RSS

ভগবতী-গীতা :: ২য় ও ৩য় অধ্যায়

13 সেপ্টে.

দ্বিতীয় অধ্যায়-

হিমালয় বললেন,

মা মাহেশ্বরী, যে বিদ্যা মুক্তির পথ দেখায়, সেই বিদ্যা কি? তার স্বরূপই বা কি? আমাকে তা বলো।।১।।

পার্বতী বললেন,

বাবা, সংসার-নিবারণকারী বিদ্যার স্বরূপ সংক্ষেপে তোমার কাছে বর্ণনা করছি, শোনো।।২।।

চিৎস্বরূপ অদ্বিতীয় আত্মাকে শুদ্ধ বলে জানবে। তাকে প্রাণ, মন, অহংকার ও ইন্দ্রিয়গণ থেকে সম্পূর্ণ পৃথক বলে জানবে। আমিই সেই আত্মা।।৩।।

আত্মাকে আদি, নিরাময়, জন্ম ও মৃত্যু রহিত এবং বুদ্ধি প্রভৃতি উপাধিবর্জিত শুদ্ধ চিদানন্দরূপে জানবে।।৪।।

আত্মা নিরাকার প্রভাবিশিষ্ট, পূর্ণ, শুদ্ধজ্ঞান ইত্যাদির লক্ষণযুক্ত, এক এবং অদ্বিতীয়। অথচ দেহে প্রবেশ করে তা ভিন্ন ভিন্ন জীব রূপে প্রতীয়মান হয়।।৫।।

হে গিরিরাজ, আত্মা এই দেহে থেকে দেহকে প্রকাশ করে স্বয়ং প্রকাশিত হচ্ছেন। এই আত্মার স্বরূপ আমি তোমাকে বললাম।।৬।।

মন স্থির করে এইভাবে নিত্য আত্মাকে চিন্তা করবে। শরীরাদি স্থূল ও ক্ষণভঙ্গুর পদার্থকে আত্মা মনে করবে না।।৭।।

দেহকে আত্মা মনে করলে রাগ, দ্বেষ ইত্যাদি দোষ উৎপন্ন হয়। এই সব দোষ থেকেই সদোষ কর্মের জন্ম। কর্ম থেকে স্মৃতি ও স্মৃতি থেকেই বারবার জন্মলাভ হয়। কর্মফলভোগের জন্য এই স্মৃতি দেহ ইত্যাদিতে আত্মবুদ্ধি উৎপাদন করে। সুতরাং দেহবুদ্ধি ত্যাগ করবে।।৮।।

হিমালয় বললেন,

হে শিবা, পরজন্মে অশুভ ও অদৃষ্টের জন্মদাতা এই রাগ ও দ্বেষ লোকে কিভাবে ত্যাগ করবে, তা আমাকে বলুন।।৯।।

রাগদ্বেষ বহু অপকার করে। তা সত্ত্বেও লোকে কেন রাগদ্বেষকে শরীরে উৎপন্ন হতে দেয়? কেন রাগদ্বেষের উপরেই লোকের রাগদ্বেষ জন্মায় না?।।১০।।

পার্বতী বললেন,

কেউ অপকার করলে, তার সম্পর্কে তক্ষুনি বিচার করবে। ধীরভাবে বিচার করলে আর অপরাধীর প্রতি দ্বেষ জন্মাবে না।।১১।।

দেহ পঞ্চভূতময়। কিন্তু তার মধ্যে জীব মুক্ত, অর্থাৎ, দেহ থেকে নির্লিপ্ত। এই পঞ্চভূতময় শরীর আগুনে পুড়লে বা শিয়াল-কুকুরে খেলে জীবের কোনো অনিষ্ট হয় না।।১২।।

শুদ্ধ ও স্বয়ং সচ্চিদানন্দের বিগ্রহ আত্মার জন্ম বা নাশ নেই, তিনি নির্লিপ্ত, তিনি একটুও দুঃখভোগ করেননা। দেহকে ধ্বংস করলেও তার অনিষ্ট হয় না।।১৩।।

হে গিরিরাজ, যেমন ঘর পুড়লেও, ঘরের মধ্যস্থ শূন্যস্থানের কোনো ক্ষতি হয়না, তেমনি দেহ নষ্ট হলেও আত্মার ক্ষতি হয় না।।১৪।।

দুঃখের বিষয়, অজ্ঞান লোকে কেউ এই আত্মাকে হত্যাকারী কেউবা নিহত মনে করে। তারা সবাই ভ্রান্ত। আত্মা কাউকে মারেন না। কেউই তাঁর হাতে নিহত হন না। এই কথা জেনে জীব দ্বেষ ত্যাগ করবে।।১৫।।

দ্বেষ থেকেই মনস্তাপ জন্মায়। দ্বেষ সংসারবন্ধনের কারণ। আবার দ্বেষই মোক্ষলাভের পথে বিঘ্নও ঘটায়। সুতরাং সযত্নে দ্বেষ পরিহার করবে।।১৬।।

হিমালয় বললেন,

হে দেবী, কর্মফল থেকে উৎপন্ন দেহ বা আত্মা, কারোরই অপকার হতে পারে না। সুতরাং তাঁরা দুঃখভোগও করেন না। কিন্তু দেহে যে সাক্ষাৎসম্বন্ধে দুঃখভোগ হয়, তা কিভাবে উৎপন্ন হয় এবং কেই বা ভোগ করে?।।১৭।।

হে পরমেশ্বরী, যদি আমাকে অনুগ্রহ করো, তাহলে দেহে আর কে দুঃখভোগকারী আছেন তা আমাকে প্রকৃতিতত্ত্বের সঙ্গে বলো।।১৮।।

পার্বতী বললেন,

দেহ, আত্মা বা পরমাত্মার দুঃখমাত্র নেই। কিন্তু জীব নিজে নির্লিপ্ত হলেও আমার মায়াবশে মুগ্ধ হয়ে ‘আমি নিজে দুঃখী’ বা ‘আমি নিজে সুখী’ এইরকম অনুভব করে।।১৯।।

বাবা, ভুবনমোহিনী মায়াই অনাদি অবিদ্যা। জীব জন্মালেই অবিদ্যার সঙ্গে তার সম্বন্ধ ঘটে এবং তা থেকেই রাগদ্বেষ ইত্যাদিতে পরিপূর্ণ সংসারের উৎপন্ন হয়।।২০।।

আত্মা প্রথমে লিঙ্গস্বরূপ মনকে গ্রহণ করে। পরে আলাদাভাবে তার নিজের তৈরি কামনা উপভোগ করতে করতে বারবার সংসারে পরিভ্রমণ করে।।২১।।

বিশুদ্ধ স্ফটিক লাল ফুলের কাছে থাকলে সেই রং ধারণ করে; কিন্তু সেই রং তাতে মিশতে পারে না। আত্মাও তেমনি বুদ্ধি ও ইন্দ্রিয়াদির সংস্পর্শে এসে সুখী বা দুঃখীরূপে প্রতীয়মান হয়।।২২।।

বাবা, মন, বুদ্ধি ও অহংকার জীবের সহকারী। তারাই স্বকর্মের ফলাফল ভোগ করে।।২৩।।

বাবা, বিষয়-বুদ্ধি যে সুখ বা দুঃখের জন্ম দেয়, তা জীবই ভোগ করে। আত্মা প্রভুরূপী। সে নির্লিপ্ত ও অব্যয়। সে কিছুই ভোগ করে না।।২৪।।

জীব সৃষ্টিকালে পূর্বজন্মের বাসনা ও মানসিক কর্মের সঙ্গে যুক্ত হয়ে আবার সৃষ্টি হয় এবং সৃষ্টি থেকে লয় পর্যন্ত এইভাবে পরিভ্রমণ করে।।২৫।।

হে নৃপতি, সেই জন্য জ্ঞানের সহিত বিচার করে মোহ ত্যাগ করে নিজের ইষ্ট ও অনিষ্ট বুঝে সুখী হবে।।২৬।।

দেহ থেকে মনস্তাপ জন্মে, দেহ জীবকে সংসারে বদ্ধ করে। এই দেহ কর্ম থেকে উৎপন্ন হয়। কর্ম পাপ ও পুণ্য অনুসারে দুই প্রকার।।২৭।।

হে রাজেন্দ্র, কর্ম দুইপ্রকার – পাপকর্ম ও পুণ্যকর্ম। এই দুই কর্মের অংশ অনুসারে দেহধারীর দুঃখ ও সুখ জন্মে। দিন ও রাত যেমন অলঙ্ঘ্য, এও তেমনি অলঙ্ঘ্য।।২৮।।

স্বর্গাদি কামনা করে বিধান অনুসারে পুণ্যকর্ম করে স্বর্গভোগ করে। তার পর শিগগিরই কর্মফল অনুসারে পুনরায় পতিত হয়।।২৯।।

সেই জন্য বিচক্ষণ লোক সাধুসঙ্গ করে বিদ্যাভ্যাসে রত হবেন এবং স্ত্রীপুত্রের সঙ্গ পরিত্যাগ করে পরম সুখলাভের বাসনা করবেন।।৩০।।

দ্বিতীয় অধ্যায় সমাপ্ত।

তৃতীয় অধ্যায়-

হিমালয় বললেন,

হে শিবা, পঞ্চভূতময় দেহই দুঃখের কারণ। সুতরাং দেহের অভাবে দেহধারীর দুঃখবোধ থাকে না। কিন্তু হে মহেশ্বরী, আমার প্রতি যদি অনুগ্রহ করে থাকো, তবে, কেমন করে সেই দেহ উৎপন্ন হয় আর জীব কেনই বা শীঘ্রই পুণ্যফল হারিয়ে পৃথিবীতে জন্মগ্রহণ করে, তা আমাকে খুলে বলো।।১।।

পার্বতী বললেন,

পৃথিবী, জল, তেজ, বায়ু ও আকাশ–এই পঞ্চভূত থেকেই পঞ্চভূতময় দেহ জন্মায়।।২।।

 

হে গিরিরাজ, আমি আপনাকে বলছি, প্রথম ভূত পৃথিবীরই বেশিরভাগ অংশ শেষোক্ত ভূতগুলির সঙ্গে মিশে অণ্ডজ, স্বেদজ, উদ্ভিজ্জ ও জরায়ুজরূপে চার প্রকার পদার্থ উৎপাদন করে।।৩।।

হে নৃপতি, এর মধ্যে পাখি, সাপ ইত্যাদি অণ্ডজ, মশা ইত্যাদি স্বেদজ, বৃক্ষ, গুল্ম ইত্যাদি অচেতন পদার্থ উদ্ভিজ্জ; কিন্তু মানুষ ও পশুরা জরায়ুজ। এই জরায়ুজেরাই শুক্রশোণিত থেকে দেহ লাভ করে ভূমিষ্ঠ হয়।।৪।।

হে পর্বতপতি, এই প্রাণীই আবার পুরুষ, স্ত্রী ও ক্লীবভেদে তিন প্রকার। শুক্রাধিক্য হলে পুরুষ, রক্তাধিক্য হলে স্ত্রী এবং শুক্রশোণিতের সাম্যে নপুংসক হয়ে জন্মায়।।৫।।

জীব নিজ কর্মফল অনুযায়ী শিশিরের সঙ্গে মিশে আকাশ থেকে পৃথিবীতে পড়ে ধান-গম ইত্যাদির মধ্যে প্রবেশ করে। এইভাবে কিছুকাল থাকার পর কোনো পুরুষের দ্বারা ভক্ষিত হয়। তখন ভক্ষিত শস্য সেই পুরুষের শরীরের মধ্যে প্রবেশ করে বীর্যে পরিণত হয়। এইভাবে সেই বীর্য জীবরূপে দেহের মধ্যেই জন্মগ্রহণ করে।।৬।।

হে মহাবুদ্ধি, তারপর স্ত্রীর ঋতুকালে তার সহযোগে জীব শুক্রের সঙ্গে মাতৃগর্ভে প্রবেশ করে।।৭।।

চার দিনের মাথায় স্ত্রী ঋতুস্নাতা হয় এবং ষোলোদিন ঋতুকাল স্থায়ী হয়।।৮।।

হে পুরুষপ্রবর, ঋতুর যুগ্মদিবসে সহবাস হলে পুরুষ এবং অযুগ্মদিবসে সহবাস হলে নারী উৎপন্ন হয়।।৯।।

স্ত্রীলোক ঋতুস্নানের পর কামাতুরা হয়ে যে পুরুষের মুখ দেখে, তারই আকৃতিবিশিষ্ট সন্তানের জন্ম হয়। অতএব নারীরা আপন স্বামীরই মুখ দেখবেন।।১০।।

হে মহাবুদ্ধি, সেই বীর্য যোনীরক্তের সঙ্গে যুক্ত হয়ে এক দিনে জরায়ুর মধ্যে কলারূপ ধারণ করে এবং পাঁচ দিনে বুদবুদের আকারবিশিষ্ট হয়।।১১।।

জরায়ু চর্মচক্ষের আবরণ। তার মধ্যে শুক্রশোণিতে যোগ হতে পারে, সেই চর্ম ধারণ করে বলে তাকে জরায়ু বলে।।১২।।

তারপর সাত রাতে সেই শুক্র মাংসপেশীতে পরিণত হয় এবং পনেরো দিন হলে রক্তে পরিণত হয়।।১৩।।

হে মহামতি, তারপর পঁচিশ রাত পার হলে তা থেকে অঙ্কুর উৎপন্ন হয় এবং ক্রমে এক মাস হলে তাতে কাঁধ, গলা, মাথা, পিঠ ও পেট–এই পঞ্চ অঙ্গের বিকাশ ঘটে।।১৪।।

দ্বিতীয় মাসে হাত ও পা এবং তৃতীয় মাসে দেহের সন্ধিসকল জন্মে।।১৫।।

চার মাসে আঙুলগুলি প্রকাশিত হয়ে পূর্ণ মানুষের আকার ধারণ করে এবং সমস্ত দেহে রক্ত চলাচল করে।।১৬।।

তারপর মায়ের পেটে গর্ভ নড়তে থাকে। পাঁচ মাস হলে দুই চোখ, দুই কান ও নাক উৎপন্ন হয় এবং তখন নখ এবং পায়ু উৎপন্ন হয়।।১৭।।

ছয় মাসে মলদ্বার, অণ্ডকোষ, লিঙ্গ, কানের ছিদ্রদ্বয় ও নাভি উৎপন্ন হয়।।১৮।।

হে পিতা, সপ্তম মাসে চুল ও লোম উৎপন্ন হয়। অষ্টম মাসে গর্ভের মধ্যে জীব সমস্ত শরীরে বিভক্ত হয়। তখন পূর্বজন্মের সত্ত্বা ত্যাগ করে জীব পূর্ণাবয়ব রূপ প্রাপ্ত হয়।।১৯।।

নয় মাসে জীব সকল প্রকার চৈতন্য লাভ করে জঠরে মায়ের খাদ্যরসে বাড়তে থাকে।।২০।।

তখন নিজ কর্মদোষে জীবের প্রচণ্ড যন্ত্রণা হয়। সে পূর্বজন্মের কাজ স্মরণ করে দুঃখিত হয়ে মনে মনে বিচার করে আক্ষেপ করতে থাকে।।২১।।

এইভাবে দুঃখ পেয়ে আবার ভূতলে জন্মগ্রহণ করে। “পূর্বজন্মে অন্যায় পথে টাকাপয়সা উপার্জন করে আত্মীয়দের ভরণপোষণ করেছি, কিন্তু দুঃখহারিণী ভগবতী দুর্গার আরাধনা করিনি।“–এমন কথা চিন্তা করতে থাকে ও বলতে থাকে।।২২।।

“যদি এই গর্ভযন্ত্রণা থেকে এবার মুক্তি পাই, তাহলে আমি আর মহেশ্বরী দুর্গাকে পরিত্যাগ করে বিষয়ভোগ করব না, বরং সংযত চিত্তে নিত্য তাঁকে ভক্তিভরে পূজা করব।।২৩।।

“বাসনার বশে বৃথা পুত্রকলত্র নিয়ে বারংবার মেতে থেকেছি। তা মনে পড়ছে। বুঝতে পারছি, নিজেরই ক্ষতি করেছি।।২৪।।

“এই আসক্তির ফলে এখন ভয়ংকর গর্ভযন্ত্রণা ভোগ করছি, এবার আর সংসারের সেবা করব না”।।২৫।।

নিজকর্মবশে এই রকম অনেক দুঃখ ভোগ করে, কুক্ষিপথে  যোনি দ্বারা নিষ্পিষ্ট হয়ে, মেদ, রক্ত ও ক্লেদ মাখা শরীরে জরায়ু পরিবেষ্টিত অবস্থায় সূতিকা বায়ুর জীব ভূমিষ্ঠ হয়। দেখে মনে হয়, পাতকী যেন নরক থেকে পতিত হল।।২৬।।

তারপর আমার মায়ায় মুগ্ধ হয়ে সেই সব দুঃখ ভুলে রক্তমাংসের মানুষ আবার সেই অকিঞ্চিৎকর বস্তুকেই পায়।।২৭।।

সেই শিশুর সুষুম্না নাড়িতে যতদিন শ্লেষ্মা থাকে, তত দিন সে ভাল করে কথা বলতে পারে না।।২৮।।

তখন সে পরিজনেদের দ্বারা রক্ষিত হয়। হাঁটতে চলতে পারে না। হামাগুড়ি দিয়ে চলতে শেখে। অস্পষ্ট কথা বলে।।২৯।।

হে পিতা, তারপর যৌবন উপস্থিত হলে জীব কামক্রোধাদি রিপুর বসে পাপপূণ্য নানা কাজ করে থাকে।।৩০।।

দেহভোগের জন্য জীব কর্মসূত্রের বশে কাজ করতে থাকে, কিন্তু দেহ ও পুরুষ (আত্মা) ভিন্ন। সুতরাং পুরুষের সুখ-দুঃখ কি?।।৩১।।

হে মহারাজ, জীবের পরমায়ু পদ্মপত্রে জল। প্রতি মুহুর্তেই তা ক্ষয় পাচ্ছে। সুতরাং বিষয়সুখ স্বপ্নের মতো।।৩২।।

তবু তার অহংকার যায় না। আমার মায়ায় মুগ্ধ হয়ে সে কিছুই বিচার করতে পারে না। জীবনকে নিত্য মনে করে কেবল ভোগের চেষ্টাই করে। মৃত্যুমুখে পতিত ব্যাঙকে যেমন করে সাপ খেয়ে ফেলে, তেমনি আয়ু পূর্ণ হলে, কাল এসে জীবকে গ্রাস করে। জীবের জীবন হয় ব্যর্থ।।৩৩-৩৪।।

বিষয়াসক্ত ব্যক্তি এইভাবে জন্ম থেকে জন্মান্তরে ভ্রমণ করে। তাদের জন্ম বিফলে যায়। কিন্তু নিষ্কৃতির উপায় দেখা যায় না।।৩৫।।

এই জন্য যাঁরা শ্বাশত ঐশ্বর্য লাভ করতে চান, তাঁরা বিচার করে বিষয়সুখ ত্যাগ করে, আমার পূজা করবে। তাহলেই কেবল ব্রহ্মের প্রতি অচলা ভক্তি উৎপন্ন হয়।।৩৬।।

আত্মচিন্তা করে দেহ থেকে আত্মাকে পৃথক করে দেহকে মিথ্যা মনে করবে ও মমতা পরিত্যাগ করবে।।৩৭।।

হে পিতা, আপনি যদি সংসারদুঃখ থেকে নিষ্কৃতি চান, তাহলে আমাকে ব্রহ্মরূপা মনে করে সমাহিতচিত্তে ভক্তিভরে আরাধনা করুন।।৩৮।।

তৃতীয় অধ্যায় সমাপ্ত।

(উপেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়ের ‘গীতা-গ্রন্থাবলী’ গ্রন্থের অনুবাদ অবলম্বনে)

(আলোকচিত্র: অর্ণব দত্ত)

 

ট্যাগ সমুহঃ

মন্তব্য করুন

Fill in your details below or click an icon to log in:

WordPress.com Logo

You are commenting using your WordPress.com account. Log Out /  পরিবর্তন )

Facebook photo

You are commenting using your Facebook account. Log Out /  পরিবর্তন )

Connecting to %s

 
%d bloggers like this: