RSS

শ্রীঅরবিন্দ রচিত ‘বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়’ (সটীক বঙ্গানুবাদ)/পর্ব ১

23 আগস্ট

বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়

শ্রীঅরবিন্দ

অনুবাদ ও টীকা: অর্ণব দত্ত

তাঁর বাল্যকাল ও কলেজ জীবন

বাংলা গদ্যের স্রষ্টা ও অধিপতি বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় ছিলেন এক উচ্চবর্ণীয় ব্রাহ্মণ[*] এবং নিম্নবঙ্গের[†] এক বিশিষ্ট পদাধিকারীর[‡] পুত্র। ১৮৩৮ সালের ২৭ জুন[§] কাঁটালপাড়ায়[**] তাঁর জন্ম, ১৮৯৪ সালের ৮ এপ্রিল কলকাতায় তাঁর মৃত্যুর। তাঁর কর্মময় জীবনের এই ছাপ্পান্নটি বছর ছিল বাংলার ইতিহাসের এক সুবর্ণযুগ। বাংলার অনেক মহৎ নামের মধ্যে তাঁর নামটি মহত্তম। তাঁর জীবনের তিনটি মুখ আমরা দেখতে পাই—তাঁর বিদ্যাচর্চা, তাঁর কঠোর কর্মজীবন ও তাঁর সাহিত্যিক মাহাত্ম্য। এখানে আমি এগুলির প্রত্যেকটিরই কিছু কিছু বর্ণনা দেওয়ার চেষ্টা করেছি। তাঁর বাল্যকালের প্রথম যে চিত্রটি আমরা পাই সেটি তাঁর একবার মাত্র পাঠে বর্ণমালা আয়ত্ত করার চিত্র।[††] এটি শুধুমাত্র প্রথম জীবনের একটি ছবিই নয়, এর মাধ্যমে তাঁর পরবর্তী জীবনের ভবিষদ্বাণীটিও করা হয়ে গিয়েছিল। এরই মাধ্যমে সেকালের মানুষ তাঁর মধ্যে সুসংস্কৃত বাঙালির তিনটি স্বাভাবিক গুণ দেখতে পেয়েছিল—অসীম প্রজ্ঞা, দৈহিক শীর্ণতা এবং নিজস্ব এক মননশীলতা। এবং অবশ্যই বঙ্কিম আমাদের মধ্যে শ্রেষ্ঠতমই নন, আমাদের সমধর্মী ও মহৎ চরিত্রেরও বটে। বাঙালি জাতির অধিকাংশ মহৎ চরিত্রবৈশিষ্ট্যের মূর্তপ্রতীক তিনি। তাঁর ছেলেবেলা কেটেছিল মেদিনীপুরে।[‡‡] সেই অঞ্চলে তাঁর বুদ্ধির খ্যাতি এতদূর ছড়িয়েছিল যে তাঁর নাম পরিণত হয়েছিল প্রবাদে। “তুমি শিগগিরই আরেকজন বঙ্কিম হবে”—পণ্ডিতমশাই বলবেন, এটা প্রশংসার অতিরঞ্জন। কিন্তু সাহিত্যিক সমাজে এটি শ্রেষ্ঠ পুরস্কার। বিদ্যালয়ে তিনি দ্রুত এক একটি শ্রেণি অতিক্রম করে যেতে লাগলেন; এত অস্বাভাবিক দ্রুততার সঙ্গে করতে লাগলেন যে, তাঁর শিক্ষকরাও তাঁর জন্য চিন্তিত হয়ে পড়লেন। তাঁরা ভয় পাচ্ছিলেন, এই অতিরিক্ত পঠনপাঠনে তাঁর দুর্বল শরীর না একেবারে ভেঙে পড়ে। তাই খুব সতর্কতার সঙ্গে তাঁরা তাঁর উচ্চতম শ্রেণিতে প্রবেশ আটকে রেখেছিলেন।[§§] তবে ভাগ্য সবসময়ই বঙ্কিমের অনুকূল ছিল। উচ্চশিক্ষা হল সেই অসুর যার পায়ে আমরা ভারতের শ্রেষ্ঠ সন্তানদের বলি দিয়েছি। বিদ্যালয় জীবনে বঙ্কিমের অভিভাবকের তৎপরতায় তিনি এই দানবের খপ্পরে পড়ার হাত থেকে রক্ষা পেয়েছিলেন। আবার হুগলি কলেজে[***] পড়ার সময় তাঁর নিজের পরিশ্রমবিমুখতা তাঁকে এর হাত থেকে রক্ষা করেছিল। হুগলি কলেজেও তাঁর বুদ্ধিবৃত্তির খ্যাতি মেদিনীপুরের মতোই হয়েছিল। এবং অবশ্যই তাঁর লেখাপড়ার গতিপ্রকৃতি ঠিক মানবীয় ছিল না। পুরস্কার বা স্বাতন্ত্রতার খ্যাতির লোভ তাঁর ছিল না। কিন্তু যেখানে অন্যেরা শত পরিশ্রমেও কুল পেত না, সেখানে এক অলৌকিক নিস্পৃহতার মাধ্যমে তিনি নিজের সম্মানটি জয় করে নিয়েছিলেন; যেন কতকটা দৈবঘটিতের মতো। কর্তব্যে গাফিলতি যাই থাকুক না কেন, তাঁর হঠাৎ ওঠা ইচ্ছাগুলির প্রতি তিনি খুবই মনোযোগ দিতেন। এই সময় সংস্কৃত ভাষা চর্চার প্রতি তাঁর বিশেষ আগ্রহ জাগে। এক পণ্ডিতে টোলে তিনি গভীর অধ্যবসায়ের সঙ্গে সংস্কৃত শিক্ষা করেন। এক বছরের মধ্যে তিনি মুগ্ধবোধ[†††], রঘুবংশ[‡‡‡], ভট্টি[§§§] ও মেঘদূত[****] আয়ত্ত করে ফেলেন।[††††] এইভাবে পড়াশোনা চালিয়ে মাত্র চার বছরের মধ্যে তিনি এই প্রাচীন ভাষায় ব্যুৎপত্তি অর্জন করেন এবং এই ভাষার সাহিত্য-রহস্য তাঁকে নতুন গদ্য রচনায় ভীষণভাবে অনুপ্রাণিত করে। তবে তাঁর বাংলা রচনাশৈলীতে তিনি অকারণে পণ্ডিতি ফলাতে যাননি। সত্যি বলতে কি, তিনি এবং মধুসূদন দত্ত দুজনে মিলে সংস্কৃত রীতিনীতির জগদ্দলটি ভেঙে দেন। কিন্তু দেখাই যায় যে সংস্কৃত জ্ঞানের সুন্দর ও মৌলিক ব্যবহার করে তিনি তাঁর রচনাকে কেমন সরল করে তুলেছিলেন। হুগলি কলেজে পাঁচ বছর পড়াশোনা করার পর সতেরো বছর বয়সে তিনি উক্ত কলেজ ত্যাগ করেন।[‡‡‡‡] তিনি যে খ্যাতি পিছনে ফেলে আসেন, একমাত্র দ্বারকানাথ মিত্র[§§§§] ছাড়া আর কেউ তা স্পর্শ করতে পারেনি। কিন্তু তিনি কঠোর পরিশ্রম করে প্রায় কিছুই করেননি। অধিকাংশ মহাপণ্ডিতদের মতো তাঁরও মেধানুশীলন বেশ অনিয়মিত ছিল। তাঁর বিশাল মন বিদ্যালয়ের কার্যক্রমের বাঁধা গতে ধরা দিতে রাজি ছিল না। তিনি তা প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। প্রত্যেক মুক্তমনা মানুষের মতো তিনিও চাননি যে বিদ্যালয়ের বাঁধা রুটিনে পড়ে তাঁর মনের প্রাকৃতিক গুণগুলি বিনষ্ট হয়ে যাক। যত সময় যেতে লাগল, তাঁর মধ্যে একটি অভ্যাস গড়ে উঠতে লাগল—তিনি কলেজ লাইব্রেরির কোণে বসে নানা ধরনের বই পড়ে জ্ঞান পিপাসা মেটাতে লাগলেন। পরীক্ষার ঠিক মুখে তিনি পাঠক্রমের বই নিয়ে বসতেন। দ্রুত সেগুলি শেষ করে কয়েকটি পুরস্কার জয় করে নিয়ে আবার পুরানো পদ্মভুকবৃত্তি ধরতেন। আমি মনে করি, এই অভ্যাস বিশ্বের সর্বদেশের মেধাবী যুবসম্প্রদায়ের মধ্যেই দেখা যায়। এই অভ্যাস তাদের অতি-অনুশাসনের নির্বীর্যকারী প্রভাব থেকে রক্ষা করে। কিন্তু মন্থর মনের মানুষদের ক্ষেত্রে এই অভ্যাস নিরাপদ নয়। তাঁর পরবর্তী বিদ্যাচর্চাস্থল প্রেসিডেন্সি কলেজে তিনি আইন পড়াশোনার মাধ্যমে তাঁর বহুমুখী মনের পুষ্টিসাধন করতে গিয়েছিলেন। তিনি হাইকোর্টের উকিল হওয়ার বাসনা রাখতেন সেই সময়। কিন্তু সাহিত্য-ইতিহাসের একেবারে সঠিক ক্ষণে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হল।[*****] বঙ্কিম আইনবিদ্যায় সাম্মানিক না নিয়ে নিলেন সাহিত্যে।[†††††] আদালত হারালো একজন বিশিষ্ট উকিলকে। ভারত পেল এক মহান মানুষকে। তবে সম্ভবত আইনের প্রতি বঙ্কিমের একটু টান ছিল। পরে তিনি তাঁর অফিসের হাড়ভাঙা খাটুনি আর সাহিত্যজীবনের মাঝেও একটু সময় বের করে কঠোর পরিশ্রম করে একজন বিশিষ্ট বি. এল. হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করেন।[‡‡‡‡‡] তবে বিদ্যাক্ষেত্রে তাঁর প্রথম পরিচয় হল তিনি এবং যদুনাথ বসু হলেন আমাদের দেশের প্রথম বি.এ.।[§§§§§] এই পরিচয়েও তিনি দেশের মানুষের পথপ্রদর্শক হয়েছেন। ডিগ্রি অর্জনের প্রায় সঙ্গে সঙ্গে তিনি সরকারি চাকুরি গ্রহণ করেন। কুড়ি বছর বয়সে তিনি যশোরের ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট নিযুক্ত হন।[******]

যত সম্ভব সংক্ষেপে আমি বঙ্কিমের শিক্ষাজীবনের ছবি আঁকার চেষ্টা করলাম। যেকোনো বিশিষ্ট হিন্দুর জীবনীতেই এই রকম একটা সাধারণ বর্ণনা থাকা প্রয়োজন। কারণ, শিক্ষিত লোকেদের জীবনীপুস্তকের অর্ধেকটাই ভরিয়ে দেয় পরীক্ষা আর ডিগ্রির বর্ণনা। কিন্তু মননের ইতিহাসে পরীক্ষা আর ডিগ্রি একটি অপ্রধান পর্ব। জনৈক ইউরোপীয় লেখক ঠিকই লিখেছেন যে, প্রকৃত জ্ঞান কখনও শেখানো যায় না। ড. ভান্ডারকর কার্লাইল পাঠ করে একই কথা বলেছিলেন। মানুষ জীবন ও সাহিত্যে যা পর্যবেক্ষণ করে, তারই ভিত্তিতে তার জীবনের রূপরেখাটি আঁকা হয়; সে যা শেখে তার ভিত্তিতে নয়। যে মাহেন্দ্রক্ষণে সে নিজের পথ বেছে নেয়, সেই সময়ে সামাজিক আবহাওয়া তার জীবনটিকে মূর্তিপ্রদান করে। নবজাগরিত সংস্কৃতির স্পর্শ ছাড়া বাকি সবই মৃত উপাদান। পরীক্ষা আর ডিগ্রি যদি বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের কঙ্কাল হয়, তবে এ হল তার আত্মা ও জীবনীশক্তিরূপী রক্ত। এগুলি একেবারে না থাকলে বা এর অল্পতা ঘটলে দু-একজন স্বশিক্ষিত বিদ্বান ব্যক্তি ছাড়া, আর সকলের ক্ষেত্রেই শিক্ষা হল হাওয়া আর ধুলোর সমতুল। কী ধরনের মানুষের মধ্যে ছাত্র বঙ্কিম বাস করেছিলেন? কি ধরনের সামাজিক পরিমণ্ডল থেকে তাঁর কৈশোরকালের ব্যক্তিত্ব গড়ে উঠেছিল? তিনি কোন পরীক্ষা দিয়ে কোন ডিগ্রিটি নিয়েছিলেন, তার থেকেও বড়ো প্রশ্ন এইগুলি। এগুলির উত্তরও একটু বড়ো করে দেবো।

(ক্রমশ)

 

© অর্ণব দত্ত

অনুবাদস্বত্ব-সংরক্ষিত। অনুবাদকের অনুমতি ছাড়া অন্যত্র প্রকাশ আইনত নিষিদ্ধ।


[*] বঙ্কিমচন্দ্রের পূর্বপুরুষরা ছিলেন ফুলিয়ার কুলীন ব্রাহ্মণবংশীয়।

[†] চট্টোপাধ্যায়-বংশের আদি নিবাস অধুনা পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলার অন্তর্গত দেশমুখো গ্রাম। এটি কোন্নগরের কাছে।

[‡] বঙ্কিমচন্দ্রের পিতা যাদবচন্দ্র ৪২ বছর সরকারি চাকরি করেছিলেন। তিনি পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় খাজাঞ্চি ও ডেপুটি কালেক্টরের পদে আসীন ছিলেন।

[§] মতান্তরে ২৬ জুন। দ্রঃ বঙ্কিমচন্দ্রজীবনী, অমিত্রসূদন ভট্টাচার্য, আনন্দ পাবলিশার্স, ১৯৯১, কলকাতা, পৃ. ২৪।

[**] অধুনা পশ্চিমবঙ্গের উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার অন্তর্গত ব্যারাকপুর মহকুমার অন্তর্গত।

[††] বঙ্কিমচন্দ্রের ছোটো ভাই পূর্ণচন্দ্র ‘বঙ্কিমচন্দ্রের বাল্যশিক্ষা’ প্রবন্ধে লিখেছেন, “শুনিয়াছি, বঙ্কিমচন্দ্র একদিনে বাংলা বর্ণমালা আয়ত্ত করিয়াছিলেন।”

[‡‡] বঙ্কিমচন্দ্রের পিতা যাদবচন্দ্র সেই সময় মেদিনীপুরের ডেপুটি কালেক্টর ছিলেন। ১৮৪৪ সালে ছয় বছর বয়সে বঙ্কিম সেখানকার একটি ইংরেজি স্কুলে ভর্তি হন। তিন-চার বছর পর কাঁটালপাড়ায় ফিরে আসেন।

[§§] এর মধ্যে এক বছর ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর বঙ্কিমচন্দ্রের পরীক্ষক ছিলেন। বঙ্কিম তখন দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র। মজার বিষয়, হুগলি কলেজের অধ্যক্ষ সেই পরীক্ষার প্রেক্ষিতে বিদ্যাসাগরের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনেন যে, বাংলায় সংস্কৃত শব্দ বেশি ব্যবহার না করার জন্য তিনি ছাত্রদের কম নম্বর দিয়েছেন। কম নম্বর পাওয়া ছাত্রদের তালিকাতে বঙ্কিমের নামও পাওয়া যায়।

[***] ১৮৪৯ সালে এগারো বছর বয়সে বঙ্কিমচন্দ্র হুগলি কলেজের বিদ্যালয় বিভাগে ভর্তি হন।

[†††] বোপদেব প্রণীত সংস্কৃত ব্যাকরণ গ্রন্থ। খ্রিস্টীয় ত্রয়োদশ শতাব্দীতে রচিত। বাংলার সংস্কৃত শিক্ষার্থীদের মধ্যে এই বইটি বিশেষ জনপ্রিয় ছিল।

[‡‡‡] কালিদাস রচিত ১৯ সর্গের মহাকাব্য। তাঁর অন্যতম শ্রেষ্ঠ রচনা। রামায়ণ ও পুরাণে কথিত রামচন্দ্র ও তাঁর পূর্বপুরুষদের কীর্তিকাহিনি অবলম্বনে রচিত।

[§§§] সংস্কৃত কবি ভট্টি বা ভর্তৃহরি রচিত ভট্টিকাব্য।

[****] কালিদাসের সর্বাপেক্ষা জনপ্রিয় কাব্য।

[††††] হরপ্রসাদ শাস্ত্রী ও পূর্ণচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের লেখা থেকে জানা যায়, কলেজের পড়া সমাপ্ত করে বঙ্কিমচন্দ্র ভাটপাড়ার শ্রীরাম শিরোমণির টোলে সংস্কৃত অধ্যয়ন করেছিলেন। হরপ্রসাদের মতে, বঙ্কিম কুমারসম্ভব ও শকুন্তলাও পড়েছিলেন।

[‡‡‡‡] ১৮৫৬ সালে বঙ্কিমচন্দ্র আইন পড়ার উদ্দেশ্যে কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজে ট্রান্সফার হয়ে আসেন।

[§§§§] হুগলি কলেজে পড়ার সময় ছাত্রদের মধ্যে কবিতায় বিবাদ হত। বঙ্কিমের ভাষায় এটি ছিল “কালেজীয় কবিতাযুদ্ধ”। এই যুদ্ধে বঙ্কিম ও দ্বারকানাথ ছিলেন প্রতিপক্ষ।

[*****] ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয় এবং সেই বছরই প্রথম প্রবেশিকা বা এন্ট্রান্স পরীক্ষা চালু হয়। বঙ্কিমচন্দ্র প্রেসিডেন্সির আইন বিভাগ থেকে এই পরীক্ষা দিয়ে প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হন।

[†††††] ১৮৫৮ সালে প্রেসিডেন্সি কলেজে আইন পড়তে পড়তেই বঙ্কিম কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে বি.এ. পরীক্ষা দেন। সেই সময় এই পরীক্ষায় ছয়টি বিষয়ে পরীক্ষা দিতে হত। ইংরেজি সাহিত্য অবশ্যপাঠ্য ছিল। এছাড়া বঙ্কিম বাংলা সাহিত্যের পরীক্ষাও দিয়েছিলেন। ইংরেজিতে তাঁর পাঠ্য ছিল শেকসপিয়রের ম্যাকবেথ, ড্রাইডেনের সাইমন অ্যান্ড ইফিজেনিয়া, অ্যাডিসনের এসেজ ইত্যাদি এবং বাংলায় পাঠ্য ছিল মহাভারতের প্রথম তিন পর্ব, বত্রিশ সিংহাসন ও পুরুষ পরীক্ষা।

[‡‡‡‡‡] ১৮৬৯ সালে আলিপুরে ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট ও ডেপুটি কালেক্টারের পদে থাকার সময় বঙ্কিমচন্দ্র প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে বি. এল. পরীক্ষা দেন। এই পরীক্ষায় তিনি প্রথম বিভাগের তৃতীয় স্থান অধিকার করেছিলেন।

[§§§§§] ১৮৫৮ সালে বঙ্কিমচন্দ্র ও যদুনাথ বসু কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বি. এ. পরীক্ষায় দ্বিতীয় বিভাগে উত্তীর্ণ হন। বঙ্কিম প্রথম স্থান অধিকার করেছিলেন। তিনিই প্রথম ভারতীয় বি. এ.।

[******] ১৮৫৮ খ্রিস্টাব্দে লেফটেন্যান্ট গভর্নরের আদেশক্রমে বঙ্কিমচন্দ্র যশোর জেলার ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট ও ডেপুটি কালেক্টর নিযুক্ত হয়েছিলেন।

 

মন্তব্য করুন

Fill in your details below or click an icon to log in:

WordPress.com Logo

You are commenting using your WordPress.com account. Log Out /  পরিবর্তন )

Facebook photo

You are commenting using your Facebook account. Log Out /  পরিবর্তন )

Connecting to %s

 
%d bloggers like this: