RSS

স্কন্দমাতা

30 সেপ্টে.

দেবী স্কন্দমাতা

 

সতর্কীকরণ: এই লেখা ও ছবির যাবতীয় স্বত্ব লেখক কর্তৃক সংরক্ষিত। লেখকের বিনা অনুমতিতে এই লেখা বা ছবি যে কোনো উপায়ে অন্যত্র প্রকাশ বেআইনি। 

সিংহাসনগতা নিত্যং পদ্মাশ্রিতকরদ্বয়া।

শুভদাস্তু সদা দেবী স্কন্দমাতা যশস্বিনী।।

নবদুর্গার পঞ্চম রূপ স্কন্দমাতা। নবরাত্রি উৎসবের পঞ্চম দিনে তাঁর পূজা করা হয়। দেবসেনাপতি কার্তিকের অপর নাম স্কন্দ। দেবী দুর্গা কার্তিকের মা। তাই তিনি পরিচিতা ‘স্কন্দমাতা’ নামে।

কার্তিক-জননী বেশে দুর্গার রূপটি একটু আলাদা। এই রূপে তিনি চতুর্ভুজা; উপরের দুই হাতে দুটি পদ্মফুল; নিচের এক হাতে ধরে থাকেন স্কন্দ অর্থাৎ কার্তিককে, অপর হাতে দেখান বরমুদ্রা। দেবী পদ্মাসনা, তবে দেবীর বাহন সিংহ। দেবীর কোলে স্কন্দের যে মূর্তিটি দেখা যায়, সেটি আমাদের বাংলায় সচরাচর দেখা কার্তিক মূর্তির চেয়ে একটু আলাদা। ইনি হাতে তীর-ধনুক থাকে বটে, কিন্তু এঁর ছয়টি মস্তক। ষড়ানন কার্তিকের এই শিশুমূর্তিটিই শোভা পায় দেবী স্কন্দমাতার কোলে।

দেবী স্কন্দমাতার কথা জানা যায় স্কন্দ পুরাণ থেকে। অসুররাজ তারক বরলাভ করেছিল, কেবল শিব ও দুর্গার পুত্রই তার প্রাণবধে সক্ষম হবে। তাই দেবতার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে সে সহজেই দেবতাদের কাছ থেকে স্বর্গরাজ্য কেড়ে নিতে পেরেছিল। এই ঘটনার ঠিক আগেই সতী দেহত্যাগ করেছিলেন, শিবও হয়েছিলেন ধ্যানমগ্ন। তাই দেবতারা দুর্গাকে পুনরায় জন্মগ্রহণ করার অনুরোধ করলেন। দুর্গা শৈলপুত্রী রূপে গিরিরাজ হিমালয়ের গৃহে জন্ম নিলেন। তারপর ব্রহ্মচারিণী রূপে শিবকে পতিরূপে পাওয়ার জন্য করলেন কঠোর তপস্যা। শেষে শিবের সঙ্গে তাঁর বিবাহ হল। তারপর যথাসময়ে জন্ম হল শিব ও দুর্গার পুত্র কার্তিকের। কার্তিকের জন্মের বিবরণ নানা পুরাণে নানাভাবে বর্ণিত হয়েছে। সে সবের উল্লেখ এখানে না করলেও চলবে–শুধু এটুকু বলে রাখি, কার্তিকের ছিল ছয়টি মাথা। তাই তিনি পরিচিত হয়েছিলেন ষড়ানন নামে। এই ষড়ানন স্কন্দই তারককে যুদ্ধে পরাজিত করে দেবতাদের স্বর্গরাজ্য ফিরিয়ে দিয়েছিলেন। স্কন্দ ও স্কন্দমাতা উভয়েই তারকাসুর বধে দেবতাদের সাহায্য করেছিলেন বলে, মাতাপুত্রের পূজা একসঙ্গে করাই নিয়ম।

দেবী স্কন্দমাতার পূজা করলে ভক্তের সকল মনোবাঞ্ছা পূর্ণ হয়; তাঁর জীবন সুখ ও শান্তিময় হয়ে ওঠে এবং তাঁর মোক্ষের পথ সহজতর হয়। এছাড়া স্কন্দমাতার পূজা করলে, সেই সঙ্গে কার্তিকের পূজাও হয়ে যায়।

কাশীর নাগকুরার কাছে দেবী স্কন্দমাতা ও বাগেশ্বরীর মন্দির অবস্থিত। মন্দিরটি দোতলা, গর্ভমন্দিরটি ছোটো। সেখানে প্রমাণ আকারের স্কন্দমাতার মূর্তিটি প্রতিষ্ঠিত। বাগেশ্বরী সরস্বতীর মন্দিরটি স্কন্দমাতার মন্দিরের ঠিক পাশেই অবস্থিত। শারদীয়া ও বাসন্তী নবরাত্রি উৎসবের পঞ্চমীর দিন এই মন্দিরে প্রচুর জনসমাগম হয়।

(সঙ্গের ছবিটি ২০১০ সালে তোলা দক্ষিণ কলকাতার সংঘশ্রী ক্লাবের দুর্গাপূজা মণ্ডপে পূজিতা স্কন্দমাতার মৃন্ময়ী প্রতিমার। আলোকচিত্রী: অর্ণব দত্ত।)

 

ট্যাগ সমুহঃ

মন্তব্য করুন

Fill in your details below or click an icon to log in:

WordPress.com Logo

You are commenting using your WordPress.com account. Log Out /  পরিবর্তন )

Facebook photo

You are commenting using your Facebook account. Log Out /  পরিবর্তন )

Connecting to %s

 
%d bloggers like this: