RSS

নীল পদ্মরাগ (শার্লক হোমসের গল্প)

এই অনুবাদটির অনুবাদস্বত্ব সংরক্ষিত। অনুবাদকের বিনা অনুমতিতে অন্যত্র প্রকাশ বেআইনি!

বড়োদিনের দিন দুয়েক পরে সকালের দিকে আমার বন্ধু শার্লক হোমসকে উৎসবের শুভেচ্ছা জানাতে গিয়েছিলাম। হোমস তার পার্পল-রঙা ড্রেসিং গাউনটা পরে সোফায় হেলান দিয়ে বসেছিল।  তার ডানদিকে পাইপ রাখার তাক আর হাতের কাছে ছড়ানো ছিল একগাদা সদ্যপঠিত প্রভাতী সংবাদপত্র। সোফার পাশে চেয়ারে ঝুলছিল একখানা জীর্ণ পুরনো ফেল্ট হ্যাট। টুপিটা জায়গায় জায়গায় ফাট–ব্যবহারের অযোগ্য। চেয়ারের উপর রাখা লেন্স আর ফরসেপস দেখে বুঝলাম, ওটা ভাল করে পরীক্ষা করার জন্যেই ওভাবে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে।

বললাম, “তুমি ব্যস্ত মনে হচ্ছে। আমি হয়ত এসে কাজে বাধা দিলাম।”

“মোটেও না। বরং এই যে তোমার মতো এক বন্ধুর সঙ্গে আমার সিদ্ধান্ত নিয়ে দুটো কথা কইতে পারি, এটা কতো আনন্দের বলো তো। এই ব্যাপারটা খুবই সামান্য।” তারপর টুপিটার দিকে অঙ্গুলিনির্দেশ করে সে বলল, “কিন্তু ওই জিনিসটার সঙ্গে এমন কিছু বিষয় জড়িত যেগুলো শুধু মনোহারীই নয়, যথেষ্ট শিক্ষণীয়ও বটে।”

বাইরে খুব বরফ পড়ছিল। জানলার কাঁচ ঢেকে গিয়েছিল পুরু বরফের আস্তরণে। আরামকেদারায় বসে ফায়ারপ্লেসের গনগনে আগুনে হাতটা সেঁকতে সেঁকতে বললাম, “মনে হচ্ছে, এই সাদাসিধে দেখতে টুপিটার সঙ্গে বেশ একটা মারকাটারি গল্প জড়িয়ে আছে আর তুমি এটার সূত্র ধরে রহস্যের সমাধান করে অপরাধীকে শাস্তি দেওয়ার কথা ভাবছো।”

হোমস হেসে বলল, “না না, অপরাধ নয়। আসলে কয়েক মাইল এলাকার মধ্যে চল্লিশ লক্ষ লোক গুঁতোগুঁতি করলে কিছু অদ্ভুত ঘটনা ঘটে যায়। এটাও সেই রকমই একটা ঘটনা। এত লোকের ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ার মধ্যে, এত সম্ভাব্য ঘটনীয় ঘটনার মধ্যে অনেক ছোটোখাটো ঘটনাও থাকে, যেগুলো খুব উল্লেখযোগ্য ও অদ্ভুত ধরনের হয়, কিন্তু সবসময় তার সঙ্গে কোনো অপরাধের যোগ থাকে না। আমরা তো আগেও এমন ঘটনা ঘটতে দেখেছি।”

আমি বললাম, “দেখিনি আবার! আমি শেষ যে ছ-খানা কেস নোট করেছি, তার মধ্যে তিনটের সঙ্গেই তো–আইনের চোখে যাকে অপরাধ বলে–তার কোনো যোগ নেই।”

Read the rest of this entry »

 
১ টি মন্তব্য

Posted by চালু করুন এপ্রিল 29, 2012 in পুরনো লেখা

 

ট্যাগ সমুহঃ

শ্রীশ্রীচণ্ডী (মূল সহ বঙ্গানুবাদ) :: প্রথম পর্ব :: অর্গলাস্তোত্রম্‌

।। ওঁ নমশ্চণ্ডিকায়ৈ ।।

                                                             

ওঁ অস্য শ্রীঅর্গলাস্তোত্রমন্ত্রস্য বিষ্ণুর্ঋষিঃ অনুষ্টুপ্ছন্দঃ শ্রীমহালক্ষ্মীর্দেবতা শ্রীজগদম্বাপ্রীত্যর্থং সপ্তশতীপাঠাঙ্গজপে বিনিয়োগঃ।

এই অর্গলাস্তোত্রের ঋষি হলেন বিষ্ণু, ছন্দ হল অনুষ্টুপ ও দেবতা হলেন শ্রীমহালক্ষ্মী। জগজ্জননীর প্রীতির জন্য শ্রীশ্রীচণ্ডীপাঠের অঙ্গরূপে এই স্তোত্র পাঠ করা হয়।

ওঁ মার্কণ্ডেয় উবাচ।

মার্কণ্ডেয় বললেন–

ওঁ জয় ত্বং দেবি চামুণ্ডে জয় ভূতাপহারিণি।[*]

জয় সর্বগতে দেবি কালরাত্রি নমোঽস্তু তে।। ১

হে দেবী চামূণ্ডা, তোমার জয় হোক। হে দেবী, তুমি জীবের দুঃখনাশকারিণী; তুমি সর্বভূতে অবস্থিতা; আবার তুমিই প্রলয়ের অন্ধকার স্বরূপিণী কালরাত্রি। তোমায় নমস্কার করি।

জয়ন্তী মঙ্গলা কালী ভদ্রকালী কপালিনী।

দুর্গা শিবা ক্ষমা ধাত্রী স্বাহা স্বধা নমোঽস্তু তে।। ২

হে দেবী, তুমি সর্বোৎকৃষ্টা জয়যুক্তা দেবী জয়ন্তী; তুমি জন্মমৃত্যুবিনাশিনী মোক্ষপ্রদায়িনী দেবী মঙ্গলা; তুমি সর্বসংহারকারিণী কালী; তুমি সুখদায়িনী ভদ্রকালী; আবার তুমিই প্রলয়কালে ব্রহ্মা প্রমুখের মাথার খুলি হস্তে নৃত্যরতা কপালিনী। তুমি দুর্গা, কারণ বহু কষ্ট স্বীকার করে তবে তোমায় লাভ করা যায়; তুমি চৈতন্যময়ী শিবা; তুমি করুণাময়ী ক্ষমা; তুমি বিশ্বধারিণী ধাত্রী; তুমি দেবগণের পোষণকর্ত্রী স্বাহা ও পিতৃগণের পোষণকর্ত্রী স্বধা। তোমায় নমস্কার করি।

Read the rest of this entry »

 
১ টি মন্তব্য

Posted by চালু করুন মার্চ 18, 2012 in পুরনো লেখা

 

ট্যাগ সমুহঃ

বাংলা সমাস :: পর্ব ১ :: সাধারণ আলোচনা ও দ্বন্দ্ব সমাস

‘সমাস’ শব্দের অর্থ সংক্ষেপ। পরস্পর অর্থসম্বন্ধযুক্ত একাধিক পদকে সংক্ষিপ্ত করে একটি পদে পরিণত করার নাম ‘সমাস’।

 

উদাহরণ: ‘চাঁদের মতো মুখ’ – এই তিনটি পদকে এক করে করা যায় ‘চাঁদমুখ’। একেই বলেই সমাস।

সমাস-সংক্রান্ত কয়েকটি সাধারণ শব্দার্থ

সমস্যমান পদ ও সমস্ত পদ:

সমাসে যে পদগুলিকে সংক্ষিপ্ত করে একটি পদে পরিণত করা হয় তাদের প্রত্যেকটিকে বলে সমস্যমান পদ। ‘চাঁদের মতো মুখ’ বাক্যাংশে সমস্যমান পদ তিনটি – ‘চাঁদের’, ‘মতো’ ও ‘মুখ’।

সমাস করার ফলে যে একক পদটি সৃষ্টি হয় তাকে বলে সমস্ত পদ। ‘চাঁদের মতো মুখ’ বাক্যাংশের সমাস করার ফলে সৃষ্ট ‘চাঁদমুখ’ শব্দটি হল সমস্ত পদ।

ব্যাসবাক্য বা বিগ্রহবাক্য:

‘ব্যাস’ বা ‘বিগ্রহ’ শব্দের অর্থ বিশ্লেষণ। যে বাক্য বা বাক্যাংশের সাহায্যে সমস্যমান পদগুলির অর্থ ব্যাখ্যা করা হয়, তাকে বলে ব্যাসবাক্য বা বিগ্রহবাক্য। ‘চাঁদের মতো মুখ’ – এই বাক্যাংশটি হল ব্যাসবাক্য।

পূর্বপদ ও উত্তরপদ:

সমস্যমান পদগুলির প্রথমটির নাম পূর্বপদ ও শেষেরটির নাম উত্তরপদ। ‘চাঁদের মতো মুখ’ এই সমস্যমান পদের পূর্বপদ হল ‘চাঁদ’ ও উত্তরপদ ‘মুখ’।

 

 

সমাসের শ্রেণিবিভাগ

আচার্য সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায় সমাসকে তিনটি শ্রেণিতে ভাগ করেছেন। যথা: (১) সংযোগমূলক বা দ্বন্দ্ব সমাস, (২) ব্যাখ্যানমূলক বা আশ্রয়মূলক এবং (৩) বর্ণনামূলক বা বহুব্রীহি। আশ্রয়মূলক সমাসের তিনটি উপবিভাগ দেখিয়েছেন তিনি – তৎপুরুষ, কর্মধারয় ও দ্বিগু। বহুব্রীহি সমাসকে চার ভাগে ভাগ করেছেন। যথা: ব্যধিকরণ বহুব্রীহি, সমাধাধিকরণ বহুব্রীহি, ব্যতিহার বহুব্রীহি ও মধ্যপদলোপী বহুব্রীহি।

আমরা বোঝার সুবিধার জন্য বাংলা সমাসকে প্রধানত ভাগ করব ছয় ভাগে। যথা: (১) দ্বন্দ্ব, (২) তৎপুরুষ, (৩) কর্মধারয়, (৪) দ্বিগু, (৫) বহুব্রীহি এবং (৬) অব্যয়ীভাব।

                                                                                              দ্বন্দ্ব সমাস

‘দ্বন্দ্ব’ শব্দের অর্থ যুগ্ম বা জোড়া।

যে সমাসে পূর্বপদ ও উত্তরপদ ও, এবং, আর ইত্যাদি সংযোজক অব্যয় দ্বারা পরস্পর যুক্ত থাকে এবং সমস্তপদে পূর্ব ও উত্তর উভয় পদের অর্থের প্রাধান্য বজায় থাকে, তাকে দ্বন্দ্ব সমাস বলে।

উদাহরণ: হরিহর = হরি ও হর।

দ্বন্দ্ব সমাসে সাধারণত স্বল্পদলযুক্ত পদটি পূর্বপদের স্থানে বসে। যেমন – হাটবাজার = হাট (একদল) ও বাজার (দ্বিদল)। তবে এই নিয়মের ব্যতিক্রমও দুর্লভ নয়। যেমন – স্বামীস্ত্রী = স্বামী (দ্বিদল) ও স্ত্রী (একদল)। এক্ষেত্রে আচার্য সুনীতিকুমারের মন্তব্য প্রণিধানযোগ্য: “যে পদটী বানানে বা উচ্চারণে অপেক্ষাকৃত ছোট, এই সমাসে সাধারণত সেটী প্রথমে বসে; কিন্তু এই নিয়মের ব্যতয়ও দেখা যায় – যে পদটির অর্থ অপেক্ষাকৃত গৌরব-বোধক বলিয়া বিবেচিত হয়, সে পদটী অন্যটির অপেক্ষা দীর্ঘ হইলেও প্রথমে বসিতে পারে।”

দ্বন্দ্ব সমাস মূলত দুটি বিশেষ্য পদের সমাস। তবে দুটি সর্বনাম, দুটি বিশেষণ বা দুটি ক্রিয়াপদেরও সমাস হতে পারে।

সংস্কৃত সমাসে সমস্যমান পদ দুটি (যথা: দেবদ্বিজ = দেব ও দ্বিজ) বা দুইয়ের অধিক (যথা: রাম-লক্ষ্মণ-ভরত-শত্রুঘ্ন = রাম, লক্ষণ, ভরত ও শত্রুঘ্ন) হতে পারে। বাংলা সমাসে সাধারণত দুটি সমস্যমান পদেই দ্বন্দ্ব সমাস হয়; বাক্যের মধ্যে দুইয়ের অধিক সমস্যমান পদ থাকলে, সেগুলিকে সমাসবদ্ধ না করে পৃথক পৃথক ভাবে লেখা হয়। তবে এই নিয়মের ব্যতিক্রমও দেখা যায়। যেমন: চোখকাননাক = চোখ, কান ও নাক।

শ্রেণিবিভাগ–

পদবৈভিন্ন্য অনুসারে দ্বন্দ্ব সমাসের বিভাগগুলি হল:

(ক) দুই বিশেষ্য পদের দ্বন্দ্ব – গুরুশিষ্য = গুরু ও শিষ্য।

(খ) দুই সর্বনাম পদের দ্বন্দ্ব – তুমি-আমি = তুমি ও আমি।

(গ) দুই বিশেষণ পদের দ্বন্দ্ব – ন্যায়-অন্যায় = ন্যায় ও অন্যায়।

(ঘ) দুই ক্রিয়া পদের দ্বন্দ্ব – দেখেশুনে = দেখে ও শুনে।

গঠনপ্রকৃতি অনুসারে দ্বন্দ্ব সমাসের বিভাগগুলি হল:

(ক) অলোপ দ্বন্দ্ব – যে দ্বন্দ্ব সমাসে সমস্যমান পদের বিলুপ্ত হয় না তাকে, অলোপ দ্বন্দ্ব বলে। যেমন: মায়েঝিয়ে = মায়ে ও ঝিয়ে।

(খ) একশেষ দ্বন্দ্ব – যে দ্বন্দ্ব সমাসে সমস্যমান পদগুলির একটিমাত্র পদ অবশিষ্ট থাকে, তাকে একশেষ দ্বন্দ্ব সমাস বলে। যেমন: পিতা চ মাতা = পিতারৌ (সংস্কৃত সমাস), তুমি ও সে = তোমরা (বাংলা সমাস)।

(গ) সমার্থক দ্বন্দ্ব – যে দ্বন্দ্ব সমাসে সমস্যমান পদগুলি একই অর্থবাচক, তাকে সমার্থক দ্বন্দ্ব বলা হয়। যেমন: লজ্জাশরম = লজ্জা ও শরম।

দ্রঃ শব্দদ্বৈত ও সমার্থক দ্বন্দ্ব সর্বদা এক নয়। সমার্থক দ্বন্দ্বে সমস্যমান পদদুটির প্রত্যেকটিই স্বাধীন অর্থ বহন করে। কিন্তু শব্দদ্বৈতে উত্তরপদটি পূর্বপদের অর্থকে সম্প্রসারিত করে ‘ইত্যাদি’ অর্থে প্রযুক্ত হয়। যেমন: কাপড়চোপড় এই শব্দদ্বৈতে ‘চোপড়’ কথাটির দ্বারা একাধিক কাপড় বোঝায়, কিন্তু এটি কোনো স্বাধীন অর্থ বহন করে না।

(ঘ) বিপরীতার্থক দ্বন্দ্ব – যে দ্বন্দ্ব সমাসে সমস্যমান পদগুলি পরস্পর বিপরীত অর্থ বহন করে তাকে বিপরীতার্থক দ্বন্দ্ব বলে। যেমন: দেবাসুর = দেব ও অসুর।

(ঙ) মিলনার্থক দ্বন্দ্ব – যে দ্বন্দ্ব সমাসে সমস্যমান পদগুলির পারস্পরিক মিলন অর্থের দিক থেকে পূর্ণতা প্রকাশ করে, তাকে মিলনার্থক দ্বন্দ্ব বলে। যেমন: রাধাকৃষ্ণ = রাধা ও কৃষ্ণ।

(চ) বিকল্পার্থক দ্বন্দ্ব – যে দ্বন্দ্ব সমাসের দ্বারা সমস্যমান পদগুলির যে কোনো একটি নির্দেশ করা হয় তাকে বিকল্পার্থক দ্বন্দ্ব বলে। যেমন: ভালোমন্দ = ভালো ও মন্দ।

(ছ) অলূক দ্বন্দ্ব – যে দ্বন্দ্ব সমাসের সমস্যমান পদগুলি বিভক্তিযুক্ত তাকে বলে অলূক দ্বন্দ্ব। যথা: মাঠে-ঘাটে = মাঠে ও ঘাটে। সংস্কৃতে এই সমাস নেই।

(পশ্চিমবঙ্গ বাংলা আকাদেমির বানানরীতি অনুসৃত)

(ক্রমশ)

(পরবর্তী পর্বে তৎপুরুষ সমাস নিয়ে আলোচনা করা হবে)

 

ট্যাগ সমুহঃ

জেন অস্টিন: একটি সংক্ষিপ্ত জীবনী

জেন অস্টিন

১৭৭৫ সালের ১৬ ডিসেম্বর ইংল্যান্ডের হ্যাম্পশায়ারের অন্তঃপাতী স্টিভেনটনে এক মধ্যবিত্ত পরিবারে প্রখ্যাত ইংরেজ মহিলা-ঔপন্যাসিক জেন অস্টিনের জন্ম। তাঁর বাবা জর্জ অস্টিন অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্র্যাজুয়েট হলেও আর্থিক দিক থেকে ছিলেন দরিদ্র। তিনি ছিলেন রেক্টর। স্টিভেনটনে ধর্মশিক্ষা দিয়ে তিনি জীবিকা নির্বাহ করতেন। সেই সঙ্গে নিজের সন্তানদেরও শিক্ষাদান করতেন। জেন অস্টিন ছিলেন তাঁর সপ্তম সন্তান। জেনের শিক্ষা কিছুটা হয়েছিল তাঁর দাদাদের কাছে। তাঁর দুই দাদা ছিলেন ধর্মযাজক। অপর দুই দাদা ছিলেন নৌবাহিনীতে। পরে তাঁরা অ্যাডমিরাল পদে উন্নীত হন। আর এক দাদা এডওয়ার্ড ভাগ্যক্রমে ভূম্যধিকারী ভদ্রসমাজে প্রবেশের সুযোগ পান। শিশুদের শিক্ষিত করে তোলার জন্য অস্টিন পরিবারের আয়োজনের ত্রুটি ছিল না। গ্রামভ্রমণ, ধাঁধাখেলা, গ্রন্থপাঠ, গল্প ও পারিবারিক নাটক রচনার মাধ্যমে পরিবারের শিশুরা যে শিক্ষা পেত, তা প্রথাবহির্ভূত হলেও খুব উঁচুদরের ছিল। এর ফলেই শিশু জেনের মনে ঔপন্যাসিক হওয়ার ইচ্ছা জেগে ওঠে। অক্সফোর্ড, সাউদাম্পটন ও রিডিং-এর বোর্ডিং স্কুলে তিনি অল্প কয়েকদিন পড়াশোনা করেছিলেন। তবে এই পড়াশোনা তাঁর জীবনে বিশেষ প্রভাব ফেলতে পারেনি।

জেনের কৈশোর কেটেছিল গ্রামীণ সমাজে। কখনও সখনও নিকটবর্তী শহরে গিয়ে বল নাচে অংশ নিতেন। এই সব সামাজিক ক্রিয়াকলাপ আর যে গ্রাম্য সমাজে জেন বাস করতেন, সেই সমাজকে খুব কাছ থেকে প্রত্যক্ষ করতেন জেন। এইভাবে কৈশোরেই তিনি শিখে ফেলেছিলেন উপন্যাস লেখার কৌশলটি। জেন ও তাঁর প্রিয় বোন ক্যাসান্ড্রা কেউই বিয়ে করেননি। ক্যাসান্ড্রার বাগদান সম্পন্ন হয়েছিল। কিন্তু বিয়ের আগেই তাঁর ভাবী স্বামী জলে ডুবে মারা যান। জেনের বাগদান সম্পন্ন হয়েছিল তাঁর দাদার এক বন্ধুর সঙ্গে। কিন্তু পরদিনই তিনি সম্বন্ধ ভেঙে দেন। প্রাইড অ্যান্ড প্রেজুডিস উপন্যাসে শার্লট লুকাস বিয়ে করতে চেয়েছিল সামাজিক মর্যাদা, নিরাপত্তা আর নিজস্ব একটা বাড়ির জন্য। জেন নিজে এই সবের জন্য মেয়েদের বিয়ে করাকে ঘৃণা করতেন।

Read the rest of this entry »

 

ট্যাগ সমুহঃ

গোপাল ভাঁড় :: ২

গোপাল-পঞ্চমী

১।

মহারাজ কৃষ্ণচন্দ্র পরদিন খুব ভোরে গোপালকে রাজসভায় তলব করেছেন। সমস্যা হল, ভোরে গোপালের ঘুম ভাঙে না। তাই তিনি স্ত্রীকে বলে রেখেছিলেন, যেন ভোর ভোর তাঁকে ডেকে দেওয়া হয়। কিন্তু পরদিন ভোরে দৈবাৎ গোপাল ঘুম গেল ভেঙে। স্ত্রীকে খোঁচা দিয়ে বললেন, ‘ওগো, যাও না, বাইরে গিয়ে একবারটি দ্যাখো, সূর্য উঠেছে কিনা।’ গোপালের স্ত্রী তন্দ্রার আবেশে বললে, ‘বাইরে যে ভীষণ অন্ধকার! সূর্য দেখবো কি করে?’ গোপাল বললেন, ‘তাহলে আলোটা জ্বেলেই দ্যাখো না।’

২।

ঘোর বর্ষা। মেঠো পথ ধরে গোপাল চলেছেন জুতো হাতে নিয়ে। সেই পথেই মহারাজ কৃষ্ণচন্দ্র আসছিলেন পালকি চড়ে। গোপালকে দেখে মহারাজের একটু রসিকতা করার শখ হল। বললেন, ‘কি হে গোপাল, পরকাল হাতে করে চলেছো যে!’ গোপাল বললেন, ‘আমি তো তাও হাতে রেখেছি, মহারাজ! আপনি তো খেয়ে বসেছেন!’ কৃষ্ণচন্দ্র রেগে বললেন, ‘গোপাল, তুমি আমাকে জুতোখোর বললে?’ গোপাল বললে, ‘আজ্ঞে না মহারাজ। জুতোর কথা হচ্ছে না, হচ্ছে পরকালের। এই ঘোর বর্ষায় কর্দমাক্ত মেঠো পথ ধরে হাঁটার ক্ষমতা আমার মতো বৃদ্ধ লোকও হেঁটে চলেছে। আর আপনি, মহারাজ, জোয়ান পুরুষ, আপনি কিনা পালকি ছাড়া চলতে পারছেন না! ভাবুন তো, নিজের পরকাল কে খেয়েছে?’

Read the rest of this entry »

 
2 টি মন্তব্য

Posted by চালু করুন ফেব্রুয়ারি 19, 2012 in পুরনো লেখা

 

ট্যাগ সমুহঃ

সংক্ষিপ্ত শিবপুরাণ :: পর্ব ৪

শিববিবাহ

শিব সপ্তর্ষিকে ডেকে তাঁদের দূত নিয়োগ করলেন। তাঁরা গিরিরাজ হিমালয়ের কাছে বিবাহ প্রস্তাব নিয়ে গেলেন। শুনে গিরিরাজের আনন্দের সীমা রইল না। শুভদিন স্থির করে বিবাহের কথা পাকা হয়ে গেল।

 

বিবাহের দিন গন্ধর্বেরা গান ধরলেন, অপ্সরাগণ নৃত্য শুরু করলেন। বরযাত্রী হবার জন্য দেবতারা উপস্থিত হলেন কৈলাসশিখরে। এদিকে গিরিরাজও প্রস্তুত। তাঁর প্রাসাদ তোরণ, পতাকা ইত্যাদি দিয়ে সুন্দর করে সাজানো হয়েছিল। শিব হিমালয়ের প্রাসাদে এসে পৌঁছাতেই মেনকা বেরিয়ে এলেন। বললেন, ‘কই, শিব কই? দেখি আমার জামাই কেমন; যাকে পেতে মেয়েটা আমার এমন কঠোর তপস্যা করলে। সে নিশ্চয় পরম সুন্দর।’

 

শিববিবাহ

প্রথমেই মেনকা দেখলেন গন্ধর্বরাজ বিশ্ববসুকে। বিশ্ববসু ছিলেন সুদর্শন পুরুষ। মেনকা ভাবলেন, ইনিই শিব। কিন্তু প্রশ্ন করে জানলেন, উনি সামান্য গায়কমাত্র, বিবাহসভায় শিবের চিত্তবিনোদনের জন্য এসেছেন। তাই শুনে মেনকা ভাবলেন, শিব নিশ্চয় আরও সুদর্শন। তখন তিনি সম্পদের দেবতা কুবেরকে দেখলেন, কুবের বিশ্ববসু অপেক্ষা সুদর্শন। কিন্তু নারদ মেনকাকে বললেন যে উনি শিব নন। তারপর একে একে মেনকা দেখলেন বরুণ, যম, ইন্দ্র, সূর্য, চন্দ্র, ব্রহ্মা, বিষ্ণু ও বৃহস্পতিকে। প্রত্যেকেই পরম সুদর্শন পুরুষ। কিন্তু নারদ মেনকাকে বললেন, এঁরা কেউই শিব নন, শিবের অনুচরমাত্র। শুনে মেনকার আনন্দ আর ধরে না। এমন সুদর্শন দেবতারা যদি শিবের অনুচরমাত্র হন, তবে শিব নিজে কত না সুদর্শন। কিন্তু কোথায় শিব? শেষে এলেন শিব। নারদ মেনকাকে বললেন, ‘ইনিই শিব।’ জামাইয়ের অমন ভীষণ মূর্তি দেখে মেনকা তো মূর্ছা গেলেন।

Read the rest of this entry »

 

ট্যাগ সমুহঃ

সংক্ষিপ্ত শিবপুরাণ :: পর্ব ৩

পার্বতীর তপস্যা

এদিকে পার্বতী শিবের প্রেমে পড়লেন। দিনরাত অন্য চিন্তা নেই, শুধু শিব শিব আর শিব।

 

একদিন দেবর্ষি নারদ এসে পার্বতীকে বললেন, শিব কেবলমাত্র তপস্যাতেই সন্তুষ্ট হন। তপস্যা বিনা ব্রহ্মা বা অন্যান্য দেবতারাও শিবের দর্শন পান না।

 

নারদের পরামর্শ মতো পার্বতী তপস্যা করার সিদ্ধান্ত নিলেন। প্রথমে তিনি পিতামাতার অনুমতি নিলেন। তাঁর পিতা গিরিরাজ হিমালয় সাগ্রহে অনুমতি দিলেন। যদিও মা মেনকা মেয়েকে এমন কঠিন তপস্যা করতে দিতে রাজি ছিলেন না। কিন্তু পরে তিনিও অনুমতি দিলেন।

 

তপস্বিনী পার্বতী

পার্বতী বহুমূল্য বস্ত্র ও অলংকারাদি পরিত্যাগ করে মৃগচর্ম পরিধান করলেন। তারপর হিমালয়ের গৌরীশিখর নামক চূড়ায় গিয়ে কঠিন তপস্যায় বসলেন। বর্ষাকালে মাটিতে বসে, শীতকালে জলে দাঁড়িয়ে তপস্যা করতে লাগলেন পার্বতী। বন্য জন্তুরা তাঁর ক্ষতি করা দূরে থাক, কাছে ঘেঁষতেও ভয় পেতে লাগল। সকল দেবতা ও ঋষিরা একত্রিত হয়ে এই অত্যাশ্চর্য তপস্যা চাক্ষুষ করতে লাগলেন। দেবতাগণ ও ঋষিগণ শিবের কাছে প্রার্থনা জানিয়ে বললেন, ‘হে প্রভু, আপনি কি দেখতে পান না পার্বতী কি ভীষণ তপস্যায় বসেছেন? এমন কঠোর তপস্যা পূর্বে কেউ করেনি। ভবিষ্যতেও কেউ করতে পারবে না। অনুগ্রহ করে তাঁর মনস্কাম পূর্ণ করুন।’

Read the rest of this entry »

 
2 টি মন্তব্য

Posted by চালু করুন ফেব্রুয়ারি 15, 2012 in পুরনো লেখা

 

ট্যাগ সমুহঃ

তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়: গ্রন্থতালিকা

তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়

তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের (১৮৯৮-১৯৭১) রচিত গ্রন্থাবলির তালিকা এখানে দেওয়া হল। লেখকের জীবদ্দশায় প্রকাশিত মৌলিক ও সংকলন গ্রন্থের এবং মরণোত্তর প্রকাশিত মৌলিক গ্রন্থের নামই এই তালিকার অন্তর্ভুক্ত।

Read the rest of this entry »

 
১ টি মন্তব্য

Posted by চালু করুন ফেব্রুয়ারি 13, 2012 in পুরনো লেখা

 

ট্যাগ সমুহঃ

সংক্ষিপ্ত শিবপুরাণ :: পর্ব ২

তারকাসুরের বরলাভ

তার নামে এক অসুর ছিল। তার পুত্রের নাম ছিল তারক।

তারক দেবতাদের পরাজিত করতে চাইল। তাই সে মধুবন নামে এক স্থানে গিয়ে ভীষণ তপস্যা শুরু করে দিল। সূর্যের দিকে তাকিয়ে উর্ধ্ববাহু হয়ে এক পায়ের আঙুলে ভর দিয়ে দাঁড়িয়ে একশো বছর তপস্যা করল তারক। এই একশো বছর সে শুধু জল ছাড়া আর কিছুই খেল না। তারপর একশো বছর জল ত্যাগ করে শুধুমাত্র বায়ু ভক্ষণ করে তপস্যা করল। একশো বছর তপস্যা করল জলের তলায়, একশো বছর মাটিতে, আর একশো বছর আগুনের মধ্যে। তারপর একশো বছর সে হাতে ভর দিয়ে উলটো হয়ে তপস্যা করল। পরের একশো বছর তপস্যা করল গাছের ডালে উলটো হয়ে ঝুলে।

এই কঠোর তপস্যায় ব্রহ্মা খুশি হলেন। তিনি তারকাসুরের সামনে আবির্ভূত হয়ে বললেন, ‘বৎস, তোমার তপস্যায় আমি সন্তুষ্ট হয়েছি। তুমি কী বর চাও, বলো।’

Read the rest of this entry »

 
2 টি মন্তব্য

Posted by চালু করুন ফেব্রুয়ারি 11, 2012 in পুরনো লেখা

 

ট্যাগ সমুহঃ

সংক্ষিপ্ত শিবপুরাণ :: পর্ব ১

শিব

নৈমিষারণ্যে যে ঋষিরা বাস করতেন, তাঁরা একদিন রোমহর্ষণের কাছে এসে বললেন, ‘হে রোমহর্ষণ, আপনি ঈশ্বরের আশীর্বাদধন্য। আপনি আমাদের অনেক কিছু শিখিয়েছেন। কিন্তু আমাদের জ্ঞানতৃষ্ণা এখনও পরিতৃপ্ত হয়নি। আপনি পরম সৌভাগ্যবান যে মহর্ষি বেদব্যাসের নিকট অধ্যয়নের সুযোগ পেয়েছেন। অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যতের কিছুই আপনার অগোচর নয়। আমাদের শিবের কথা বলুন। আমরা শিবের সম্পর্কে বিশেষ জানি না।

রোমহর্ষণ উত্তরে বললেন, ‘আপনাদের জ্ঞানতৃষ্ণা নিবৃত্তিতে আমি যথাসাধ্য চেষ্টা করব। বহু বছর আগে দেবর্ষি নারদ তাঁর পিতা ব্রহ্মার নিকট শিবের কথা জানতে চেয়েছিলেন। সেই কথাই আপনাদের বলছি, শুনুন।’

Read the rest of this entry »

 
2 টি মন্তব্য

Posted by চালু করুন ফেব্রুয়ারি 11, 2012 in পুরনো লেখা

 

ট্যাগ সমুহঃ

প্রবাল দ্বীপ :: রবার্ট মাইকেল ব্যালেন্টাইন : অর্ণব দত্ত অনূদিত :: ৩

এই উপন্যাসটির অনুবাদ-স্বত্ব অনুবাদক কর্তৃক সংরক্ষিত। অনুবাদকের অনুমতি ও নাম-উল্লেখ ছাড়া তা কোনো উপায়ে অন্যত্র প্রকাশ নিষিদ্ধ।

প্রবাল দ্বীপ : প্রশান্ত মহাসাগরের গল্প
রবার্ট মাইকেল ব্যালেন্টাইন
অনুবাদ।। অর্ণব দত্ত

তৃতীয় অধ্যায়।

প্রবাল দ্বীপ—তীরে পৌঁছোনোর পর আমাদের অনুসন্ধান ও তার ফল—আমরা সিদ্ধান্ত করলুম যে দ্বীপটি জনহীন

অজ্ঞান অবস্থা থেকে জ্ঞান ফেরার সময়টায় যে অদ্ভুত একটা রোমাঞ্চকর অনুভূতি হয়েছিল, সেটা লিখে বর্ণনা করা যাবে না। কেমন একটা স্বপ্নালু, হতচকিত চৈতন্যের ভাব; আধো-ঘুমন্ত আধো-জাগরিত অবস্থা; সেই সঙ্গে কেমন একটা উদ্বেগের ভাবও ছিল, যদিও সেটা নিতান্ত খারাপ বোধ হচ্ছিল না। আস্তে আস্তে আমার জ্ঞান ফিরে এল। পিটারকিনের গলা শুনলুম। সে শুধোচ্ছিল, এখন একটু ভাল লাগছে কিনা। আমার মনে হচ্ছিল, আমি যেন বেশি ঘুমিয়ে ফেলেছি, তাই শাস্তি দিয়ে এখুনি আমাকে তুলে দেওয়া হবে মাস্তুলের চুড়োয়। তড়াক করে উঠতে যাব, কিন্তু তার আগেই চিন্তাটা যেন মাথা থেকে দূর হয়ে গেল। মনে হল, আমি যেন অসুস্থ। সেই মুহুর্তে একটা মিষ্টি হাওয়া আমার গালে এসে ঠেকল। মনে হল যেন আমি আমার বাড়িতে। বাবার কটেজের বাগানে সুন্দর সুন্দর ফুল আর মায়ের নিজের হাতে তৈরি করা সুগন্ধী হানি-সাকল লতার মাঝে শুয়ে আছি। কিন্তু ঢেউয়ের গর্জন সেই সব সুন্দর চিন্তাগুলিকে খেদিয়ে দিল। সমুদ্রে ফিরে গেলুম। সেই ডলফিন আর উড়ুক্কু মাছ দেখা, ঝোড়ো কেপ হর্ন পেরিয়ে আসা জাহাজ। আস্তে আস্তে ঢেউয়ের গর্জন জোরালো আর স্পষ্টতর হয়ে উঠল। মনে হল, নিজের দেশ থেকে বহু বহু দূরে কোথায় আমার জাহাজ ভেঙে পড়েছে। ধীরে ধীরে চোখ খুললুম। দেখলুম আমার সঙ্গী জ্যাক-দাদা ভারি উদ্বিগ্ন হয়ে আমার মুখের দিকে চেয়ে রয়েছে।

জ্যাক-দাদা আস্তে আস্তে জিজ্ঞাসা করল, “কথা বল্‌, ভাই রালফ, এখন একটু ভালো লাগছে?”

আমি হেসে চোখে মেলে চাইলুম। বললুম, “ভালো। কেন, জ্যাক-দাদা? আমি তো ভালোই আছি।”

Read the rest of this entry »

 

গোপাল ভাঁড় :: ১

কৃষ্ণনগরে ছাউনি ফেলেছেন বাংলার নবাব।

একদিন হঠাৎ একটি ষাঁড় ঢুকে পড়ল নবাবের শিবিরে। নধর ষাঁড়টিকে দেখেই নবাবের নোলা উঠল সপসপিয়ে। তৎক্ষণাৎ তাঁর আদেশে সেটিকে বন্দী করা হল। নবাবের হুকুম হল, ‘কাল এটিকে জবাই করে ভালো করে রান্না করে আমার পাতে দেবে।’

কথাটা গেল নদিয়ার মহারাজ কৃষ্ণচন্দ্র রায়ের কানে। শুনে তো কৃষ্ণচন্দ্রের মাথায় হাত। ও ষাঁড়টি যে তাঁর বৃষোৎসর্গের ষাঁড়। ওটি মুসলমান নবাবের পেটে গেলে যে তাঁর চোদ্দোপুরুষ নরকস্থ হবেন!

গোপাল ভাঁড় বললেন, ‘মহারাজ, চিন্তা করবেন না। আমি দেখছি, কোনো ভাবে ও ষাঁড়টিকে নবাবের খপ্পর থেকে উদ্ধার করা যায় কিনা।’

সেইদিন সন্ধ্যাবেলাই গোপাল গেলেন নবাবের সাক্ষাৎপ্রার্থী হয়ে। গোপাল মহারাজ কৃষ্ণচন্দ্রের রাজবিদুষক শুনে ভারি খুশি হয়ে নবাব তাঁকে খুব খাতির করলেন।

Read the rest of this entry »

 
5 টি মন্তব্য

Posted by চালু করুন ফেব্রুয়ারি 9, 2012 in পুরনো লেখা

 

নেতাজি সুভাষ ও তাঁর আজাদ হিন্দ ফৌজ

——————————————————–

বঙ্গভারতী নেতাজি জয়ন্তী স্মারক রচনা, ২০১২

———————————————————

নেতাজি সুভাষ ও তাঁর আজাদ হিন্দ ফৌজ

অর্ণব দত্ত

———————————————————-

এই লেখাটি পুনঃমুদ্রিত হয়েছে আমাদের নতুন ওয়েবসাইটে:

http://www.bangabharatiemag.com/2013/01/blog-post_7479.html

আমাদের নতুন ওয়েব-ঠিকানা:

http://www.bangabharatiemag.com/

———————————————————-

নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু

বিশ শতকের গোড়ার দিকে কোনো কোনো চরমপন্থী বিপ্লবী দেশের বাইরে গিয়ে সশস্ত্র বাহিনী গঠন করে ভারতকে ব্রিটিশদের হাত থেকে উদ্ধার করার স্বপ্ন দেখেছিলেন। তাঁদেরই একজন ছিলেন রাসবিহারী বসু। ১৯১৫ সালে রাসবিহারী চলে যান জাপানে। সেখান থেকে প্রবাসী ভারতীয়দের সংগঠিত করে ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে একটি সশস্ত্র সামরিক বাহিনী স্থাপনের চেষ্টা চালিয়ে যেতে থাকেন। ব্রিটিশ ভারতীয় সেনাবাহিনীতে সেই সময় অসংখ্য ভারতীয় জওয়ান চাকরি করতেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় দক্ষিণপূর্ব এশিয়ায় জাপানের সঙ্গে ব্রিটিশদের যুদ্ধ বাধলে এদের একটি বিরাট অংশ জাপানিদের হাতে বন্দী হন।

১৯৪২ সালের মার্চ মাসে জাপানের রাজধানী টোকিয়োতে ভারতীয়দের একটি সম্মেলনে গঠিত হয় ‘ইন্ডিয়ান ইন্ডিপেনডেন্স লিগ’ বা ‘ভারতীয় স্বাধীনতা লিগ’। ১৯৪২ সালে ব্যাংককে আরও একটি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এই সম্মেলনেই রাসবিহারী বসুকে লিগের সভাপতি নির্বাচিত করা হয় এবং আজাদ হিন্দ বাহিনী (ইংরেজিতে ইন্ডিয়ান ন্যাশানাল আর্মি বা আইএনএ) নামে একটি সামরিক বাহিনী গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। জাপানিদের হাতে যুদ্ধবন্দী ৪০,০০০ ভারতীয় সেনা নিয়ে গড়ে ওঠে আজাদ হিন্দ ফৌজ। ক্যাপ্টেন মোহন সিং ফৌজের অধিনায়ক নিযুক্ত হন। উক্ত সম্মেলনেই সুভাষচন্দ্র বসুকে আমন্ত্রণ জানানো হয় আজাদ হিন্দ ফৌজের ভার স্বহস্তে গ্রহণ করার জন্য। সুভাষচন্দ্র টোকিয়োতে এসে পৌঁছান ১৯৪৩ সালের জুন মাসে। পরের মাসে সিঙ্গাপুরে এসে ফৌজে যোগ দেন। রাসবিহারী বসু সুভাষচন্দ্রের হাতে আজাদ হিন্দ ফৌজের ভার তুলে দেন। বাহিনী সুভাষচন্দ্রকে অভিবাদন জানায় ‘নেতাজি’ নামে। সিঙ্গাপুরেই নেতাজি স্থাপন করেন আরজি-হুকুমত-এ-আজাদ হিন্দ বা অস্থায়ী আজাদ হিন্দ সরকারের। কংগ্রেসের ত্রিবর্ণরঞ্জিত পতাকা গৃহীত হয় ভারতের জাতীয় পতাকা হিসেবে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘জনগণমন-অধিনায়ক জয় হে’ গানটি নির্বাচিত হয় ভারতের জাতীয় সংগীত হিসেবে। নেতাজি আজাদ হিন্দ ফৌজের দুটি প্রধান কার্যালয় স্থাপন করেন – একটি রেঙ্গুনে, অপরটি সিঙ্গাপুরে। জাপান সেনাবাহিনী ব্রিটিশদের যুদ্ধে হারিয়ে আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের অধিকার ব্রিটিশদের হাত থেকে কেড়ে নিয়েছিল। ১৯৪৩ সালের নভেম্বরে এই দ্বীপাঞ্চল জাপানি কর্তৃপক্ষ তুলে দেয় আজাদ হিন্দ সরকারের নামে। নেতাজি স্বয়ং আসেন আন্দামনে। আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের নামকরণ করেন ‘শহীদ ও স্বরাজ দ্বীপপুঞ্জ’। এরপরই শুরু হয় আজাদ হিন্দ ফৌজের যুদ্ধাভিযান।

Read the rest of this entry »

 
3 টি মন্তব্য

Posted by চালু করুন জানুয়ারি 23, 2012 in পুরনো লেখা

 

ট্যাগ সমুহঃ

অ্যাকেলাস

অ্যাকেলাস (Achelous)

অ্যাকেলাস ও হেরাক্লিসের লড়াই, রেনি গাইডো অঙ্কিত চিত্র।

গ্রিক পুরাণের জনৈক নদী-দেবতা। তিনি গ্রিসের প্রধান নদী অ্যাকেলাসের নদী-দেবতা ও সেই সূত্রে গ্রিক পুরাণের সব নদী-দেবতার প্রধান। হেরাক্লিসের সঙ্গে তাঁর লড়াই হয়েছিল। এই লড়াইটি একটি কিংবদন্তি।

ধ্রুপদি পৌরাণিক সূত্র: অ্যাপোলোডোরাসের লাইব্রেরি (১।৮।১, ২।৭।৫), ডায়োডোরাস সিকুলাসের লাইব্রেরি অফ হিস্ট্রি (৪।৩৪।৩, ৪।৩৫।৩), হাইজিনাসের ফ্যাবুলি (৩১), ওভিডের মেটামরফোসিস (৯।১–১০০), ফিলোস্ট্র্যাটার ইম্যাজিনস (৪।১৬) এবং সোফোক্লিসের ট্র্যাকিনি (৯–২১)।

পৌরাণিক উপাখ্যান: হেরাক্লিসের দ্বাদশ মহাকৃত্যের (টুয়েলভ লেবারস) গল্পে অ্যাকেলাসের উল্লেখ আছে। একাদশ কৃত্যটি সম্পন্ন করতে হেরাক্লিস হেডিসে (গ্রিক পুরাণে কথিত নরক বা পাতাল) নেমে যান। সেখানে মেলাজারের প্রেতের সঙ্গে তাঁর সাক্ষাৎ হয়। মেলাজার হেরাক্লিসকে দিয়ে শপথ করিয়ে নেন যে, হেডিস থেকে ফিরে তিনি মেলাজারের বোন ডেয়ানিরাকে খুঁজে বের করবেন এবং তাঁকে বিবাহ করবেন। ডেয়ানিরাকে বিবাহ করার জন্য হেরাক্লিসকে তাঁর অপর পাণিপ্রার্থী অ্যাকেলাসের সঙ্গে মল্লযুদ্ধে অবতীর্ণ হতে হয়। অ্যাকেলাস ইচ্ছামতন রূপ পরিবর্তন করতে পারতেন। তাই লড়াইটি কঠিন হয়ে ওঠে। অ্যাকেলাস প্রথমে একটি সাপ ও পরে একটি ষাঁড়ের রূপ ধরে যুদ্ধে অবতীর্ণ হন। হেরাক্লিস ষাঁড়-রূপী অ্যাকেলাসের মাথার একটি শিং ছিঁড়ে নিয়ে তাঁকে যুদ্ধে পরাস্ত করেন।

বিবিধ তথ্য:অ্যাকেলাসের শিংটি কর্নুকোপিয়া বা সম্পদের শিংয়ের (সম্পদের প্রতীক স্বরূপ শস্যদানা ও ফুলে ভরা শিং) সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। অ্যাকেলাস ও হেরাক্লিসের লড়াইয়ের ছবি অনেক প্রাচীন শিল্পসামগ্রীর উপর দেখা যায়। এই গল্পের একাধিক দৃশ্য-সম্বলিত একটি চিত্রের উল্লেখ রয়েছে ফিলোস্ট্র্যাটার ইম্যাজিনস বইতে।

 

ট্যাগ সমুহঃ

প্রবাল দ্বীপ :: রবার্ট মাইকেল ব্যালেন্টাইন : অর্ণব দত্ত অনূদিত :: ২

এই উপন্যাসটির অনুবাদ-স্বত্ব অনুবাদক কর্তৃক সংরক্ষিত। অনুবাদকের অনুমতি ও নাম-উল্লেখ ছাড়া তা কোনো উপায়ে অন্যত্র প্রকাশ নিষিদ্ধ।

প্রবাল দ্বীপ : প্রশান্ত মহাসাগরের গল্প
রবার্ট মাইকেল ব্যালেন্টাইন
অনুবাদ।। অর্ণব দত্ত

দ্বিতীয় অধ্যায়।

যাত্রারম্ভ—সমুদ্র—আমার সঙ্গীরা—সমুদ্রে দেখা কয়েকটি আশ্চর্য দৃশ্যের বর্ণনা—ভয়াল ঝড় ও ভয়ংকর জাহাজডুবি

এক সুন্দর রৌদ্রজ্জ্বল উষ্ণ দিনে আমাদের জাহাজ মৃদুমন্দ বাতাসে পাল তুলে দক্ষিণ সমুদ্রের পথে পাড়ি জমাল। নোঙর তুলতে তুলতে মাল্লার দল মহানন্দে একসঙ্গে গান জুড়ে দিল। সে গান শুনে আমার যে কি ভাল লাগল। ক্যাপ্টেন চিৎকার করলেন। লোকেরা তাঁর হুকুম তামিল করতে ছুটল। বিশাল জাহাজটা বাতাসে ভর করে ভেসে চলতে লাগল। দেখতে দেখতে তটরেখাটা আমার দৃষ্টিপথ থেকে মুছে গেল। সেদিকে তাকিয়ে পুরো ব্যাপারটাকে একটা সুন্দর স্বপ্ন মনে হতে লাগল।

ডেকের উপর নোঙর তুলে শক্ত করে দড়ি দিয়ে সেটা বেঁধে ফেলা হল। আমার অল্পদিনের নাবিক-জীবনে যে কটা জিনিস দেখেছিলাম, তার মধ্যে এই ঘটনাটাই আমার প্রথম আলাদা রকমের কিছু মনে হল। যেন আমরা চিরকালের মতো মাটির পৃথিবী বিদায় নিলাম। যেন ওই নোঙরগুলোর আর কোনো প্রয়োজনই রইল না।

নোঙরগুলোকে সব গুছিয়ে রেখে সেগুলোর গায়ে হাত বুলোতে বুলোতে এক চওড়া কাঁধওয়ালা মাল্লা বলল, “নাও সোনামনি, এই বেলা ঘুমিয়ে পড়ো। এখন বেশ কিছুদিন আর তোমাকে কাদা ঘাঁটতে হবে না!”

ঠিক তা-ই হয়েছিল। নোঙরটাকে তারপর বেশ কিছুদিন “কাদা ঘাঁটতে” হয়নি। শেষে যখন ঘাঁটল, একেবারে শেষবারের মতো ঘাঁটল।

Read the rest of this entry »

 

ট্যাগ সমুহঃ

প্রবাল দ্বীপ :: রবার্ট মাইকেল ব্যালেন্টাইন : অর্ণব দত্ত অনূদিত :: ১

এই উপন্যাসটির অনুবাদ-স্বত্ব অনুবাদক কর্তৃক সংরক্ষিত। অনুবাদকের অনুমতি ও নাম-উল্লেখ ছাড়া তা কোনো উপায়ে অন্যত্র প্রকাশ নিষিদ্ধ।

প্রবাল দ্বীপ : প্রশান্ত মহাসাগরের গল্প
রবার্ট মাইকেল ব্যালেন্টাইন
অনুবাদ।। অর্ণব দত্ত

প্রথম অধ্যায়।

সূত্রপাত–আমার প্রথম জীবন ও চরিত্র–আমার অ্যাডভেঞ্চার-পিপাসা ও বিদেশভ্রমণের ইচ্ছা

ঘুরে বেড়ানোর নেশা আমার চিরকালের। ঘুরে বেড়ানোতেই আমার মনের আনন্দ। ঘুরে বেড়িয়েই আমার বেঁচে থাকা। ছেলেবেলায়, কৈশোরে, এমনকি পরিণত বয়সেও আমি ছিলুম ভবঘুরে। শুধু আমার স্বদেশের বনে পাহাড়চূড়ায় আর পাহাড়ি উপত্যকার পথেই ঘুরে বেড়াতুম না, বরং পরম আগ্রহে চষে বেড়াতুম বিপুলা এ পৃথিবীর নানা প্রান্তর।

বিরাট আটলান্টিক মহাসাগরের ফেনিল বুকে জন্ম আমার। সেদিন রাতে ঝড়ে উত্তাল হয়ে উঠেছিল কালো রাত্রি। আমার বাবা ছিলেন ক্যাপ্টেন। ঠাকুরদা ছিলেন ক্যাপ্টেন। ঠাকুরদার বাবাও ছিলেন নাবিক। তাঁর বাবা কি ছিলেন ঠিক জানি না। তবে মা বলতেন, তিনি ছিলেন মিডশিপম্যান (প্রশিক্ষণরত তরুণ নৌ-অফিসারদের সাময়িক পদ)। তাঁর দাদামশাই আবার রয়্যাল নেভির অ্যাডমিরাল ছিলেন। এইভাবে যতদূর জানতে পারি, সমুদ্দুরের সঙ্গে আমার প্রায় সব পূর্বপুরুষেরই ছিল খুব ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক। আমার পিতৃকুল-মাতৃকুল দুয়ের সম্পর্কেই এই কথা খাটে। বাবা দীর্ঘ সমুদ্রযাত্রায় বের হলে, মা-ও বাবার সঙ্গে যেতেন। তাই জীবনের বেশিরভাগ সময়টা তাঁর জলেই কেটেছিল।

Read the rest of this entry »

 
১ টি মন্তব্য

Posted by চালু করুন জানুয়ারি 17, 2012 in পুরনো লেখা

 

ট্যাগ সমুহঃ

বাইবেল-সার :: পথনির্দেশ (পর্ব ২)

ভয় হতে অভয়মাঝে

অর্থের জন্য লালায়িত হয়ো না। তোমাদের যা আছে, তাই নিয়ে সন্তুষ্ট থাকো। কারণ ঈশ্বর বলেছেন, আমি কখনও তোমাকে পরিত্যাগ করব না বা তোমাকে অসহায় অবস্থায় ফেলব না। তাই সাহস অবলম্বন করে বলো, প্রভু আমার সহায়, তাই লোকে আমার কি করবে না করবে, সে ভয় আমার নেই! (হিব্রু, ১৩।৫-৬)

ভাই সব, তোমরা প্রভু পরমেশ্বরের বলে বলীয়ান হও। তাঁর পরাক্রমেই পরাক্রান্ত হও। ঈশ্বর-বর্ম পরে যুদ্ধে নামো, তবেই শয়তানের সব ছলচাতুরীর বিরুদ্ধে জয়ী হতে পারবে। তোমাদের সংগ্রাম তো রক্তমাংসের বিরুদ্ধে নয়, তোমাদের সংগ্রাম শাসননীতির বিরুদ্ধে, কর্তৃত্বশক্তির বিরুদ্ধে, শাসকের বিরুদ্ধে, জগতের অন্ধকারের বিরুদ্ধে, অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে। তাই ঈশ্বর-বর্ম পরো। তাহলেই দুর্দিনে পায়ের তলায় মাটি পাবে, এবং সব কর্তব্য সেরেও অটল থাকতে পারবে। প্রতিরোধের জন্য দৃঢ় হয়ে দাঁড়াও। সত্য হোক তোমার কটিবন্ধ, ধার্মিকতা হোক তোমার বক্ষস্ত্রাণ। তোমার পদযুগল শান্তির সুসমাচার প্রচারের যাত্রায় সদা উদ্যোগী থাকুক। বিশ্বাসকে সর্বদা ঢাল করে রেখো, তার সাহায্যে অশুভ শক্তির অগ্নিবাণ প্রতিহত করতে পারবে। মাথায় পরো মুক্তির শিরোস্ত্রাণ, হাতে নাও পবিত্র আত্মার তরবারি ঈশ্বরের বাক্য। ভক্তদের জন্য সকল অবস্থাতেই পবিত্র আত্মার সাহায্যে প্রার্থনা কর। সদা সজাগ থাকো। (ইফিসীয়, ৬।১০-১৮)

Read the rest of this entry »

 

৪২টি ভাষার ৯ হাজারেরও বেশি রবীন্দ্র-বইয়ের হদিস দিতে চালু হচ্ছে বিশেষ ওয়েব-গ্রন্থপঞ্জি

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, ১৯২৫ সালে শান্তিনিকেতনে

খুব শিগগিরি মাউসের একটি ক্লিকেই আপনার সামনে চলে আসবে রবীন্দ্রনাথের লেখা এবং রবীন্দ্রনাথ-বিষয়ক যাবতীয় বইয়ের গ্রন্থপঞ্জি।

 

গত ৯ জানুয়ারি, ২০১২ তারিখে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায় এই প্রকল্পের উদ্বোধন করলেন। প্রণববাবু জানিয়েছেন, রাজা রামমোহন রায় লাইব্রেরি ফাউন্ডেশন এই গ্রন্থপঞ্জি সংকলনের কাজ করবে। রবীন্দ্র-বিশেষজ্ঞ ও গবেষকরা এই কাজে সাহায্য করবেন। দেশের ২০টি লাইব্রেরি ঘেঁটে এই গ্রন্থপঞ্জি সংকলনের কাজে যুক্ত থাকবে। ৪২টি ভাষায় লেখা ৯ হাজারেরও বেশি বইয়ের সম্পূর্ণ তালিকা পাওয়া যাবে এই গ্রন্থপঞ্জিতে। রবীন্দ্রনাথের নিজের রচনা ছাড়াও রবীন্দ্রসাহিত্যের সমালোচনা ও রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে দেশে ও বিদেশে প্রকাশিত যাবতীয় বই এই সংকলনের অন্তর্ভুক্ত হবে।

 

সংস্কৃতি মন্ত্রক সূত্রে বলা হচ্ছে, রবীন্দ্রনাথ কেন, কোনো সাহিত্যিককে নিয়েই এমন বৃহদাকার কাজ দুর্লভ।

Read the rest of this entry »

 

ট্যাগ সমুহঃ

খ্রিস্টধর্মের প্রথম শহিদ সন্ত স্টিফেন

“স্টোনিং অফ সেন্ট স্টিফেন” (১৬৬০), পিয়েত্রো দ্য করতোনা অঙ্কিত চিত্র

আমাদের নতুন ওয়েব-ঠিকানা:

http://www.bangabharatiemag.com/

 

সময়টা ৩৪ কি ৩৫ খ্রিস্টাব্দ। সানহার্ডিনের বিচারসভায় দাঁড়িয়ে আছেন এক তরুণ যুবক। নাম তাঁর স্টিফেন। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি ঈশ্বর ও মোজেসের নিন্দা করেছেন এবং মন্দির ও মোজেসের বিধানের বিরুদ্ধে কথা বলেছেন। বিচারসভার সকলের দৃষ্টি স্টিফেনের মুখে নিবদ্ধ। সে মুখ যেন স্বর্গদূতের মুখ।

আসল ঘটনাটি অন্য। যিশু খ্রিস্টের প্রেরিত শিষ্যমণ্ডলী সাত জন পুণ্যাত্মাকে জেরুজালেমে যিশুর বাণী প্রচারের জন্য নিযুক্ত করেছিলেন। তাঁদের মধ্যে অন্যতম এই যুবক স্টিফেন। স্টিফেন ছিলেন ঈশ্বরের শক্তিতে পরিপূর্ণ। জেরুজালেমে তিনি সাফল্যের সঙ্গে যিশুর বাণী প্রচার করতে লাগলেন। ঈশ্বরের অনুগ্রহে জনসমক্ষে অনেক অলৌকিক কাজও করলেন। এতে কিছু মুক্ত-ক্রীতদাস, সাইরিনি ও আলেকজান্দ্রিয়ার কিছু লোক এবং সিলিসিয়া ও এশিয়ার কিছু লোকের সঙ্গে বিবাদে জড়িয়ে পড়লেন স্টিফেন। স্টিফেনের কথাগুলি ছিল ঈশ্বরের আশীর্বাদপুষ্ট। তাই সেগুলিকে খণ্ডানোর ক্ষমতা কারোরই হল না। তখন সেই লোকগুলি বাঁকা পথ ধরল। তারা জেরুজালেমের জনসাধারণ ও প্রবীণ সমাজপতিদের প্ররোচিত করল। স্টিফেনকে বেঁধে আনা হল বিচারসভায়। একদল মিথ্যা সাক্ষীও হাজির হল। তারা বললে, “এই লোকটি বলেছে, ঐ নাজারেথের যিশু নাকি এই মন্দির ধ্বংস করবে এবং মোজেস আমাদের যে বিধান দিয়ে গেছেন, তা বদলে দেবে?” প্রধান পুরোহিত স্টিফেনের দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞাসা করলেন, “এসব কি সত্যি?”

Read the rest of this entry »

 
2 টি মন্তব্য

Posted by চালু করুন জানুয়ারি 10, 2012 in পুরনো লেখা

 

ট্যাগ সমুহঃ

ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলন (১৮৫৭-১৯৪৭): একটি সংক্ষিপ্ত ইতিহাস :: পর্ব ৩

জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ড (১৩ এপ্রিল, ১৯১৯)

১৯১৯ সালের ১০ এপ্রিল ড. কিচলু ও ড. সত্যপালকে সত্যাগ্রহ আন্দোলনে জড়িত থাকার দায়ে রাওলাট আইনে গ্রেফতার করা হয়। এর ফলে পাঞ্জাব অশান্ত হয়ে ওঠে। এই গ্রেফতারের বিরুদ্ধে অমৃতসরের মানুষ মিছিল বের করে। মিছিলে পুলিশ গুলি চালালে পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়ে ওঠে। ফলত উন্মত্ত জনতার হাতে পাঁচ জন ইউরোপীয়ের প্রাণহানি ঘটে। ১৩ এপ্রিল অমৃতসরের জালিয়ানওয়ালাবাগ নামে একটি উদ্যানে মহিলা ও শিশুসহ সহস্রাধিক মানুষ সমবেত হয়। সভা শুরু হওয়ার আগেই জেনারেল ও’ডায়ারের নেতৃত্বে একদল পুলিশ বিনা প্ররোচনায় সভাস্থলে গুলিবর্ষণ করে। উদ্যানটি আবদ্ধ হওয়ায় সমবেত জনতার বের হওয়ার পথ ছিল না। এতে শতাধিক পুরুষ, মহিলা ও শিশু নিহত হয়। ১২০০ জন আহত হয়। এই ঘটনা ভারতীয় স্বাধীনতা আন্দোলনের মোড় ঘুরিয়ে দেয়। এরপরই জাতীয় রাজনীতিতে গান্ধীজির উত্থান ঘটে।

জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে রবীন্দ্রনাথ তাঁর ‘স্যার’ উপাধি বর্জন করেন। অনেক বছর পরে ১৯৪০ সালের ১৩ মার্চ পাঞ্জাবের বীর যুবক সর্দার উধম সিং ইংল্যান্ডে গিয়ে লন্ডনের ক্যাক্সটন হলে একটি জনসভায় ও’ডায়ারকে গুলি করে হত্যা করেন। সেই বছরই ৩১ জুলাই ইংল্যান্ডে উধম সিংকে ফাঁসি দেওয়া হয়। ৩৪ বছর পর ১৯৭৪ সালের ১৯ জুলাই শহিদ উধম সিংয়ের দেহাবশেষ ভারতে ফিরিয়ে আনা হয়।

Read the rest of this entry »

 

ট্যাগ সমুহঃ