RSS

মাস্টার্স অফ দ্য ইউনিভার্স

02 সেপ্টে.

মাস্টার্স অফ দ্য ইউনিভার্স ছবির পোস্টার

মাস্টার্স অফ দ্য ইউনিভার্স একটি কল্পবিজ্ঞান-ফ্যান্টাসি চলচ্চিত্র। ১৯৮৭ সালে মুক্তি পাওয়া এই ছবিটি ওই একই নামের একটি টয় লাইনের ভিত্তিতে নির্মিত হয়। ছবিতে হি-ম্যানের ভূমিকায় অভিনয় করেন ডল্ফ লান্ডগ্রেন এবং স্কেলেটরের ভূমিকায় অভিনয় করেন ফ্র্যাঙ্ক ল্যাঙ্গেলা। ১৯৮৭ সালের ৭ অগস্ট ছবিটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে মুক্তি পায়। অবশ্য তার আগেই হি-ম্যান টয় লাইন ও কার্টুন ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছিল।

গল্প:

মহাবিশ্বের কেন্দ্রস্থলে ইটারনিয়া গ্রহ। স্কেলেটরের (ফ্র্যাঙ্ক ল্যাঙ্গেলা) দলবল ইটারনিয়ার গ্রেস্কাল দুর্গ দখল করে গ্রেস্কালের জাদুকরীকে (ক্রিস্টিনা পিকেলস) বন্দী করেছে। স্কেলেটর গ্রেস্কালের গুপ্তক্ষমতা হস্তগত করার চেষ্টায় আছে। এই ক্ষমতা হাতে এলে দুর্গের সিংহাসন কক্ষে যাওয়ার ‘ছায়াপথের মহাচক্ষু’ নামে একটি পোর্টাল খুলে যাবে এবং ইটারনিয়ার চাঁদ তার সঙ্গে সঠিকভাবে যুক্ত হয়ে যাবে।

এদিকে ইটারনিয়ার সেনাবাহিনী যুদ্ধে হেরে ছত্রভঙ্গ হয়ে গেছে। স্কেলেটরের একটি টহলদার দল ইটারনিয়ার সবচেয়ে বড়ো যোদ্ধা তথা স্কেলেটরের মহাশত্রু হি-ম্যান (ডল্ফ লান্ডগ্রেন), প্রবীণ যোদ্ধা ম্যান-অ্যাট-আর্মস (জন সাইফার) ও তাঁর মেয়ে টিলাকে (চেলসি ফিল্ড) আক্রমণ করল। তাদের পরাস্ত করে হি-ম্যান থিনোরিয়ান আবিষ্কর্তা ও চাবিপ্রস্তুতকারক গোইলডোরকে (বিলি বার্টি) উদ্ধার করল। গোইলডোরের থেকে তারা জানতে পারল যে, সে সম্প্রতি ‘কসমিক কি’ নামে এমন একটি চাবি আবিষ্কার করেছে, যার মাধ্যমে মহাবিশ্বের সব জায়গার সব সময়ের সব পোর্টাল খোলা সম্ভব। গ্রেস্কাল দুর্গে ঢোকার জন্য তার থেকে সেই চাবিটা চুরি করে নিয়েছে স্কেলেটর। কিন্তু অন্য একটি চাবি এখনও গোইলডোরের কাছে রয়ে গিয়েছে। গোইলডোর হি-ম্যানের দলবলকে তার আবিষ্কার দেখাচ্ছে, এমন সময় স্কেলেটরের লোকজন গোইলডোরের আস্তানায় হানা দিল। গোইলডোর তার বন্ধুদের গোপন পথে সোজা গ্রেস্কালে নিয়ে হাজির হল।

হি-ম্যানের ভূমিকায় ডল্‌ফ লান্ডগ্রেন

গ্রেস্কালে স্কেলেটর ও তার দলবল হি-ম্যান ও তার বন্ধুদের আক্রমণ করল। বন্ধুদের বাঁচাতে মরিয়া গোইলডোর চাবিটা ব্যবহার করে যে পোর্টালটা পেল সেটার মাধ্যমেই সবাইকে নিয়ে পালিয়ে গেল। তারা এসে পৌঁছালো পৃথিবীতে। তবে পৃথিবীতে পৌঁছেই চাবিটা গেল হারিয়ে। ইটারনিয়ানরা তখন চাবিটা খুঁজতে লাগল। তারা পৃথিবীর যে জায়গাটিতে এসেছিল, তার কাছেই ক্যালিফোর্নিয়ার হুইটিয়ার শহর। সেখানে জুলি উইনস্টোন (কোর্টনি কক্স) ও কেভিন করিগন (রবার্ট ডানকান ম্যাকনেইল) নামে এক কিশোর প্রণয়ীযুগল চাবিটা কুড়িয়ে পেল। অদ্ভুত জিনিস দেখে তারা খেলাচ্ছলে তার বোতামগুলি টিপতে লাগল। এর ফলে স্কেলেটরের সেকন্ড-ইন-কম্যান্ড ইভিল-লিন (মেগ ফর্স্টার) পৃথিবীতে চাবিটার অস্তিত্ব টের পেয়ে গেল। সে পৃথিবীতে তার ভাড়াটে সেনার দল পাঠিয়ে দিল। এই দলে ছিল সাউরোড, ব্লেড ও বিস্টম্যান ; এদের নেতা নিযুক্ত হল কার্গ।

কেভিন ছিল উদীয়মান সংগীতশিল্পী। সে যন্ত্রটাকে জাপানি সিন্থেসাইজার ভেবেছিল। জুলিকে হাইস্কুল জিমে রেখে সে যন্ত্রটা নিয়ে স্থানীয় মিউজিক স্টোরে তার এক বন্ধুর মতামত জানতে গেল। ইতিমধ্যে স্কেলেটরের দলবল জিমে এসে জুলিকে তাড়া করল। শেষে হি-ম্যান তাকে উদ্ধার করল। ভাড়াটে দলটা খালি হাতে গ্রেস্কালে ফিরে গেলে স্কেলেটর খুব রেগে গেল। সাউরোডকে সে খুনই করে ফেলল। তারপর ইভিল-লিনকে নেতৃত্ব দিয়ে আরও বড়ো একটা দল পাঠালো পৃথিবীতে।

এদিকে কেভিন ফিরে দেখে স্কুল জ্বলছে আর জুলিকে পাওয়া যাচ্ছে না। ঘটনাস্থলে এসে হাজির হয়েছিল গোয়েন্দা লুবিক (জেমস টোলকান)। সে জুলির খোঁজ করতে কেভিনকে নিয়ে গেল জুলির বাড়িতে। ইতিমধ্যে জুলি ফোন করে কেভিনকে কসমিক কি-র গুরুত্বের কথা জানাল। তবে চোরাই মাল ভেবে লুবিক সেটাকে বাজেয়াপ্ত করে নিল। তার ঠিক পরেই ইভিল-লিন কেভিনকে বন্দী করে তার পেট থেকে সব কথা বের করে নিয়ে ধাওয়া করল লুবিককে। জুলি ও ইটারনিয়ানরা কেভিনকে উদ্ধার করে সব কথা জানতে পারল। তারাও তাদের পিছু পিছু গেল। লুবিক যন্ত্রটাকে মিউজিক স্টোরে নিয়ে গিয়েছিল বিশেষজ্ঞের মতামত পাওয়ার জন্য। এমন সময় ইভিল-লিনও স্টোরে উপস্থিত হল। দুপক্ষে একটা ধুন্ধুমার বেঁধে গেল। মাঝখানে ইভিল-লিন জুলির মৃতা মা-র (গোয়াইন গিলফোর্ড) ছদ্মবেশ ধরে জুলির থেকে চাবিটা আদায় করে নিল।

গ্রেস্কাল দুর্গে বন্দী হি-ম্যান

চাবিটা পেয়েই বিজয়গৌরবে স্কেলেটর এসে হাজির হল পৃথিবীতে। হি-ম্যান ইভিল-লিনের থেকে চাবিটা উদ্ধার করে নিল। কিন্তু ততক্ষণে স্কেলেটর নিজের দলবল নিয়ে হি-ম্যানের বন্ধুদের ঘিরে ধরেছে। স্কেলেটরের জাদুতে জুলি মারাত্মক জখম হল। গোইলডোরের চাবিটাও ঘটনাচক্রে গেল নষ্ট হয়ে। বন্ধুদের বাঁচাতে হি-ম্যান আত্মসমর্পণ করল। স্কেলেটর তাকে বন্দী করে নিয়ে গেল গ্রে-স্কালে। অন্যান্য ইটারনিয়ানরা তাদের প্রযুক্তি ব্যবহার করে একটা নতুন চাবি তৈরি করতে চেষ্টা করল। কেবিন চাবির একটা বিশেষ সুর মনে রেখেছিল, সেটা আধুনিক কি-বোর্ডে বাজিয়ে তারা একটা পোর্টাল খুলে ইটারনিয়ায় গিয়ে হাজির হল।

যোদ্ধাবেশে হি-ম্যান (ওয়ালপেপার)

এদিকে ইটারনিয়ায় মহাচক্ষু খুলে গিয়েছিল। স্কেলেটর তখন রূপান্তরিত হয়েছিল এক বর্মধারী যোদ্ধা দেবতায়। সে হি-ম্যানকে নিজের পায়ের তলায় নত করাতে চাইল। কিন্তু ঠিক সেই সময় তার বন্ধুরা এসে বাধা দিল। হি-ম্যান মুক্ত হয়ে গেল। সে নিজের তলোয়ারটা মুক্ত করে স্কেলেটরের সব শক্তি শুষে নিল। স্কেলেটর আর হি-ম্যান তখন সম-শক্তিধর। দুজনের মধ্যে ঘোরতর লড়াই হল। স্কেলেটরের জাদুদণ্ড ভেঙে গেল। তাতে তার নবলব্ধ সব শক্তি নষ্ট হয়ে গেল। তবু হি-ম্যানের সঙ্গে যুদ্ধ করতে লাগল সে। শেষে হি-ম্যান তাকে হারিয়ে গভীর গর্তে ফেলে দিল।

হি-ম্যান ও স্কেলেটর (ওয়ালপেপার)

জাদুকরীকে উদ্ধার করা হল। তিনি জুলিকে সারিয়ে দিলেন। মানুষদের পৃথিবীতে ফিরে যাওয়ার জন্য একটা পোর্টাল খুলে দেওয়া হল। শুধু লুবিক ইটারনিয়ায় থেকে গেল। জুলির ঘুম ভাঙল। সে দেখল সে তার বাবা-মায়ের বিমান দুর্ঘটনায় মৃত্যুর দিনে সকালে বিছানায় শুয়ে আছে। দৌড়ে গিয়ে সে বাবা-মাকে প্লেনে উঠতে বারণ করল। তারপর কেভিনের সঙ্গে দেখা হতে সে বুঝল, সে যা দেখেছে তা স্বপ্ন নয়। কেভিন তাকে ইটারনিয়ার একটি স্মারক দেখাল—একটি ছোটো নীল স্ফটিক বল, তার উপর গ্রেস্কাল দুর্গের সামনে দাঁড়ানো হি-ম্যানের হলোগ্রাম।

ক্রেডিটের পর খাদের তলায় তরল থেকে স্কেলেটরের মাথা উঠে আসতে দেখা গেল। সে বলল “আমি আবার ফিরে আসব!”

(উইকিপিডিয়া থেকে অনূদিত)

স্ফটিকবলের উপর হি-ম্যানের হলোগ্রাম

 
2 টি মন্তব্য

Posted by চালু করুন সেপ্টেম্বর 2, 2012 in পুরনো লেখা

 

2 responses to “মাস্টার্স অফ দ্য ইউনিভার্স

  1. Indranil modak

    সেপ্টেম্বর 13, 2012 at 3:00 পুর্বাহ্ন

    পড়লাম। আমি ছোটবেলায় কার্টুনটা দেখতাম। ভালো লিখেছেন।

     
    • অর্ণব দত্ত

      সেপ্টেম্বর 13, 2012 at 6:19 পুর্বাহ্ন

      কার্টুন আমিও দেখতাম। এটা সিনেমাটা নিয়ে লেখা। ওটা সম্প্রতি দেখলাম, বেশ ভাল লাগল কিনা! 🙂

       

মন্তব্য করুন

Fill in your details below or click an icon to log in:

WordPress.com Logo

You are commenting using your WordPress.com account. Log Out /  পরিবর্তন )

Facebook photo

You are commenting using your Facebook account. Log Out /  পরিবর্তন )

Connecting to %s

 
%d bloggers like this: