
জন কার্টার ছবির ফরাসি পোস্টার
পরিচালনা—অ্যান্ড্রু স্ট্যানটন
প্রযোজনা—জিম মরিস, কলিন উইলসন, লিন্ডসে কলিনস
চিত্রনাট্য—অ্যান্ড্রু স্ট্যানটন, মার্ক অ্যান্ড্রুজ, মাইকেল চ্যাবন (এডগার রাইস বারোর আ প্রিন্সেস অফ মার্স উপন্যাস অবলম্বনে)
অভিনয়—টাইলর কিচ, লিন কলিনস, সামান্থা মর্টন, মার্ক স্ট্রং এবং অন্যান্যরা
সংগীত—মাইকেল জিয়াচিনো
সিনেম্যাটোগ্রাফি—ড্যানিয়েল মিন্ডেল
মুক্তির তারিখ—৯ মার্চ, ২০১২ (যুক্তরাষ্ট্র)
দেশ—যুক্তরাষ্ট্র
ভাষা—ইংরেজি
বাজেট—২৫০-৩৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার
বক্স অফিস—২৮২,৭৭৮,১০০ মার্কিন ডলার

ছবির পোস্টারে দৃশ্যমান দানবদ্বয়
এই বছরই মুক্তি পেল অ্যান্ড্রু স্ট্যানটন পরিচালিত আমেরিকান কল্পবিজ্ঞান চলচ্চিত্র জন কার্টার। এডগার রাইস বারোর ‘বারসুম’ সিরিজের উপন্যাস আ প্রিন্সেস অফ মার্স অবলম্বনে তৈরি হয়েছে এই ছবি। জন কার্টারের প্রথম আন্তঃগ্রহ অভিযান এই ছবির বিষয়। নামভূমিকায় অভিনয় করেছেন টাইলর কিচ। ছবিটি নির্মিতও হয়েছে জন কার্টার চরিত্র সৃষ্টির শতবর্ষপুর্তি উপলক্ষ্যে। ওয়াল্ট ডিজনি পিকচার্স থেকে মুক্তি পেয়েছে এই ছবিটি।

ছবির ইংরেজি পোস্টার
প্লট
প্রাক্তন আমেরিকান সিভিল ওয়ার কনফেডারেট আর্মি ক্যাপ্টেন জন কার্টার (টাইলর কিচ)। তাঁর অকস্মাৎ মৃত্যুর পর শেষকৃত্যে যোগ দিতে এসেছে ভাগনে এডগার রাইস বারো (ডারিল সাবারা)। কার্টারের নির্দেশমতো তাঁর দেহ এমন একটা সমাধিসৌধের মধ্যে রাখা হয়েছে, যার চাবি শুধুমাত্র ভিতর থেকেই খোলা সম্ভব। এদিকে কার্টারের অ্যাটর্নি কার্টারের ব্যক্তিগত লেখাপত্র বারোকে পড়তে দিলেন। তিনি ভেবেছিলেন, বারো হয়তো এগুলি পড়ে কার্টারের মৃত্যুর কারণ কিছু আবিষ্কার করতে পারবে।

জন কার্টার: একটি আন্তঃগ্রহ প্রেমকাহিনি
এরপর ছবির দর্শক চলে যান অ্যারিজোনা টেরিটরিতে। সেখানে ইউনিয়ন কর্নেল পোয়েল (ব্রায়ান ক্যানস্টন) গ্রেফতার করছেন কার্টারকে। পোয়েল কার্টারের মিলিটারি ব্যাকগ্রাউন্ডের কথা জানতেন। তাই অ্যাপাকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে তাঁর সাহায্য প্রার্থনা করেন। যদিও যুদ্ধ চলাকালীন মার্শালদের সঙ্গে কার্টার পালিয়ে যান। তাঁর পিছনে ধাওয়া করে কার্টার ও পোয়েল দুজনেই এসে উপস্থিত হন একটি গুহায়। এই গুহাটিতেই সোনার খোঁজ করছিলেন কার্টার। এমন সময় সেখানে একজন থার্ন এসে হাজির হয়। কার্টার তাকে হত্যা করেন এবং তার মেডেলটির সাহায্যে নিজের অজ্ঞাতেই এসে হাজির হন বারসুম গ্রহে (মঙ্গলগ্রহ)। কার্টার পৃথিবীবাসী। তাই তার হাড়ের ঘনত্ব এই গ্রহের গড়পড়তা লোকের তুলনায় অন্যরকম। তার উপর এখানকার মাধ্যাকর্ষণ শক্তিও কম। সেই সুযোগে এখানে অনেক উঁচুতে লাফ মারা সহ বেশ কিছু অভাবনীয় কসরত খুব সহজেই আয়ত্ত করে ফেলেন কার্টার। কিন্তু সবুজ মঙ্গলগ্রহীয় থার্ক বাহিনী আর তাদের জেড্ডাক সম্রাট টারস টারকাস (উইলিয়াম ডিফো) তাঁকে বন্দী করতে সক্ষম হন।

নাসার গবেষণাকে গুলি মারুন। মঙ্গলগ্রহের জীবজন্তু এই রকমই হয়!
বারসুমে অন্যদিকে দুই মঙ্গলগ্রহীয় শহর হেলিয়াম ও জোডাঙ্গার মধ্যে এক হাজার বছর ধরে যুদ্ধ চলছে। জোডাঙ্গার জেড্ডাক স্যাব থ্যান (ডোমিনিক ওয়েস্ট) থার্নদের থেকে একটা বিশেষ অস্ত্র পেয়ে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দিয়েছেন। কিন্তু যুদ্ধবিরতির বিনিময় শর্ত হল তিনি বিয়ে করবেন হেলিয়ামের রাজকন্যা ডেজাহ থোরিসকে (লিন কলিনস)। রাজকন্যা পালিয়ে যান। তাঁকে উদ্ধার করেন কার্টার। কার্টার, ডেজাহ আর টারকার মেয়ে সোলা (সামান্থা মরটন) কার্টারের পৃথিবীতে ফেরার রাস্তা খোঁজার জন্য একটি পবিত্র নদীর মোহনার দিকে যাত্রা করে। তারা নবম রশ্মি সম্পর্কে জানতে পারে। এই রশ্মির সাহায্যে এক অনন্ত শক্তিকে ব্যবহার করা যায়। যার ফলে বোঝা যায় ওই মেডেলটি কিভাবে কাজ করে। কিন্তু থার্ন দলপতি মাতাই শাং (মার্ক স্ট্রং) ও তার অনুগত ওয়ারহুনের সবুজ মানুষের দল তাদের উপর হামলা করে। কার্টার আবার বন্দী হন। ডেজাহের সঙ্গে তাঁকে ধরে নিয়ে যাওয়া হল। সোলা পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। মানসিকভাবে ভেঙে পড়া ডেজাহ অনিচ্ছাসত্ত্বেও স্যাব থানকে বিয়ে করতে রাজি হন। তারপর কার্টারকে তার মেডেলটি ফিরিয়ে দিয়ে পৃথিবীতে ফিরে যেতে বলেন। কার্টার কিন্তু থেকে যান। শাং তাঁকে বন্দী করেন। শাঙের মুখ থেকে কার্টার জানতে পারে থার্নদের উদ্দেশ্য হল, গ্রহে গ্রহে নিজেদের জনসংখ্যা বৃদ্ধি করা। কার্টার পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। তারপর সোলাকে নিয়ে নিয়ে থার্কদের কাছে গিয়ে তাদের সাহায্য চাইতে যান। কিন্তু গিয়ে দেখেন টাল হাজুস (টমাস হ্যাডেন চার্চ) টারকাকে সিংহাসন থেকে হঠিয়ে দিয়েছে। টারকা, কার্টার ও সোলাকে একটা বিরাট কলোসিয়ামে দুই ভয়ংকর বিশালাকায় জীবের সঙ্গে ছেড়ে দেওয়া হয় পরীক্ষা করার জন্য। তাদের পরাজিত করে ও হাজুসকে মেরে কার্টার থার্কদের নেতা হন।

মঙ্গলগ্রহীয় অধিবাসী। প্রশ্ন হল রাজকুমারীর চেহারা এই রকম হলে কী কার্টার তাকে বিয়ে করতেন?
থার্ক বাহিনী হেলিয়াম আক্রমণ করে জোডাঙ্গান বাহিনীকে পরাজিত করে স্যাব থ্যানকে হত্যা করে। ডেজাহকে বিয়ে করে কার্টার হেলিয়ামের রাজপুত্র ঘোষিত হন। কার্টার স্থির করেন, তিনি মঙ্গলগ্রহেই থেকে যাবেন। তাই মেডেলটি ফেলে দেন। সেই সুযোগে শাং তাকে পৃথিবীতে নির্বাসিত করে দেয়। এরপর দীর্ঘদিন ধরে কার্টার পৃথিবীতে থার্নদের অস্তিত্বের অনুসন্ধান চালিয়ে যান, যাতে তিনি তাদের মেডেল হস্তগত করতে পারেন। তারপরই হঠাৎ করে মারা যান কার্টার। মারা যাওয়ার আগে এক অদ্ভুত অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার ব্যবস্থা করে যান—যা দেখে মনে হয় যে, তিনি মেডেলটি খুঁজে পেয়েছেন। আর যেহেতু তিনি মঙ্গলগ্রহে ফিরে যাচ্ছেন, তাই তাঁর পার্থিব শরীরটাকে রেখে যাচ্ছেন কোমাচ্ছন্ন অবস্থায়—এমন একটা আভাসও দিয়ে যান। সেই জন্যই তিনি বারোকে নিজের রক্ষাকর্তা নিয়োগ করেন এবং তাকে সমাধিসৌধটি খোলার কৌশলটি কৌশলে শিখিয়ে দেন।
এরপরই দৃশ্যান্তর। আবার দর্শক ফিরে আসে চলতি সময়ে। বারো ছুটে আসছে কার্টারের সমাধিসৌধে। কিন্তু সমাধি খালি। এমন সময় তাকে অনুসরণ করে হাজির হয় একটা থার্ন। সে বারোকে খুন করতে যায়। কিন্তু সেই মুহুর্তে হাজির হন কার্টার। তিনি থার্নটাকে মেরে ফেলেন। তারপর বারোর কাছে সবকিছু খুলে বলেন তিনি। তিনি মোটেই মেডেলটি খুঁজে পাননি। শুধু জানতেন থার্নেরা তার উপর নজর রাখছে। তাই তিনি এই ফাঁদ পাতেন। তারপর কার্টার থার্নটার মেডেল তুলে নিয়ে ফিসফিস করে কী একটা যেন বলেন আর ট্রান্সপোর্টেড হয়ে যান বারসুমে।

শেষপাতে রইল বারোজের মূল বইয়ের একটি অলংকরণ।
Indranil Modak
অক্টোবর 8, 2012 at 4:25 অপরাহ্ন
Khub baje cinema. Dekhe time nosto.
অর্ণব দত্ত
অক্টোবর 8, 2012 at 4:51 অপরাহ্ন
আসলে আমি দুই ধরনের সিনেমা দেখি-খুব ভাল নয় খুব বাজে। 😀