ভয় হতে অভয়মাঝে
অর্থের জন্য লালায়িত হয়ো না। তোমাদের যা আছে, তাই নিয়ে সন্তুষ্ট থাকো। কারণ ঈশ্বর বলেছেন, আমি কখনও তোমাকে পরিত্যাগ করব না বা তোমাকে অসহায় অবস্থায় ফেলব না। তাই সাহস অবলম্বন করে বলো, প্রভু আমার সহায়, তাই লোকে আমার কি করবে না করবে, সে ভয় আমার নেই! (হিব্রু, ১৩।৫-৬)
ভাই সব, তোমরা প্রভু পরমেশ্বরের বলে বলীয়ান হও। তাঁর পরাক্রমেই পরাক্রান্ত হও। ঈশ্বর-বর্ম পরে যুদ্ধে নামো, তবেই শয়তানের সব ছলচাতুরীর বিরুদ্ধে জয়ী হতে পারবে। তোমাদের সংগ্রাম তো রক্তমাংসের বিরুদ্ধে নয়, তোমাদের সংগ্রাম শাসননীতির বিরুদ্ধে, কর্তৃত্বশক্তির বিরুদ্ধে, শাসকের বিরুদ্ধে, জগতের অন্ধকারের বিরুদ্ধে, অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে। তাই ঈশ্বর-বর্ম পরো। তাহলেই দুর্দিনে পায়ের তলায় মাটি পাবে, এবং সব কর্তব্য সেরেও অটল থাকতে পারবে। প্রতিরোধের জন্য দৃঢ় হয়ে দাঁড়াও। সত্য হোক তোমার কটিবন্ধ, ধার্মিকতা হোক তোমার বক্ষস্ত্রাণ। তোমার পদযুগল শান্তির সুসমাচার প্রচারের যাত্রায় সদা উদ্যোগী থাকুক। বিশ্বাসকে সর্বদা ঢাল করে রেখো, তার সাহায্যে অশুভ শক্তির অগ্নিবাণ প্রতিহত করতে পারবে। মাথায় পরো মুক্তির শিরোস্ত্রাণ, হাতে নাও পবিত্র আত্মার তরবারি ঈশ্বরের বাক্য। ভক্তদের জন্য সকল অবস্থাতেই পবিত্র আত্মার সাহায্যে প্রার্থনা কর। সদা সজাগ থাকো। (ইফিসীয়, ৬।১০-১৮)
বিধ্বস্ত সময়ে শান্তি
হে প্রভু পরমেশ্বর, যারা তোমার প্রতি ঐকান্তিক ভক্তিতে অবিচল, যারা তোমার প্রতি আস্থা স্থাপন করেছে, তাদের তুমি পরিপূর্ণ শান্তি দাও।
পরমেশ্বরের উপরই চিরদিন আস্থা রেখো, তিনিই তোমাদের সর্বদা রক্ষা করবেন। (যিশাইয় ২৬।৩-৪)
কোনো বিষয়ে উদ্বিগ্ন হয়ো না, বরং সকল বিষয়ে ধন্যবাদ দাও, প্রার্থনা করো ও সকল মনোবাসনা বিনীতভাবে ঈশ্বরের কাছে নিবেদন করো। মানববুদ্ধির অগম্য ঈশ্বরের করুণা তোমাদের হৃদয় ও মনকে খ্রিস্ট যিশুতে স্থির করুক। (ফিলিপীয়। ৪।৬-৭)
উদ্বেগের নিরসন
হে শ্রান্ত, হে ক্লান্ত, আমার কাছে এসো, আমি তোমাদের বিশ্রামের স্থান দেবো। আমার জোয়াল কাঁধে তুলে নাও। আমি শান্ত ও নম্র, তাই আমার কাছেই শিক্ষা গ্রহণ করো। তাহলেই তোমরা স্বস্তি পাবে। (মথি ১১।২৮-২৯)
প্রভু আমার রাখাল, আমার কোনো অভাব নেই।
তিনি আমাকে শ্যামল প্রান্তরে লালন করেন, আমাকে শান্ত জলাশয়ের পথটি দেখিয়ে দেন।
তিনি আমার আত্মাকে রক্ষা করেন। আমাকে তাঁর নামে চালনা করেন সত্যের পথে।
হ্যাঁ, মৃত্যুছায়ার উপত্যকা পেরিয়ে যাব আমি, ভয় করব না অমঙ্গলকে। কারণ তুমি আছ আমার সঙ্গে। তোমার দণ্ড আর তোমার যষ্ঠি আমায় সাহস জোগাক।
আমার শত্রুর সামনে তুমি আমার জন্য মহোৎসবের আয়োজন করো, আমাকে অভিষিক্ত করো তৈলে, পূর্ণ করে দাও আমার পানপাত্র।
তোমার দাক্ষিণ্য তোমার করুণা আমায় ঘিরে থাকে সারাজীবন, চিরকাল আমি বাস করি প্রভুর ভবনে। (গীতসংহিতা ২৩)
অবাধ্যতায় সতর্কীকরণ
মানুষের স্বভাব সবাই জানে – ব্যভিচার, অশুচিতা, উচ্ছৃঙ্খলতা, পৌত্তলিকতা, বশীকরণ, শত্রুভাব, দ্বন্দ্ব, ঈর্ষা, ক্রোধ, স্বার্থপরতা, মতভেদ, দলাদলি, হিংসা, মাদকাসক্তি এবং এই ধরনের আরও নানাবিধ পাপ, যেগুলির কথা তোমাদের আগেও বলেছি, এখনও বলছি; এগুলি থাকলে ঐশরাজ্যের অধিকার পাওয়া যায় না। (গালাতীয় ৫।১৯-২১)
সত্যজ্ঞান লাভ করার পর আমরা যখন ইচ্ছাকৃতভাবে পাপকাজে লিপ্ত হই, তাহলে কোনো বলিদানের মাধ্যমেই সেই পাপ থেকে মুক্তিলাভ করা যায় না। শুধু থাকে বিচারদিনের প্রতীক্ষা; ঈশ্বরদ্রোহীকে গ্রাসের অপেক্ষায় থাকে লেলিহান অগ্নিশিখা। মোজেসের বিধান লঙ্ঘন করলে দুই বা তিন জন সাক্ষীর কথাতেই তাকে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করা যায়। তাহলে ঈশ্বরপুত্রকে যে পায়ে দলে তার কী দশা হবে? যাঁর রক্তের মূল্যে ঈশ্বরের সঙ্গে তার সম্পর্ক স্থাপিত হয়েছে, যাঁর দ্বারা সে পবিত্রীকৃত হয়েছে, সেই রক্তকে যে তুচ্ছ করেছে বা ঈশ্বরানুগ্রহপ্রদায়ী আত্মাকে যে অগ্রাহ্য করেছে, তার শাস্তি কতই না কঠোরতর হতে পারে। আমরা জানি, তিনি বলেন, প্রতিশোধ নেওয়ার অধিকার আমার আছে, আমিই প্রতিফল দেবো। তিনি আরও বলেছেন যে, প্রভুই তাঁর প্রজাদের বিচার করবেন। জাগ্রত ঈশ্বরের বিচারের সম্মুখীন হওয়া অতীব ভয়াবহ। (হিব্রু ১০।২৬-৩১)
ক্ষমা
প্রভু পরমেশ্বর বললেন, এসো, আমরা বিষয়টি আলোচনা করে নিষ্পত্তি করি। পাপের কলঙ্কে তোমরা লাল। কিন্তু আমি তোমাদের ধুয়ে তুষারের ন্যায় শুভ্র করে তুলব। তোমাদের পাপ ঘোর রক্তবর্ণ হলেও, তোমরা হয়ে উঠবে পশমের ন্যায় সাদা। শুধুমাত্র আমার বাধ্য হলেই তোমরা দেশের শ্রেষ্ঠ ফসলটি ভোগ করতে পারবে। (ইশাইয়া, ১।১৮-১৯)
তিনি যেমন আলোর মাঝে বিরাজ করেন, আমরাও যদি তেমন আলোর পথে চলি, যদি পরস্পর বন্ধুভাবে থাকি, তবে ঈশ্বরপুত্র যিশু খ্রিস্টের রক্ত আমাদের সব পাপ ধুইয়ে দেবে। যদি বলি, আমরা নিষ্পাপ, তবে আত্মপ্রবঞ্চনা করি, অসত্য বলি। যদি পাপকে স্বীকার করে নিই, তবে পরমাশ্রয় তিনি, আমাদের সব পাপ ক্ষমা করে, আমাদের সব অশুচিতা ধুয়ে দেন। (প্রেরিত জন, ১।৭-৯)