আচমন প্রসঙ্গে পূজ্যপাদ স্বামী প্রমেয়ানন্দজি মহারাজ লিখেছেন, “দেহ-মন শুদ্ধ না থাকলে আধ্যাত্মিক সাধনের যোগ্যতা হয় না। অন্যভাবে, দেহ-মন শুদ্ধ করে নিয়ে তবে সাধন-ভজনে প্রবৃত্ত হতে হয়। আচমনের মুখ্য উদ্দেশ্য দেহ-মন শুদ্ধ করা। বিষ্ণুস্মরণ দেহ-মনশুদ্ধির শ্রেষ্ঠ উপায়।… আবার আচমন পূজককে পূজার লক্ষ্য সর্বব্যাপক অখণ্ড-চৈতন্য পরমাত্মার দিকে অগ্রসর হওয়ার কথাও পরোক্ষভাবে স্মরণ করিয়ে দেয়।” (পূজাবিজ্ঞান, পৃ. ১৯) এই কারণে হিন্দুরা যে কোনো পবিত্র কাজ, তা সে পূজাই হোক বা অন্য কোনো ধর্মীয় অনুষ্ঠানই হোক, তা শুরু করার আগে আচমন করে থাকেন।
আচমনের দুটি অংশ। প্রথমটি মূল আচমন প্রক্রিয়া, দ্বিতীয়টি তার আনুষঙ্গিক বিষ্ণুস্মরণ। আচমন প্রক্রিয়াটি ওঁ-কারযুক্ত শুদ্ধ বিষ্ণুনাম উচ্চারণ-সহ কয়েকটি প্রতীকী ক্রিয়া। বিষ্ণুস্মরণের সময় আমরা সাধারণত যে মন্ত্রটি উচ্চারণ করি, সেটি হল—
ওঁ তদ্বিষ্ণোঃ পরমং পদং সদা পশ্যন্তি সূরয়ঃ দিবীব চক্ষুরাততম্। ১
ওঁ অপবিত্রঃ পবিত্রো বা সর্বাবস্থাং গতোঽপি বা।
যঃ স্মরেৎ পুণ্ডরীকাক্ষং স বাহ্যাভ্যন্তরঃ শুচিঃ।। ২
মন্ত্রটির বাংলা অর্থ—
আকাশের সূর্যের মতো সর্বত্র প্রকাশমান, বেদ ও অন্যান্য শাস্ত্রে প্রসিদ্ধ, পরম তত্ত্ব জ্ঞানীগণ সর্বদা দর্শন করেন। ১
বাহ্য শরীর ও শরীরের অভ্যন্তরে স্থিত মনের কোনো একটি বা দুটিই যদি অপবিত্র হয়, তবে পদ্মলোচন শ্রীবিষ্ণুকে স্মরণ করা মাত্রই বাহ্য ও অন্তরে শুদ্ধ হওয়া যায়। ২
মন্ত্রের তাৎপর্য উল্লেখ করে প্রমেয়ানন্দজি উপসংহারে লিখেছেন, “কর্মের (পূজা) সূচনায় সাধকও প্রার্থনা করছেন—জ্ঞাননেত্রে তিনি যেন বিষ্ণুকে দর্শন করতে পারেন, তাঁর স্বরূপ উপলব্ধি করতে পারেন ; কর্মের উদ্দেশ্য সাধনে তিনি যেন সক্ষম হন।” (তদেব)
কেউ কেউ বিষ্ণুস্মরণ মন্ত্রের সঙ্গে আরও দুটি পংক্তি জুড়ে দেন—
ওঁ মাধবো মাধবো বাচি মাধবো মাধবো হৃদি।
স্মরন্তি সাধবঃ সর্বে সর্বকার্যেষু মাধব।।
মন্ত্রের অর্থ—
সাধুব্যক্তিদের বাক্যে মাধব (বিষ্ণু) ও হৃদয়ে মাধব। তাঁরা সকল কাজেই মাধবকে স্মরণ করে থাকেন।
আচমন পদ্ধতি
ডান হাতের তালু ‘গোকর্ণাকৃতি’ অর্থাৎ গোরুর কানের মতো করে একটি মাষকলাই ডুবতে পারে, এই পরিমাণ জল নিয়ে ‘ওঁ বিষ্ণু’ মন্ত্রে পান করতে হবে। এই রকমভাবে তিন বার জল পান করতে হয়। তারপর বুড়ো আঙুলের পিছন দিকটি দিয়ে ওষ্ঠ ও অধর ডান দিক থেকে বাঁদিকে দুবার মার্জনা করে সামান্য জলে হাত ধুয়ে নিতে হয়। এরপর ডান হাতের নির্দিষ্ট আঙুলের ডগা দিয়ে নিম্নলিখিত ক্রমে নির্দিষ্ট স্থানগুলি স্পর্শ করা হয়—
(১) তর্জনী+মধ্যমা+অনামিকা (একসঙ্গে)—ওষ্ঠ ও অধর।
(২) (হাত ধুতে হবে)
(৩) বুড়ো আঙুল+তর্জনী—ডান ও বাঁ নাক।
(৪) বুড়ো আঙুল+অনামিকা—ডান ও বাঁ চোখ; ডান ও বাঁ কান।
(৫) বুড়ো আঙুল+কড়ে আঙুল—নাভি
(৬) (আবার হাত ধুতে হবে)
(৭) করতল দ্বারা হৃদয় স্পর্শ করতে হবে
(৮) সবকটি আঙুলের ডগা দিয়ে মাথা, ডান ও বাঁ বাহুমূল স্পর্শ করতে হবে।
(দ্রঃ এই ক্রিয়াগুলি অভিজ্ঞ ব্যক্তিরাই করে থাকেন। এগুলি যাঁরা করতে অসমর্থ তাঁরা শুধু ‘ওঁ বিষ্ণু’ মন্ত্রে জলপান করেই আচমন করেন।)
এরপর হাতজোড় করে পূর্বোক্ত আচমন মন্ত্রটি পাঠ করতে হয়—
ওঁ তদ্বিষ্ণোঃ পরমং পদং সদা পশ্যন্তি সূরয়ঃ দিবীব চক্ষুরাততম্।
ওঁ অপবিত্রঃ পবিত্রো বা সর্বাবস্থাং গতোঽপি বা।
যঃ স্মরেৎ পুণ্ডরীকাক্ষং স বাহ্যাভ্যন্তরঃ শুচিঃ।।
মন্ত্রপাঠের সময় মনে মনে শ্রীবিষ্ণুকে স্মরণ করাও আবশ্যক। কারণ, মনে রাখতে হবে সংস্কৃত আমাদের মাতৃভাষা নয়, তাই সংস্কৃত মন্ত্র শুধু পাঠ করেই আমরা তার তাৎপর্য উপলব্ধি করতে পারি না, সেজন্য আমাদের মন্ত্রের অর্থ বিশেষভাবে স্মরণ করতে হয়।
নিত্যপূজায় উপরিউক্ত ক্রমেই আচমন করে। তবে বিশেষ পূজায় আচমনের পর কুশাঙ্গুরীয় ধারণ করে পাপস্খালনের জন্য নিম্নোক্ত মন্ত্রটিও পাঠ করতে হয়—
ওঁ দেব তৎ প্রাকৃতং চিত্তং পাপাক্রান্তমভূন্মম।
তন্নিঃসারয় চিত্তান্মে পাপং হূঁ ফট চ তে নমঃ।
ওঁ সূর্য সোমো যমঃ কালো মহাভূতানি পঞ্চ চ।
এতে শুভাশুভস্যেহ কর্মণো নব সাক্ষিণঃ।।
Indranil Modak
সেপ্টেম্বর 21, 2012 at 4:31 পুর্বাহ্ন
Warning: Something’s Not Right Here!
bangabharati.wordpress.com contains content from http://www.twitsnaps.com, a site known to distribute malware. Your computer might catch a virus if you visit this site.
Google has found malicious software may be installed onto your computer if you proceed. If you’ve visited this site in the past or you trust this site, it’s possible that it has just recently been compromised by a hacker. You should not proceed, and perhaps try again tomorrow or go somewhere else.
We have already notified http://www.twitsnaps.com that we found malware on the site. For more about the problems found on http://www.twitsnaps.com, visit the Google Safe Browsing diagnostic page.
এটা আমি আজ ২১/৯/১২ IST 4:30 am আপনার পেজটা খোলার চেষ্টা করতেই দেখলাম গুগল ব্লক করে দিছে। এটাকে ক্লিন করে দিন।
অর্ণব দত্ত
সেপ্টেম্বর 21, 2012 at 9:52 পুর্বাহ্ন
সাধারণত কপিরাইটেড ছবি আপলোড করি না। লিঙ্ক দিয়ে দিই। ওই সাইটের লিঙ্কটাই দেওয়া আছে। কোন ছবিটা খুঁজে বার করতে হবে। সাবধান করে দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ। এসব মামুলি লেখা। সাইটটা যাতে বেকার না পড়ে থাকে, তাই কিছু দিয়ে ভরানো। খুব গুরুত্বপূর্ণ কিছু না।
Indranil Modak
সেপ্টেম্বর 21, 2012 at 4:36 পুর্বাহ্ন
পেজ ক্লিন করার পড়ে আমার অপরের মন্ত্যবটা ডিলিট করে দেবেন। পাঠকরা দেখলে আতঙ্কিত হতে পারে। এটাও মুছে দেবেন।
অর্ণব দত্ত
সেপ্টেম্বর 21, 2012 at 9:56 পুর্বাহ্ন
ছবিটা বাদ দিয়ে দিয়েছি। আর সমস্যা হবে না আশা করি। কমেন্টগুলি থাক। তাতে ব্যাপারটা ভবিষ্যতে আমার স্মরণে থাকবে।