ১৮৯০ সালে তিনি মঠে ফিরে আসেন। ১৮৯৭ সালে স্বামী বিবেকানন্দ পাশ্চাত্য পরিভ্রমণ সেরে দেশে ফিরে এসে নবরূপে মঠ পুনর্গঠন করেন। এই সময় স্বামী ব্রহ্মানন্দ তাঁকে প্রভূত সাহায্য করেন। দুই গুরুভাই একে অপরকে খুবই ভালবাসতেন। বেলুড় মঠ প্রতিষ্ঠার পর স্বামী বিবেকানন্দ যখন ট্রাস্ট হিসেবে রামকৃষ্ণ মঠকে নথিভুক্ত করেন, তখন স্বামী ব্রহ্মানন্দ মঠের প্রথম সঙ্ঘাধ্যক্ষ বা প্রেসিডেন্ট হন। আজীবন তিনি এই পদ অলংকৃত করেছিলেন।

স্বামী ব্রহ্মানন্দ প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন রামকৃষ্ণ সংঘের দ্রুত বিস্তার ঘটে। ভারত ও বহির্ভারতে মঠের একাধিক কেন্দ্র স্থাপিত হয়। স্বামী বিবেকানন্দ রামকৃষ্ণ মিশনকে অ্যাসোসিয়েশন হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। স্বামী ব্রহ্মানন্দ মিশনকে নথিভুক্ত করেন। সন্ন্যাসীবৃন্দকে সঠিকভাবে পরিচালনা করে তিনি সংঘকে স্থায়ী রূপ দিতে সক্ষম হয়েছিলেন। তাঁর রাজোচিত পরিচালন ক্ষমতা দেখে স্বামী বিবেকানন্দ তাঁকে ‘রাজা’ নাম দিয়েছিলেন। সেই থেকে সংঘে তিনি রাজা মহারাজ নামে পরিচিত ছিলেন। শ্রীরামকৃষ্ণ তাঁর যে ছয় জন শিষ্যকে ‘ঈশ্বরকোটি’ হিসেবে চিহ্নিত করে যান, স্বামী ব্রহ্মানন্দ ছিলেন তাঁদের অন্যতম।

১৯২২ সালের ১০ এপ্রিল সামান্য রোগভোগের পর তিনি মহাসমাধিতে লীন হন। বেলুড় মঠে যে স্থানটিতে তাঁর পার্থিব দেহ পঞ্চভূতে লীন হয়, সেখানেই আজ তাঁর স্মরণে ব্রহ্মানন্দ মন্দির প্রতিষ্ঠিত।

Read the rest of this entry »

 
3 টি মন্তব্য

Posted by চালু করুন অগাষ্ট 28, 2012 in পুরনো লেখা

 

ট্যাগ সমুহঃ

সূর্যের সংসার সৌরজগৎ

সৌরজগৎ

সূর্যের মাধ্যাকর্ষণ বলের টানে তাকে কেন্দ্র করে ঘুরছে অসংখ্য গ্রহ, গ্রহাণু, ধূমকেতু ইত্যাদি জ্যোতিষ্ক। এদের সবাইকে নিয়েই সূর্যের সংসার—সৌরজগৎ। এই নিবন্ধে সৌরজগতের বিভিন্ন সদস্যদের একটি সচিত্র সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দেওয়া হল।

সূর্য (Sun)

সূর্য

সূর্য সৌরজগতের কেন্দ্রীয় নক্ষত্র। সূর্যই পৃথিবীর নিকটতম নক্ষত্র। এটি একটি সাধারণ আকারের নক্ষত্র। এমন অনেক নক্ষত্র আছে যেগুলি সূর্যের চেয়েও বড়ো, বেশি ভারী, বেশি গরম এবং বেশি উজ্জ্বল। তবে সেগুলির চাইতে সূর্যই আমাদের বেশি কাছে বলে আমরা সূর্যকে অত বড়ো আর উজ্জ্বল দেখি। সূর্য পৃথিবী থেকে ১৪৯,৬০০,০০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। আমাদের দ্বিতীয় নিকটতম নক্ষত্র হল আলফা সেন্টারি (Alpha Centauri)। পৃথিবী থেকে এর দূরত্ব ৪০,০০০,০০০,০০০,০০০ কিলোমিটারেরও বেশি। কিন্তু সূর্য পৃথিবী থেকে মাত্র ৮ আলোকমিনিট দূরে অবস্থিত। অর্থাৎ, সূর্যের আলো সূর্য থেকে পৃথিবীতে আসতে মাত্র ৮ মিনিট সময় লাগে। সূর্য থেকে যে তাপশক্তি ও আলোকশক্তি বিকিরিত হয়, তা-ই আমাদের পৃথিবীর প্রাণের উৎস। তাছাড়া, সূর্যের আলো বিকিরিত না হলে আমরা ধূমকেতু আর উল্কা ছাড়া সৌরজগতের আর কোনো জ্যোতিষ্ককেই দেখতে পেতাম না।

সূর্যের আবহমণ্ডলের একেবারে বাইরের দিকের অংশটিকে বলে করোনা (Corona)। ফটোস্ফিয়ার (Photosphere) হল সূর্যের ‘দৃশ্যমান’ উপরিতল। প্রত্যেক নক্ষত্রেরই একটি বৈশিষ্ট্য হল তার অ্যাবসর্পশন স্পেকট্রাম (Absorption Spectrum)। সূর্যের অ্যাবসর্পশন স্পেকট্রামের উৎস হল ফটোস্ফিয়ার। এটি তার উপরের আবহমণ্ডলীয় স্তরের চেয়ে গভীরতর। ফটোস্ফিয়ারের উপরে ও করোনার নিচের স্তরটির নাম ক্রোমোস্ফিয়ার (Chromosphere)। সূর্যের উপরিতলের স্তরগুলির যত গভীরে যাওয়া যায়, উপরের স্তরগুলির চাপে নিচের স্তরগুলির তাপমাত্রা, চাপ ও গভীরতা ততই বাড়তে থাকে। সূর্যের গোটা শরীরটাই গ্যাসীয়। এর মধ্যে হাইড্রোজেন গ্যাসের ভাগই সবচেয়ে বেশি—সূর্যের মোট ভরের ৭০ শতাংশ। অবশিষ্ট ২৮ শতাংশ হিলিয়াম এবং ২ শতাংশ লিথিয়াম, ইউরেনিয়াম ইত্যাদি ভারী উপাদান। হান্স বেথ (Hans Bethe) প্রমাণ করেছিলেন, সৌরশক্তির উৎপাদনের জন্য দায়ি সূর্যের নিয়ন্ত্রিত থার্মোনিউক্লিয়ার বিক্রিয়া।

হিন্দু সূর্যদেবতা

সাদা আলোয় সূর্যের যে আলোকচিত্র তোলা হয়েছে, তাতে সূর্যের গায়ে অসংখ্য কালো কালো ছোপ দেখা যায়। এগুলিকে বলে সৌরকলঙ্ক (Sunspots)। সূর্যের উজ্জ্বল উপরিতলের প্রেক্ষিতে এগুলিকে যে কালো দেখায় তার কারণ, এগুলির উত্তাপ তুলনামূলকভাবে কম (৪৫০০ কে)। সাধারণত সৌরকলঙ্কে দুটি স্পষ্ট অংশ দেখা যায়—এর অন্ধকার কেন্দ্রীয় অঞ্চলটিকে বলে আম্ব্রা (Umbra) এবং এর চারপাশের আলোকময় অংশটিকে বলে পেনুম্ব্রা (Penumbra)। সৌরকলঙ্কগুলি হল নিবিড় চৌম্বকক্ষেত্র। এগুলি নির্দিষ্ট চক্রের আকারে আবির্ভূত ও অন্তর্হিত হয়। এই চক্রকে বলে সৌরকলঙ্ক চক্র (Sunspot Cycle) বা সৌরচক্র (Solar Cycle)। এই চক্রের গড় সময়কাল প্রায় ১১ বছর। সৌরকলঙ্কগুলিকে প্রতিদিনই একটু একটু করে সরতে দেখা যায়। এর থেকে প্রমাণিত হয়েছে যে সূর্য নিজের অক্ষের উপর ২৫ দিনে এক পাক ঘোরে। মাঝে মাঝে সূর্যচাকতির উপর লাল H আলোর নিবিড়তা বেড়ে যায়। এই ঘটনাকে বলে সোলার ফ্লেয়ার (Solar Flare)। এই সময় সূর্য থেকে প্রচুর প্রোটন, ইলেকট্রন ও আলফা কণা নির্গত হয়, যা এক দিন পর পৃথিবীতে পৌঁছে বিশ্বময় চৌম্বক ঝড় তোলে এবং বেতার তরঙ্গ প্রচারে অসুবিধা সৃষ্টি করে। সূর্যের মধ্যে এই সব ঘটনা অবশ্য সৌরকলঙ্ক চক্রের সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলে। জানা গিয়েছে, গাছের বৃদ্ধিও সৌরকলঙ্ক দ্বারা প্রভাবিত হয়। এর ফলে গাছের ট্রাঙ্কের চাকাগুলির গভীরতার তারতম্য ঘটে।

 

রোমান সূর্যদেবতা অ্যাপোলো

গ্রহমণ্ডল (Planets)

যে সব জ্যোতিষ্ক সূর্য বা অন্য কোনো নক্ষত্রকে কেন্দ্র করে ঘোরে, এবং শুধুমাত্র নক্ষত্রের আলোতেই আলোকিত হয়, তাদের বলে গ্রহ। সৌরজগতে আকারের হিসেবে সূর্যের পরেই গ্রহগুলির স্থান। শুধুমাত্র কয়েকটি উপগ্রহের ব্যাস ক্ষুদ্রতম গ্রহ বুধের চেয়ে বেশি। গ্রহের সংখ্যা ৮। সূর্য থেকে দূরত্বের ক্রম অনুসারে এগুলির নাম হল—(১) বুধ, (২) শুক্র, (৩) পৃথিবী, (৪) মঙ্গল, (৫) বৃহস্পতি, (৬) শনি, (৭) ইউরেনাস এবং (৮) নেপচুন। শেষোক্ত চারটি গ্রহের আকার এতই বড়ো যে এগুলিকে দৈত্যাকার গ্রহ (Giant Planet) বলে। পৃথিবীর আকার গ্রহের গড় আকারের চেয়ে কিছু কম। এটি উক্ত দৈত্যাকার গ্রহগুলির চেয়ে অনেকটাই ছোটো। আগে প্লুটোকে গ্রহ বলে মনে করা হত, আধুনিক বৈজ্ঞানিকদের মতে প্লুটো পূর্ণাঙ্গ গ্রহ নয়, এটি বামন গ্রহ।

বেচারি প্লুটো: গ্রহতালিকা থেকে প্লুটোকে বাদ দেওয়ার পর অঙ্কিত একটি কার্টুন।

প্রতিটি গ্রহই একটি প্রকাণ্ড কক্ষপথে সূর্যের চারিদিকে ঘোরে। এই কক্ষপথগুলি প্রায় বৃত্তাকার। প্রত্যেক গ্রহের অক্ষ মোটামুটি একই সমতলে থাকে। শুধুমাত্র প্লুটোর অক্ষ পৃথিবীর চেয়ে ১৭ ডিগ্রি কোণে অবস্থান করে।

সূর্য থেকে গ্রহের দূরত্ব যত বাড়ে, গ্রহগুলির কক্ষপথও অত ছড়িয়ে পড়ে। আঠারো শতকে জার্মান জ্যোতির্বিদ জোহান এলার্ট বোড (Johann Elert Bode) ‘বোডের সূত্র’ নামে পরিচিত একটি সাধারণ বুড়ো আঙুলের নিয়মে সূর্য থেকে গ্রহগুলির দূরত্ব মাপার পদ্ধতি আবিষ্কার করেন। এই সূত্রের অবশ্য কোনো তাত্ত্বিক ভিত্তি ছিল না। তাই সবচেয়ে দূরে অবস্থিত গ্রহগুলির দূরত্ব এই সূত্রের দ্বারা মাপা সম্ভব হয়নি।

রাতের আকাশে চাঁদকে বাদ দিলে সবচেয়ে উজ্জ্বল জ্যোতিষ্ক হল শুক্র গ্রহ। এটি শেষ রাতে পূর্ব আকাশে অথবা সন্ধ্যায় পশ্চিম আকাশে দেখা যায়। ভোর ও সন্ধ্যায় দৃশ্যমান শুক্রের নামও তাই যথাক্রমে হয় শুকতারা ও সন্ধ্যাতারা। সূর্য-পরিক্রমার সঙ্গে সঙ্গে রাতের আকাশে গ্রহগুলির আপেক্ষিক অবস্থানেরও পরিবর্তন হয়।

পার্থিব গ্রহসমূহ

সূর্যের নিকটতম চারটি গ্রহের (বুধ, শুক্র, পৃথিবী ও মঙ্গল) গঠনতন্ত্র পৃথিবীর অনুরূপ। তাই এগুলিকে বলে পার্থিব গ্রহ (Terrestrial Planet)। এই গ্রহগুলির সাধারণ বৈশিষ্ট্য হল—মোটা পাথুরে ভূত্বক, লোহা ও ম্যাগনেশিয়াম সমৃদ্ধ আচ্ছাদন শিলা এবং গলিত ধাতু দ্বারা নির্মিত অভ্যন্তরভাগ। এই গ্রহগুলির উপগ্রহের সংখ্যা খুবই কম এবং এদের বায়ুমণ্ডল পাতলা।

বার্হস্পত্য গ্রহসমূহ

অন্যদিকে, মঙ্গলের পরবর্তী গ্রহগুলি পার্থিব গ্রহগুলির চেয়ে অনেক দূরে অবস্থিত। এগুলির আকার বৃহস্পতির মতো বলে এগুলিকে বার্হস্পত্য গ্রহ (Jovian Planet) বলে। এগুলির আকার গ্যাসীয়। এদের চারপাশে বলয় ও অনেকগুলি উপগ্রহ থাকে।

Read the rest of this entry »

 
5 টি মন্তব্য

Posted by চালু করুন অগাষ্ট 24, 2012 in পুরনো লেখা

 

ট্যাগ সমুহঃ

শ্রীঅরবিন্দ রচিত ‘বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়’ (সটীক বঙ্গানুবাদ)/পর্ব ১

বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়

শ্রীঅরবিন্দ

অনুবাদ ও টীকা: অর্ণব দত্ত

তাঁর বাল্যকাল ও কলেজ জীবন

বাংলা গদ্যের স্রষ্টা ও অধিপতি বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় ছিলেন এক উচ্চবর্ণীয় ব্রাহ্মণ[*] এবং নিম্নবঙ্গের[†] এক বিশিষ্ট পদাধিকারীর[‡] পুত্র। ১৮৩৮ সালের ২৭ জুন[§] কাঁটালপাড়ায়[**] তাঁর জন্ম, ১৮৯৪ সালের ৮ এপ্রিল কলকাতায় তাঁর মৃত্যুর। তাঁর কর্মময় জীবনের এই ছাপ্পান্নটি বছর ছিল বাংলার ইতিহাসের এক সুবর্ণযুগ। বাংলার অনেক মহৎ নামের মধ্যে তাঁর নামটি মহত্তম। তাঁর জীবনের তিনটি মুখ আমরা দেখতে পাই—তাঁর বিদ্যাচর্চা, তাঁর কঠোর কর্মজীবন ও তাঁর সাহিত্যিক মাহাত্ম্য। এখানে আমি এগুলির প্রত্যেকটিরই কিছু কিছু বর্ণনা দেওয়ার চেষ্টা করেছি। তাঁর বাল্যকালের প্রথম যে চিত্রটি আমরা পাই সেটি তাঁর একবার মাত্র পাঠে বর্ণমালা আয়ত্ত করার চিত্র।[††] এটি শুধুমাত্র প্রথম জীবনের একটি ছবিই নয়, এর মাধ্যমে তাঁর পরবর্তী জীবনের ভবিষদ্বাণীটিও করা হয়ে গিয়েছিল। এরই মাধ্যমে সেকালের মানুষ তাঁর মধ্যে সুসংস্কৃত বাঙালির তিনটি স্বাভাবিক গুণ দেখতে পেয়েছিল—অসীম প্রজ্ঞা, দৈহিক শীর্ণতা এবং নিজস্ব এক মননশীলতা। এবং অবশ্যই বঙ্কিম আমাদের মধ্যে শ্রেষ্ঠতমই নন, আমাদের সমধর্মী ও মহৎ চরিত্রেরও বটে। বাঙালি জাতির অধিকাংশ মহৎ চরিত্রবৈশিষ্ট্যের মূর্তপ্রতীক তিনি। তাঁর ছেলেবেলা কেটেছিল মেদিনীপুরে।[‡‡] সেই অঞ্চলে তাঁর বুদ্ধির খ্যাতি এতদূর ছড়িয়েছিল যে তাঁর নাম পরিণত হয়েছিল প্রবাদে। “তুমি শিগগিরই আরেকজন বঙ্কিম হবে”—পণ্ডিতমশাই বলবেন, এটা প্রশংসার অতিরঞ্জন। কিন্তু সাহিত্যিক সমাজে এটি শ্রেষ্ঠ পুরস্কার। বিদ্যালয়ে তিনি দ্রুত এক একটি শ্রেণি অতিক্রম করে যেতে লাগলেন; এত অস্বাভাবিক দ্রুততার সঙ্গে করতে লাগলেন যে, তাঁর শিক্ষকরাও তাঁর জন্য চিন্তিত হয়ে পড়লেন। তাঁরা ভয় পাচ্ছিলেন, এই অতিরিক্ত পঠনপাঠনে তাঁর দুর্বল শরীর না একেবারে ভেঙে পড়ে। তাই খুব সতর্কতার সঙ্গে তাঁরা তাঁর উচ্চতম শ্রেণিতে প্রবেশ আটকে রেখেছিলেন।[§§] তবে ভাগ্য সবসময়ই বঙ্কিমের অনুকূল ছিল। উচ্চশিক্ষা হল সেই অসুর যার পায়ে আমরা ভারতের শ্রেষ্ঠ সন্তানদের বলি দিয়েছি। বিদ্যালয় জীবনে বঙ্কিমের অভিভাবকের তৎপরতায় তিনি এই দানবের খপ্পরে পড়ার হাত থেকে রক্ষা পেয়েছিলেন। আবার হুগলি কলেজে[***] পড়ার সময় তাঁর নিজের পরিশ্রমবিমুখতা তাঁকে এর হাত থেকে রক্ষা করেছিল। হুগলি কলেজেও তাঁর বুদ্ধিবৃত্তির খ্যাতি মেদিনীপুরের মতোই হয়েছিল। এবং অবশ্যই তাঁর লেখাপড়ার গতিপ্রকৃতি ঠিক মানবীয় ছিল না। পুরস্কার বা স্বাতন্ত্রতার খ্যাতির লোভ তাঁর ছিল না। কিন্তু যেখানে অন্যেরা শত পরিশ্রমেও কুল পেত না, সেখানে এক অলৌকিক নিস্পৃহতার মাধ্যমে তিনি নিজের সম্মানটি জয় করে নিয়েছিলেন; যেন কতকটা দৈবঘটিতের মতো। কর্তব্যে গাফিলতি যাই থাকুক না কেন, তাঁর হঠাৎ ওঠা ইচ্ছাগুলির প্রতি তিনি খুবই মনোযোগ দিতেন। এই সময় সংস্কৃত ভাষা চর্চার প্রতি তাঁর বিশেষ আগ্রহ জাগে। এক পণ্ডিতে টোলে তিনি গভীর অধ্যবসায়ের সঙ্গে সংস্কৃত শিক্ষা করেন। এক বছরের মধ্যে তিনি মুগ্ধবোধ[†††], রঘুবংশ[‡‡‡], ভট্টি[§§§] ও মেঘদূত[****] আয়ত্ত করে ফেলেন।[††††] এইভাবে পড়াশোনা চালিয়ে মাত্র চার বছরের মধ্যে তিনি এই প্রাচীন ভাষায় ব্যুৎপত্তি অর্জন করেন এবং এই ভাষার সাহিত্য-রহস্য তাঁকে নতুন গদ্য রচনায় ভীষণভাবে অনুপ্রাণিত করে। তবে তাঁর বাংলা রচনাশৈলীতে তিনি অকারণে পণ্ডিতি ফলাতে যাননি। সত্যি বলতে কি, তিনি এবং মধুসূদন দত্ত দুজনে মিলে সংস্কৃত রীতিনীতির জগদ্দলটি ভেঙে দেন। কিন্তু দেখাই যায় যে সংস্কৃত জ্ঞানের সুন্দর ও মৌলিক ব্যবহার করে তিনি তাঁর রচনাকে কেমন সরল করে তুলেছিলেন। হুগলি কলেজে পাঁচ বছর পড়াশোনা করার পর সতেরো বছর বয়সে তিনি উক্ত কলেজ ত্যাগ করেন।[‡‡‡‡] তিনি যে খ্যাতি পিছনে ফেলে আসেন, একমাত্র দ্বারকানাথ মিত্র[§§§§] ছাড়া আর কেউ তা স্পর্শ করতে পারেনি। কিন্তু তিনি কঠোর পরিশ্রম করে প্রায় কিছুই করেননি। অধিকাংশ মহাপণ্ডিতদের মতো তাঁরও মেধানুশীলন বেশ অনিয়মিত ছিল। তাঁর বিশাল মন বিদ্যালয়ের কার্যক্রমের বাঁধা গতে ধরা দিতে রাজি ছিল না। তিনি তা প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। প্রত্যেক মুক্তমনা মানুষের মতো তিনিও চাননি যে বিদ্যালয়ের বাঁধা রুটিনে পড়ে তাঁর মনের প্রাকৃতিক গুণগুলি বিনষ্ট হয়ে যাক। যত সময় যেতে লাগল, তাঁর মধ্যে একটি অভ্যাস গড়ে উঠতে লাগল—তিনি কলেজ লাইব্রেরির কোণে বসে নানা ধরনের বই পড়ে জ্ঞান পিপাসা মেটাতে লাগলেন। পরীক্ষার ঠিক মুখে তিনি পাঠক্রমের বই নিয়ে বসতেন। দ্রুত সেগুলি শেষ করে কয়েকটি পুরস্কার জয় করে নিয়ে আবার পুরানো পদ্মভুকবৃত্তি ধরতেন। আমি মনে করি, এই অভ্যাস বিশ্বের সর্বদেশের মেধাবী যুবসম্প্রদায়ের মধ্যেই দেখা যায়। এই অভ্যাস তাদের অতি-অনুশাসনের নির্বীর্যকারী প্রভাব থেকে রক্ষা করে। কিন্তু মন্থর মনের মানুষদের ক্ষেত্রে এই অভ্যাস নিরাপদ নয়। তাঁর পরবর্তী বিদ্যাচর্চাস্থল প্রেসিডেন্সি কলেজে তিনি আইন পড়াশোনার মাধ্যমে তাঁর বহুমুখী মনের পুষ্টিসাধন করতে গিয়েছিলেন। তিনি হাইকোর্টের উকিল হওয়ার বাসনা রাখতেন সেই সময়। কিন্তু সাহিত্য-ইতিহাসের একেবারে সঠিক ক্ষণে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হল।[*****] বঙ্কিম আইনবিদ্যায় সাম্মানিক না নিয়ে নিলেন সাহিত্যে।[†††††] আদালত হারালো একজন বিশিষ্ট উকিলকে। ভারত পেল এক মহান মানুষকে। তবে সম্ভবত আইনের প্রতি বঙ্কিমের একটু টান ছিল। পরে তিনি তাঁর অফিসের হাড়ভাঙা খাটুনি আর সাহিত্যজীবনের মাঝেও একটু সময় বের করে কঠোর পরিশ্রম করে একজন বিশিষ্ট বি. এল. হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করেন।[‡‡‡‡‡] তবে বিদ্যাক্ষেত্রে তাঁর প্রথম পরিচয় হল তিনি এবং যদুনাথ বসু হলেন আমাদের দেশের প্রথম বি.এ.।[§§§§§] এই পরিচয়েও তিনি দেশের মানুষের পথপ্রদর্শক হয়েছেন। ডিগ্রি অর্জনের প্রায় সঙ্গে সঙ্গে তিনি সরকারি চাকুরি গ্রহণ করেন। কুড়ি বছর বয়সে তিনি যশোরের ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট নিযুক্ত হন।[******]

Read the rest of this entry »

 

তথ্যকণিকা: ভারতে টকিং এটিএম মেশিন

* ইউনিয়ন ব্যাংক অফ ইন্ডিয়া ভারতে প্রথম টকিং এটিএম মেশিন চালু করেছে।

* প্রথম টকিং এটিএম চালু হয়েছে গুজরাটের আমেদাবাদ শহরে।
* টকিং এটিএম মেশিন মূলত দৃষ্টিহীনদের ব্যবহারের সুবিধার জন্যই চালু হয়েছে।
* প্রথম টকিং এটিএম উদ্বোধন করেন ইউনিয়ন ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও ম্যানেজিং ডিরেক্টর ডি সরকার।
* টকিং এটিএম মেশিনে যে বিশেষ ইন্টারফেসটি থাকে, সেটি হল ভয়েস ইন্টারফেস।

 
১ টি মন্তব্য

Posted by চালু করুন অগাষ্ট 21, 2012 in পুরনো লেখা

 

ট্যাগ সমুহঃ

তথ্যকণিকা: লন্ডন গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিকস, ২০১২

  • মাইকেল ফেল্পস

    ২০১২ গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিকসের পোষাকি নাম “The Games of the XXX Olympiad”. চলতি কথায় ”লন্ডন, ২০১২”।

  • যুক্তরাজ্যের লন্ডন শহরে ২৭ জুলাই, ২০১২ তারিখে ২০১২ গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিকসের আসর বসে। চলে ১২ অগস্ট, ২০১২ পর্যন্ত।
  •  ২০১২ লন্ডন অলিম্পিকসের মোটো ছিল – “Inspire a Generation”.
  •  ২০১২ লন্ডন অলিম্পিকসের ম্যাসকটদুটির নাম ছিল ওয়েনলক ও ম্যান্ডিভিল।
  • মোট ২০৪টি দেশ ২০১২ লন্ডন অলিম্পিকসে অংশ নেয়।
  •  মোট ১০,৮২০ জন অ্যাথলেট ২০১২ লন্ডন অলিম্পিকসে অংশ নেন।
  • ২০১২ লন্ডন অলিম্পিকসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানটি আয়োজিত হয় ২৭ জুলাই। অনুষ্ঠানটির নাম ছিল “আইল অফ ওয়ান্ডার”। পরিচালনা করেন অস্কার-জয়ী পরিচালক ড্যানি বয়েল।
  • ২০১২ লন্ডন অলিম্পিকসের উদ্বোধন সরকারিভাবে করেন রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ।
  • ২০১২ লন্ডন অলিম্পিকসের নায়ক যুক্তরাষ্ট্রের মাইকেল ফেল্পস। তিনি তাঁর ২২তম অলিম্পিক পদক জয় করে সর্বাধিক পদকজয়ী অলিম্পিক অ্যাথলেটের সম্মান পান।
  • আয়োজক দেশ গ্রেট ব্রিটেন ১৯০৮-এর পর এইবার সর্বাধিক সংখ্যক স্বর্ণপদক জয় করেছে। ব্রিটেন পদক-সারণিতে তৃতীয় স্থান পেয়েছে।
  • লন্ডন প্রথম আধুনিক শহর যেখানে তিন বার অলিম্পিকসের আসর বসল। এর আগে ১৯০৮ ও ১৯৪৮ সালে লন্ডনে অলিম্পিকসের আসর বসেছিল।
  • ২০১২ লন্ডন অলিম্পিকসে প্রথম স্বর্ণপদক জয় করলেন চিনের য়ি সিলিং।
  • ২০১২ লন্ডন অলিম্পিকসে পুনরায় মঞ্চে ফিরে এলেন কিংবদন্তি বক্সার মহম্মদ আলি।
  • ২০১২ লন্ডন অলিম্পিকসের প্রথম বিশ্বরেকর্ডটি করলেন অন্ধ সাউথ কেরিয়ান তিরন্দাজ ইম ডং হ্যুন।

২০১২ লন্ডন অলিম্পিকসে ভারত

 

সুশীল কুমার

  • ইন্ডিয়ান অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশন ২০১২ লন্ডন অলিম্পিকসে মোট ৮৩ সদস্যের একটি দল পাঠায়। এই দলের সদস্যরা মোট ১৩টি খেলায় অংশ নেন। ভারত এর আগে এতো বড়ো দল পাঠায়নি বা এতগুলি খেলাতেও অংশ নেয়নি।
  • ব্রিগেডিয়ার পি কে মুরলিধরন রাজা ভারতীয় দলের কার্যনির্বাহী শেফ-ডে-মিশন ছিলেন। তিনি আসলে ডেপুটি শেফ-ডে-মিশন। কিন্তু প্রধান শেফ-ডে-মিশন অজিতপাল সিং অসুস্থ থাকায় তিনিই এই দায়িত্ব পালন করেন।
  • ২০১২ লন্ডন অলিম্পিকসে ভারত মোট ছয়টি পদক জয় করে। এর মধ্যে ২টি রুপো ও ৪টি ব্রোঞ্জ। এটিই কোনো একক গেমসে ভারতের সর্বাধিক সংখ্যক পদকজয়।
  • ২০১২ লন্ডন অলিম্পিকসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভারতের পতাকাবাহী ছিলেন সুশীল কুমার।
  • ২০১২ লন্ডন অলিম্পিকসের সমাপ্তি অনুষ্ঠানে ভারতের পতাকাবাহী ছিলেন মেরি কম।
  • গগন নারং ২০১২ লন্ডন অলিম্পিকসে দেশের হয়ে প্রথম পদকটি জয় করেন। তিনি পুরুষদের ১০ মিটার এয়ার রাইফেল ইভেন্টে ব্রোঞ্জ পান।
  • বিজয় কুমার পুরুষদের ২৫ মিটার র‌্যাপিড ফায়ার পিস্তল ইভেন্টে রুপো পান।
  • বিজয় কুমার তৃতীয় রুপোজয়ী ভারতীয় অলিম্পিয়ান (নর্মান প্রিচার্ড ও রাজ্যবর্ধন রাঠোরের পর)।
  • সাইনা নেহওয়াল মহিলাদের সিঙ্গলস ব্যাডমিন্টনে ব্রোঞ্জ পেয়েছেন।
  • সাইনা নেহওয়াল প্রথম অলিম্পিকস-পদকজয়ী ভারতীয় ব্যাডমিন্টন খেলোয়াড়।
  • সাইনা নেহওয়াল দ্বিতীয় মহিলা ভারতীয় অলিম্পিকস পদকজয়ী (কর্ণম মালেশ্বরীর পরে, যিনি ২০০০ সালে ভারোত্তোলনে অলিম্পিকস ব্রোঞ্জ পদক পেয়েছিলেন)।
  • মেরি কম মহিলাদের ফ্লাইওয়েট বক্সিং-এ চতুর্থ পদকটি পান। তিনি পেয়েছেন ব্রোঞ্জ।
  • মেরি কম তৃতীয়া মহিলা ভারতীয় অলিম্পিকস-পদকজয়ী এবং অলিম্পিকস-পদকজয়ীয় প্রথম ভারতীয় মহিলা বক্সার।
  • যোগেশ্বর দত্ত ৬০ কেজি ফ্রিস্টাইল কুস্তিতে ব্রোঞ্জ পদক জয় করেন।
  • সুশীল কুমার ৬৬ কেজি ফ্রিস্টাইল কুস্তিতে রৌপ্যপদক জয় করেন।
  • সুশীল কুমার প্রথম ভারতীয় অলিম্পিয়ান যিনি পরপর দুটি অলিম্পিকসে পদক পেলেন।
 
১ টি মন্তব্য

Posted by চালু করুন অগাষ্ট 20, 2012 in পুরনো লেখা

 

ট্যাগ সমুহঃ

ব্রিটিশ শাসনে ভারতীয় প্রেস

১৫৫০ সালে পর্তুগিজরা ভারতে প্রথম ছাপাখানা চালু করেছিল। ১৫৫৭ সালে পর্তুগিজ মিশনারিরাই ভারতে প্রথম ছাপা বই প্রকাশ করে। এরপর ১৬৮৪ সালে ইংরেজরা ছাপাখানা চালু করে। ১৭৮০ সালে জেমস অগাস্টাস হিকি প্রথম ভারতে খবরের কাগজ চালু করেন। কাগজটির নাম ছিল বেঙ্গল গেজেট। লোকমুখে তা পরিচিত ছিল হিকির গেজেট নামে। সরকারি নীতি ও গভর্নর-জেনারেলের সমালোচনা করে হিকির গেজেট সরকারের বিষ নজরে পড়ে। ফলে দু-বছরের মধ্যেই কাগজটি বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু শিগগিরিই এর দেখাদেখি আরও কয়েকটি কাগজ চালু হয়ে যায়।

 

গঙ্গাধর ভট্টাচার্য হলেন প্রথম ভারতীয় যিনি খবরের কাগজ চালু করেছিলেন। তাঁর বেঙ্গল গেজেট কাগজটিও ছিল ইংরেজিতে। দেশীয় ভাষায় প্রথম পত্রিকা চালু হয় ১৮১৬ সালে। ১৮২১ সালে মার্শম্যান চালু করেন দিগ্দর্শন নামে এক বাংলা মাসিক পত্রিকা। ১৮১৮ সালে রাজা রামমোহন রায় তাঁর সম্বাদ কৌমুদী কাগজটি চালু করেন। ১৮২১ সালে তিনি মিরাত-উল-আখবর নামে একটি ফারসি সাপ্তাহিক পত্রও চালু করেন।

 

১৭৯৯ সালে সেন্সরশিপ আইন চালু করে প্রথম বার সংবাদপত্রের অধিকার খর্ব করা হয়। এই আইনবলে কাগজের প্রতিটি সংখ্যায় মুদ্রক, সম্পাদক ও মালিকের নাম ছাপা এবং কাগজের বিষয়বস্তু ছাপার আগে সরকারি সচিবের কাছে পেশ করা বাধ্যতামূলক করা হয়। লর্ড ওয়েলেসলি ভারতে ফরাসি আক্রমণের ভয়ের অজুহাত দেখিয়ে এই আইন জারি করেন। ১৮০৭ সালে আইনটি পত্রপত্রিকা ও পুস্তকপুস্তিকার উপরও জারি হয়। লর্ড হেস্টিংস এই আইন বিলোপ করেন।

Read the rest of this entry »

 
১ টি মন্তব্য

Posted by চালু করুন অগাষ্ট 12, 2012 in পুরনো লেখা

 

ট্যাগ সমুহঃ