
মহাত্মা গান্ধী ও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
সম্প্রতি গুজরাত সাহিত্য পরিষদ আয়োজিত রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর উৎসবের দ্বিতীয় দিনে একটি আশ্চর্য তথ্য উঠে এল। রবীন্দ্রনাথের মেজদাদা সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুরের কবিসত্ত্বাকে রবীন্দ্রনাথেরও আগে চিনেছিলেন গুজরাত ও আমেদাবাদবাসী। বিশিষ্ট গুজরাতি কবি, প্রাবন্ধিক ও ঔপন্যাসিক প্রফুল্ল রাভাল এই দিন বলেন, “সত্যেন্দ্রনাথ ছিলেন আমেদাবাদে জেলা জজ। রবীন্দ্রনাথ মাঝে মাঝে তাঁর কাছে এসে থাকতেন। তবে স্থানীয় মাসিক পত্রিকা বসন্ত-এর সুবাদে সত্যেন্দ্রনাথের কবিতা রবীন্দ্রনাথের আগেই পড়ার সুযোগ পান আমেদাবাদবাসী।”
বসন্ত পত্রিকাটি চালাতেন আনন্দ শঙ্কর ধ্রুব। পত্রিকার প্রথম বর্ষের প্রথম সংখ্যায় প্রথম পৃষ্ঠাতেই ছিল সত্যেন্দ্রনাথের কবিতা। গুজরাতি ভাষায় তাঁর কবিতা অনুবাদ করেছিলেন কৃষ্ণ রাও ভোলানাথ। বসন্ত পত্রিকার একটি সংগ্রহ গুজরাত সাহিত্য পরিষদের গ্রন্থাগারে এখনও রাখা আছে এবং পাঠক তা পড়ারও সুযোগ পান।
রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে গুজরাতের সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা করতে গিয়ে রাভাল বলেন, “১৯১৮ সালে রবীন্দ্রনাথের ডাকঘর নাটকটি গুজরাতিতে অনূদিত হয়। এটিই ছিল গুজরাতিতে অনূদিত প্রথম রবীন্দ্র-নাটক। পরের বছর ধ্রুব রবীন্দ্রনাথের মুকুট নাটকটিও অনুবাদ করেন।”
১৯১৩ সালে নোবেল-প্রাপ্তি রবীন্দ্রনাথকে এনে দিয়েছিল বিশ্বজোড়া খ্যাতি। তবে গুজরাতবাসী রবীন্দ্রনাথকে মনে রেখেছেন অন্য একটি বিশেষ কারণে। সেটি হল ১৯১৫ সালে মহাত্মা গান্ধীর সঙ্গে রবীন্দ্রনাথের গভীর বন্ধুত্বের সম্পর্ক। রাভালের কথা থেকেই জানা যায়, ১৯১৫ থেকে ১৯৩০ পর্যন্ত সময়কালে গুজরাতের বহু যুবক শান্তিনিকেতনে গিয়ে কলা ও সাহিত্যের পাঠ নিয়েছিলেন। তাঁদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন প্রহ্লাদ পারেখ ও কৃষ্ণলাল সাধ্বানি। পারেখ কবিতা রচনায় দক্ষতা অর্জন করেন এবং সাধ্বানি কবিতা, ছোটোগল্প রচনা ও চিত্রকলা শিক্ষা করেন।
সূত্র: ডেইলি নিউজ অ্যান্ড অ্যানালাইসিস পত্রিকা, ৪ মে, ২০১২