সৃষ্টির স্রোতধারা প্রবাহিত হয় দুই খাতে। কখনও সেই খাত স্রষ্টাই খনন করেন। আবার কখনও তিনি মরা নদীর সোঁতায় সৃষ্টিস্রোতের নতুন প্লাবন আনেন। রবীন্দ্রনাথের সৃষ্টিপ্রতিভার নেপথ্যেও এমন কিছু কিছু মরা নদীর সোঁতা ছিল। তাঁর ‘ভাঙা গান’ বহুল-আলোচিত। কিন্তু তাঁর অন্যান্য বহু রচনার মূল উৎস আমাদের অগোচরেই থেকে যায়। রামায়ণ, মহাভারত ও বৌদ্ধ সাহিত্যের কিছু অপ্রধান উপাখ্যানের তিনি পুনর্লিখন করেছিলেন নাটকের মাধ্যমে। প্রাচীন সাহিত্যের সমুদ্রগর্ভ থেকে সেঁচে আনা এই গল্পগুলি হয়ত আমাদের যুগদৃষ্টির আড়ালেই থেকে যেত, যদি রবীন্দ্রনাথ এগুলির প্রাচীন পলেস্তরা খসিয়ে নব-অলংকারে ভূষিত করে আমাদের সামনে উপস্থাপনা না করতেন। এই নাটকগুলিকে কৌশলগতভাবে আমরা রবীন্দ্রনাথের মৌলিক নাটক বলতে পারি না, যেমন ‘ম্যাকবেথ’, ‘হ্যামলেট’, ‘রোমিও অ্যান্ড জুলিয়েট’ ইত্যাদিকে শেকসপিয়রের মৌলিক নাটক বলা যায় না। কিন্তু নাট্যসাহিত্যে এই নাটকগুলির গুরুত্ব কাব্যসাহিত্যে আলংকারিক বা সাহিত্যিক মহাকাব্যগুলির মতোই। লক্ষণীয় বিষয়টি হল কাহিনি পরিবেশনায় রবীন্দ্রনাথের গৃহীত স্বাধীনতা। এই স্বাধীনতার পিছনে ছিল যুগরুচি। অবশ্যই এই রুচি আধুনিক রুচি। এবং সেই সঙ্গে যুক্ত হয়েছিল নাট্যরচনার পিছনে রবীন্দ্রনাথের উদ্দেশ্য। একটি নির্দিষ্ট বক্তব্য, যা রবীন্দ্রনাথ একটি নির্দিষ্ট নাটকের মাধ্যমে দর্শকের সামনে উপস্থাপিত করতে চাইতেন, তা প্রাচীন কাহিনির শরীরটিকে দুমড়ে-মুচড়ে একটা মার্জিত নতুন রূপ দিত। বর্তমান নিবন্ধে আমরা সেই মূল আখ্যানগুলির উৎস সন্ধানে প্রবৃত্ত হব।
নাট্যকাব্যগুলিকে বাদ দিলে রবীন্দ্রনাথের যে নাটকগুলিকে ‘ভাঙা নাটক’ আখ্যা দেওয়া চলে, সেগুলি হল: ‘বাল্মীকি-প্রতিভা’ (১৮৮১), ‘কালমৃগয়া’ (১৮৮২), ‘রাজা’ (১৯১০), ‘চণ্ডালিকা’ (১৯৩৩; ‘নৃত্যনাট্য চণ্ডালিকা’, ১৯৩৮), ‘নৃত্যনাট্য চিত্রাঙ্গদা’ (১৯৩৬) ও ‘নৃত্যনাট্য শ্যামা’ (১৯৩৯)। এর মধ্যে ‘বাল্মীকি-প্রতিভা’ ও ‘কালমৃগয়া’ রামায়ণ অবলম্বনে, ‘নৃত্যনাট্য চিত্রাঙ্গদা’ মহাভারত অবলম্বনে এবং অবশিষ্ট নাটকগুলি বৌদ্ধ সাহিত্য অবলম্বনে।
‘বাল্মীকি-প্রতিভা’ রবীন্দ্র-নাট্যসাহিত্যে একটি বিশিষ্ট স্থানের অধিকারী। রবীন্দ্রনাথের প্রথম নাটক। সদ্য-বিলেতফেরত যুবক রবীন্দ্রনাথ পাশ্চাত্য অপেরা শৈলীর আদর্শে বাংলা মঞ্চে আনলেন গীতিনাট্য ‘বাল্মীকি-প্রতিভা’। নাটকের ধাঁচটি বিদেশি হলেও, আখ্যানভাগ ছিল দিশি, বলা ভাল ষোলোআনা বঙ্গীয়। আখ্যানভাগের মূল ভিত্তি কৃত্তিবাস ওঝার রামায়ণ। যদিও ক্রৌঞ্চ-ক্রৌঞ্চী বধের বৃত্তান্ত বাল্মীকি-রামায়ণেও রয়েছে। কিন্তু রবীন্দ্রনাথ এখানে বাল্মীকি ও কৃত্তিবাস উভয়ের থেকেই অনেকটা সরে এসেছেন।
কৃত্তিবাসী রামায়ণে দস্যু রত্নাকর চ্যবন ঋষির পুত্র। ঋষিটি নিপাট ভদ্রলোক। কিন্তু ছেলেটি তাঁর গোল্লায় গেছে (এমন দৃষ্টান্ত অবশ্য বাঙালি সমাজে দুর্লভ নয়)। বনপথে নিরস্ত্র পথিককে হত্যা করে সর্বস্ব লুট করে। মহাপাপী। কিন্তু রামনাম এহেন মহাপাতকীকেও পাপমুক্ত করতে পারে। তাই দেবতারা এঁকে রামনাম দিয়ে শুদ্ধ করার পরিকল্পনা করলেন। নারদ ও ব্রহ্মা ব্রাহ্মণের ছদ্মবেশে এলেন রত্নাকরের কাছে। রত্নাকর যথারীতি এঁদের হত্যা করতে গেল। কিন্তু ব্রহ্মা মায়াবলে রত্নাকরের মুগুর অকেজো করে দিলেন। বললেন, “বাপু হে, এত পাপ কার জন্য করো? তোমার পাপের ভাগী কে হবে?” রত্নাকর বললে, “কেন? আমি দস্যুবৃত্তি করে যে ধন পাই, তাতে আমি, আমার পিতামাতা ও স্ত্রী, চারজনে খাই। তারাই আমার পাপের ভাগী হবে।” ব্রহ্মা হেসে বললেন, “তাই নাকি? পাপ করলে নিজে। তোমার পাপের ভাগী তারা হতে চাইবে কেন? তুমি তাদের জিজ্ঞাসা করে এসো। দ্যাখো, ওরা কী বলে।” রত্নাকর গেল জিজ্ঞাসা করতে। কিন্তু বাপ-মা এমনকি স্ত্রী কেউই তার পাপের ভাগী হতে রাজি হল না। সকলেই শাস্ত্রের দোহাই পেড়ে দেখালে, পাপ যা কিছু সব রত্নাকরের দেহে। তার আঁচ পিতামাতা বা স্ত্রীর গায়ে লাগে না। অনুতপ্ত রত্নাকর ছুটে গেল ব্রাহ্মণবেশী ব্রহ্মার কাছে। ব্রহ্মা তাঁকে রামনাম দান করলেন। রত্নাকর বসলেন রামনামের তপস্যায়। বল্মীকে ঢেকে গেল তাঁর দেহ। তপস্যা চলল ষাট হাজার বছর। তপস্যান্তে ব্রহ্মা এসে তাঁকে বর দিলেন মহাকবি হওয়ার। এরপর একদিন তাঁর চোখের সামনে ব্যাধ মিলনরত এক ক্রৌঞ্চযুগলকে বধ করলে বাল্মীকির মুখ থেকে উচ্চারিত হল অভিশাপবাণী। শোক থেকে উৎসারিত সেই প্রথম শ্লোক –
মা নিষাদ প্রতিষ্ঠাং ত্বমগমঃ শাশ্বতীঃ সমাঃ।
যৎ ক্রৌঞ্চমিথুনাদেকমবধীঃ কামমোহিতম্।।
নারদ এসে তাঁকে রামকথার সারাংশ বর্ণনা করে গেলেন। সেই সারকথাকে সপ্তকাণ্ডে বিন্যস্ত করে বাল্মীকি লিখলেন রামায়ণ।
বাল্মীকি রামায়ণে এই বৃত্তান্ত নেই। সেখানে শুধু নারদ বাল্মীকিকে রামকথা শুনিয়েছেন। তারপরই ক্রৌঞ্চবধ এবং তদ্দর্শনে বাল্মীকির শ্লোকরচনা শুরু।
রবীন্দ্রনাথের ‘বাল্মীকি-প্রতিভা’ যে কাহিনি শোনায়, তা অনেক আধুনিক। এখানে বাল্মীকি দস্যুসর্দার। সে কালী-উপাসক। অমাবস্যার রাতে সে কালীপূজার ইচ্ছা ব্যক্ত করে দলের কাছে। দলবল যায় পূজার উপকরণ সংগ্রহে। ধরে নিয়ে আসে একটি পথহারা বালিকাকে। দেবীর সামনে বলি দেওয়ার জন্য। বালিকাকে দেখে বাল্মীকির ভাবান্তর ঘটে। সে বালিকাটিকে মুক্তি দেয়। ক্রমে এক বালিকা থেকে তাঁর দয়া বিশ্বপ্রাণীর উপর গিয়ে পড়ে। মৃগয়ায় বেরিয়ে মৃগশিকারে কাতর হয়ে পড়ে। অবস্থা দেখে দলবল তাকে ছেড়ে যায়। এক ব্যাধকে ক্রৌঞ্চমিথুন বধ করতে দেখে দেবভাষায় তার মুখ থেকে নির্গত হয় অভিশাপবাণী। চমকে ওঠে সে নিজেই। তাকে দেখা দেন দেবী সরস্বতী। এরপরই কালীপ্রতিমা সে বিসর্জন দেয়। বনে বনে ঘুরতে থাকে। লক্ষ্মী তাকে প্রলুব্ধ করার চেষ্টা করেন। কিন্তু দস্যু রত থাকেন সরস্বতীর সন্ধানে। অবশেষে সরস্বতী আসেন তাঁর কাছে। বলেন –
দীনহীন বালিকার সাজে,
এসেছিনু এ ঘোর বনমাঝে,
গলাতে পাষাণ তোর মন –
কেন বৎস, শোন্, তাহা শোন্।
আমি বীণাপাণি, তোরে এসেছি শিখাতে গান,
তোর গানে গলে যাবে সহস্র পাষাণপ্রাণ।
যে রাগিনী শুনে তোর গলেছে কঠোর মন,
সে রাগিনী তোর কণ্ঠে বাজিবে রে অনুক্ষণ।
…
বসি তোর পদতলে কবি-বালকেরা যত
শুনি তোর কণ্ঠস্বর শিখিবে সঙ্গীত কত।
এই নে আমার বীণা, দিনু তোরে উপহার
যে গান গাহিতে সাধ, ধ্বনিবে ইহার তার।
এই হল ‘বাল্মীকি-প্রতিভা’র আখ্যানবস্তু। এর মধ্যে কৃত্রিমতা প্রচুর। কিন্তু মনে রাখা দরকার, এই নাটক গীতিধর্মী। গান ও সংলাপের যুগলবন্দীই এর প্রধান আকর্ষণ। রবীন্দ্রনাথের মূল উদ্দেশ্য এখানে একটি বাস্তবসম্মত দস্যুসমাজের বর্ণনা নয়, বরং বাংলা নাট্যমঞ্চে অপেরার সার্থক রূপায়ণ। সেই দিক থেকে তিনি সফল।
‘কালমৃগয়া’ গীতিনাট্যে অবশ্য রবীন্দ্রনাথ তুলনামূলকভাগে কম স্বাধীনতা নিয়েছেন। এই নাটকের আখ্যানভাগ বাল্মীকি-রামায়ণের অযোধ্যাকাণ্ডের ৬৩-৬৪ সর্গ থেকে গৃহীত। কৃত্তিবাসী রামায়ণে এই উপখ্যান আছে আদিকাণ্ডে। যদিও আখ্যানবস্তু প্রায় একই।
মৃগয়ায় বের হয়ে দশরথ মৃগভ্রমে শব্দভেদী বাণচালনা করে অন্ধমুনির পুত্রকে বধ করেন। কৃত্তিবাসী রামায়ণে এই ছেলেটির নাম সিন্ধু। বাল্মীকি রামায়ণে একে বলা হয়েছে মুনিকুমার। রবীন্দ্রনাথ ঋষিকুমার বলেছেন। মৃত্যুপথযাত্রী ঋষিকুমার দশরথকে তার তৃষ্ণার্ত পিতার কাছে জল নিয়ে যাওয়ার অনুরোধ করে। অনুতপ্ত দশরথ জল নিয়ে যান। এবং অন্ধমুনিকে পুত্রের মৃত্যুসংবাদ দেন। অন্ধমুনি দশরথকে অভিশাপ দেন –
পুত্রব্যসনজং দুঃখং যদেতন্মম সাংপ্রতম্
এবং ত্বং পুত্রশোকেন রাজন কালং করিষ্যসি।
এখানে ঋষিকুমারের সখি লীলার চরিত্রটি রবীন্দ্রনাথের প্রক্ষিপ্ত। এবং ঋষিকুমারের মায়ের অনুপস্থিতিও লক্ষণীয়। এতদ্ব্যতীত বাল্মীকি-কৃত্তিবাস-রবীন্দ্রনাথ ‘কালমৃগয়া’ আখ্যানে পরস্পরের খুবই কাছাকাছি হেঁটেছেন। এর কারণ, ‘কালমৃগয়া’র আখ্যানভাগ যথেষ্ট পরিমাণে আধুনিক। এখানে দেবতাদের আনাগোনা নেই, ভক্তির আতিশায্য নেই। বরং এক বিশ্ববিদীর্ণকারী শোক রয়েছে। পুত্রশোক। তৎসত্ত্বেও এখানে মেলোড্রামার সুযোগ নেই। যদিও মেলোড্রামা তৎকালীন যুগরুচির চাহিদার মধ্যেই পড়ত, কিন্তু আশ্চর্যজনকভাবে ‘কালমৃগয়া’ যুগের চাহিদার থেকে অনেকটাই এগিয়ে ছিল। বাল্মীকি ঋজু ভঙ্গিমায় ঋষিকুমারের গল্প শুনিয়েছেন। কৃত্তিবাসও বাড়াবাড়ি করেননি। রবীন্দ্রনাথ গীতিনাট্যের গীতিধর্ম বজায় রাখতে গিয়ে একটু রোম্যান্টিকতার ছোঁয়া দিয়েছেন। কিন্তু তাতে মূল আখ্যানটি টাল খায়নি। এই কারণে, ‘কালমৃগয়া’ একটি বিশেষ উচ্চতায় নিজেকে স্থাপন করতে সক্ষম হয়েছে।
‘চিত্রাঙ্গদা’র মূল রচনাটি নাট্যকাব্য, যা আমাদের এই নিবন্ধে আলোচ্য নয়। কিন্তু এই কাব্যনাট্য পরে রূপ নিয়েছিল নৃত্যনাট্যের। উপাখ্যানের উৎস মহাভারত। মূল মহাভারতে অর্জুন-চিত্রাঙ্গদার গল্প রয়েছে আদিপর্বের ‘অর্জুনবনবাসপর্বাধ্যায়’-এ। রাজশেখর বসু উদ্ধৃত করা যাক:
উলূপীর কাছে বিদায় নিয়ে অর্জুন নানা তীর্থ পর্যটন করলেন, তারপর মহেন্দ্র পর্বত দেখে সমুদ্রতীর দিয়ে মণিপুরে এলেন। সেখানকার রাজা চিত্রবাহনের সুন্দরী কন্যা চিত্রাঙ্গদাকে দেখে অর্জুন তাঁর পাণিপ্রার্থী হলেন। রাজা অর্জুনের পরিচয় নিয়ে বললেন, আমাদের বংশে প্রভঞ্জন নামে এক রাজা ছিলেন। তিনি পুত্রের জন্য তপস্যা করলে মহাদেব তাঁকে বর দিলেন, তোমার বংশে প্রতি পুরুষের একটিমাত্র সন্তান হবে। আমার পূর্বপুরুষদের পুত্রই হয়েছিল। কিন্তু আমার কন্যা হয়েছে। তাকেই আমি পুত্র গণ্য করি। তার গর্ভজাত পুত্র আমার বংশধর হবে – এই প্রতিজ্ঞা যদি কর তবে আমার কন্যাকে বিবাহ করতে পার। অর্জুন সেইরূপ প্রতিজ্ঞা করে চিত্রাঙ্গদাকে বিবাহ করলেন এবং মণিপুরে তিন বৎসর বাস করলেন। তার পুত্র হলে চিত্রাঙ্গদাকে পুনর্বার আলিঙ্গন করে ভ্রমণ করতে গেলেন।
রবীন্দ্রনাথ এই আখ্যানে স্বাধীনতা নিলেন ব্যাপক:
“মণিপুররাজের ভক্তিতে তুষ্ট হয়ে শিব বর দিয়েছিলেন যে, তাঁর বংশে কেবল পুত্রই জন্মাবে। তৎসত্ত্বেও যখন রাজকুলে চিত্রাঙ্গদার জন্ম হল তখন রাজা তাঁকে পুত্ররূপেই পালন করলেন। রাজকন্যা অভ্যাস করলেন ধনুর্বিদ্যা; শিক্ষা করলেন যুদ্ধবিদ্যা, রাজদণ্ডনীতি।
অর্জুন দ্বাদশবর্ষব্যাপী ব্রহ্মচর্যব্রত গ্রহণ ক’রে ভ্রমণ করতে করতে এসেছেন মণিপুরে। তখন এই নাটকের আখ্যান আরম্ভ।”
পুরুষবেশী চিত্রাঙ্গদা মৃগয়ায় গিয়ে ব্রহ্মচারী অর্জুনের সাক্ষাৎ পান। অর্জুনকে প্রেম নিবেদন করেন। কিন্তু অর্জুন কুরূপা চিত্রাঙ্গদাকে প্রত্যাখ্যান করেন। তখন চিত্রাঙ্গদা মদনের তপস্যা করে রূপবতী হলেন এবং মিলিত হলেন অর্জুনের সঙ্গে। বছর ঘুরতে না ঘুরতে অর্জুনের রূপতৃষ্ণায় ক্লান্তি এল। চিত্রাঙ্গদার পরিচয় পেয়ে তিনি তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা প্রকাশ করলেন। সুরূপা চিত্রাঙ্গদাও তখন রূপের খোলস খসিয়ে ফেলে সত্যরূপে অর্জুনের কাছে ধরা দিলেন।
মহাভারতের কাহিনিটির রূপায়ণ রবীন্দ্রনাথের কাছে গৌণ ছিল। নৃত্যনাট্য ত্রয়ীর অন্য দু’টি নৃত্যনাট্যের মতোই এখানেও নায়িকার হৃদয়দ্বন্দ্বই নাটকের প্রধান উপজীব্য। অর্জুনের চরিত্রটি পর্যন্ত এখানে ম্লান। নাটকের বহিরঙ্গের পরিবর্তন তাই এখানে সত্যিই অনুল্লেখনীয়।
রূপক-সাংকেতিক পর্বের যে নাটকটি রবীন্দ্রনাথ প্রথম কোনো প্রাচীন আখ্যান অবলম্বনে রচনা করেন, সেটি হল ‘রাজা’। এটির আখ্যানভাগ রবীন্দ্রনাথ গ্রহণ করেছেন বৌদ্ধজাতক ‘কুশজাতক’ থেকে।
মল্লরাজ ইক্ষ্বাকুর প্রধানা মহিষী শীলবতীর গর্ভে দুই পুত্রের জন্ম হয়। জ্যেষ্ঠপুত্র কুশ ছিলেন বিদ্বান, অথচ কুরূপ। কনিষ্ঠ জয়স্পতি ছিলেন সুদর্শন, কিন্তু বিদ্যাহীন। মদ্ররাজকন্যা প্রভাবতীর সঙ্গে কুশের বিবাহ হয়। কিন্তু রানি প্রভাবতীকে বলেন, তাঁদের কুলে একটি প্রথা আছে, এক সন্তানের মা না হওয়া পর্যন্ত বধূ দিবালোকে স্বামীর মুখদর্শন করেন না। কিন্তু প্রভাবতী বার বার স্বামীকে দেখতে চাইলে রানি কৌশলে জয়স্পতিকে রাজবেশ পরিয়ে বধূকে দেখালেন। কিন্তু অঘটন আটকানো গেল না। একদিন উদ্যানে কুশকে দেখে ফেললেন প্রভাবতী। চিৎকার করে পালিয়ে এলেন বাপের বাড়ি। মনোদুঃখে কুশও পিছু পিছু গেলেন মদ্ররাজ্যে। রাজার হাতিশালায় গিয়ে বীণা বাজাতে লাগলেন। প্রভাবতী বুঝলেন কুশ এখানে এসেছেন। কুম্ভকার, মালাকার প্রভৃতির বাড়িতে শিক্ষার্থী হয়ে থেকে খেলনা, মালা ইত্যাদি গড়ে পাঠাতে লাগলেন প্রভাবতীকে। তাও প্রভাবতী অনড়। শেষে রাজভবনে পাচকের বৃত্তি নিলেন কুশ। প্রভাবতী ছাড়া কেউই তাঁর পরিচয় জানল না। ইতিমধ্যে প্রভাবতীর স্বামীত্যাগের খবর পেয়ে সাতজন রাজা মদ্রদেশ অবরোধ করে প্রভাবতীকে দাবি করলেন। অন্যথায় যুদ্ধের হুমকিও দিলেন। রাজা প্রভাবতীকে সাত টুকরো করে সাত রাজাকে দেবেন স্থির করলেন। রাজপুরে হাহাকার উঠল। প্রভাবতী প্রকাশ করলেন, কুশ ছদ্মবেশে সাত মাস কাল রাজপুরে অবস্থান করছেন। মদ্ররাজ গিয়ে কুশের কাছে ক্ষমা চাইলেন। কুশ রাজবেশে যুদ্ধ করতে গেলেন। সাত রাজাকে বন্দী করে আনলেন। তবে তাদের প্রাণনাশ নিরর্থক বিধায় মদ্ররাজের সাত কন্যাকে তাঁদের হাতে সমর্পণ করলেন।
রবীন্দ্রনাথ লিখলেন:
রাজা রানি সুদর্শনা বা অন্য কোনো প্রজাকে দেখা দেন না। তাই তাঁদের মনে রাজার রূপ ও অস্তিত্ব নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। বসন্তপূর্ণিমার উৎসবে রানি সুদর্শন রাজবেশী সুবর্ণকে দেখে তাকেই রাজা মনে করলেন। সুবর্ণর পাশে ছিলেন কাঞ্চীরাজ। তিনি সুবর্ণকে শিখণ্ডী খাড়া করে রানিকে পেতে চাইলেন। রাজউদ্যানে আগুন লাগানো হল। সুবর্ণ ধরা পড়ল। রাজার প্রকৃত রূপ রানির সামনে উদ্ঘাটিত হল। রাজা কুদর্শন। সুদর্শনা মেনে নিতে পারলেন না। তিনি বাপের বাড়ি চলে গেলেন। রানির পিতা কান্যকুব্জরাজ কন্যাকে সমর্থন করলেন। কৃতকর্মের শাস্তি হিসেবে তাঁকে দাসী নিযুক্ত করলেন। সাতজন রাজা সুদর্শনাকে পাওয়ার আশায় কান্যকুব্জে সমবেত হলেন। কিন্তু স্বয়ম্বর সভার আগেই রাজার সেনাপতি ঠাকুরদাদা রাজাদের যুদ্ধে আমন্ত্রণ জানালেন। সুদর্শনা বিজয়ী স্বামীর আগমনের আশায় বসে রইলেন। কিন্তু যুদ্ধজয় করে রাজা তাঁর রাজধানীতে ফিরে গেলেন। রানি তখন চললেন রাজার অভিসারে। মিলন হল সেই অন্ধকার কক্ষে। রাজা তাঁকে বাইরে ডেকে আনলেন, “এস, আমার সঙ্গে এস, বাইরে চলে এস – আলোয়।”
‘রাজা’ নাটকে রবীন্দ্রনাথ একটি রূপকের আশ্রয় করেছিলেন। এই রূপকটি পরমাত্মার সঙ্গে মানবাত্মার মিলনের রূপক। বৌদ্ধজাতকের কাহিনি অবলম্বন করে রচিত হলেও, ‘রাজা’ নাটকের তাত্ত্বিক ভিত্তি বৈষ্ণব সাহিত্য। এইজন্যই মূল আখ্যানের এই ব্যাপক পরিবর্তন।
‘চণ্ডালিকা’র কাহিনি রবীন্দ্রনাথ গ্রহণ করেছেন বৌদ্ধ ‘অবদান’ সাহিত্য থেকে। মূল গল্পটি নিম্নরূপ:
বুদ্ধের প্রিয় শিষ্য আনন্দ শ্রাবস্তী নগরে কোনো এক ভক্তের গৃহে আহার করে বিহারে প্রত্যাবর্তন করছিলেন। পথে তৃষ্ণার্ত হওয়ায় এক প্রকৃতি নাম্নী এক চণ্ডালিনীর হাতে জল খান। আনন্দের মানবতার বাণীতে মুগ্ধ প্রকৃতি আনন্দের প্রেমে পড়েন। প্রকৃতির মা মেয়ের সঙ্গে আনন্দের মিলন ঘটানোর জন্য তান্ত্রিক মন্ত্রের সাহায্যে আনন্দকে টেনে আনেন। প্রকৃতি যখন শয্যারচনা করছে, তখন আনন্দের মন্ত্রঘোর কেটে যায়। তিনি মনে মনে বুদ্ধের শরণ নেন। বুদ্ধ প্রকৃতির মায়ের মন্ত্র খণ্ডন করে আনন্দকে ফিরিয়ে আনেন। প্রকৃতি আনন্দের আশা ছাড়ে না। সে আনন্দের পিছু নেয়। কথাটা বুদ্ধের কানে যায়। তিনি প্রকৃতিকে বলেন, আনন্দকে বিবাহ চাইলে পিতামাতার অনুমতি নিয়ে এস। প্রকৃতি অনুমতি আনলে তিনি তাঁকে আনন্দের মতো বেশ ধারণ করতে বলেন। সে মাথা মুড়িয়ে কাষায় ধারণ করল। ভিক্ষুণী হয়ে সর্বদুর্গতিশোধন ধারিণীমন্ত্র জপ করা মাত্র তার চিত্তের মলিনতা দূর হল।
রবীন্দ্রনাথ মূল কাহিনিটি ছোটো করলেন। আনন্দ প্রকৃতির গৃহে আসার আগেই সে মায়ের মন্ত্রের থালায় লাথি মারে। তারপর প্রবেশ করলে, তার পদধূলি নিয়ে ক্ষমাপ্রার্থনা করে।
যে সময়ে রবীন্দ্রনাথ ‘চণ্ডালিকা’ ও ‘নৃত্যনাট্য চণ্ডালিকা’ রচনা করেন, সেই সময় হিন্দুসমাজের ইতিহাসে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। তথাকথিত নিম্নবর্ণীয়রা এই সময় রাজনৈতিক অধিকারের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেছিল। মহাত্মা গান্ধী ও অন্যান্য নেতৃবর্গ হিন্দুসমাজ থেকে অস্পৃশ্যতা দূরীকরণে বিশেষ সচেষ্ট হয়েছিলেন। রবীন্দ্রনাথ নিজেও জাতপাতের বিরুদ্ধে তীব্র মত প্রকাশ করে আসছিলেন। এরই প্রতিফলন ঘটেছিল ‘চণ্ডালিকা’য়। মূল কাহিনির যেটুকু অংশ রবীন্দ্রনাথ এই মত প্রকাশের সহায়ক মনে করেছিলেন, ঠিক ততটুকুই তিনি গ্রহণ করেন।
‘শ্যামা’ নৃত্যনাট্যের আখ্যানবস্তু গৃহীত হয়েছে বৌদ্ধ ‘মহাবস্তু’ থেকে। নৃত্যনাট্য ত্রয়ীর অন্য দু’টির মতো ‘শ্যামা’-তেও নায়িকার মানসিক দ্বন্দ্ব প্রধান। শ্যামা রাজগণিকা। বণিক বজ্রসেন চুরির অপবাদ থেকে বাঁচাতে সে উত্তীয় নামে তাঁর কিশোর প্রেমিককে কোটালের কাছে প্রেরণ করে। কোটাল উত্তীয়কে হত্যা করে বজ্রসেনকে মুক্তি দেয়। বজ্রসেন শ্যামার অপরাধের কথা জানতে পেরে তাকে ত্যাগ করে। মূল কাহিনিতে সামান্য গ্রহণ বর্জন করেছেন রবীন্দ্রনাথ। মূলে বজ্রসেন ছিল চোর। এবং শেষে গণিকাকে আঘাত করে সে তার অলংকারাদি নিয়ে পলায়ন করে। বৌদ্ধ কাহিনির নীতিটি কামের কুফল প্রদর্শন। কিন্তু রবীন্দ্রনাথের উদ্দেশ্য অন্য ছিল। ঘটনার বুনন এবং চরিত্রগুলির মনস্তাত্ত্বিক বিকাশ এখানে সার্থক। ‘শ্যামা’ রবীন্দ্রনাথের শ্রেষ্ঠ নৃত্যনাট্য।
কৃতজ্ঞতা স্বীকার:
* ‘গীতবিতান’, তৃতীয় খণ্ড, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, বিশ্বভারতী গ্রন্থনবিভাগ, কলকাতা-১৭, ১৩৮১ সংস্করণ
* ‘রবীন্দ্র-নাট্য-পরিক্রমা’, উপেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য, ওরিয়েন্ট বুক কোম্পানি, কলকাতা-৭৩, ১৪০৫ সংস্করণ
* ‘বাঙ্গালা সাহিত্যের ইতিহাস’, চতুর্থ খণ্ড, সুকুমার সেন, আনন্দ পাবলিশার্স প্রাইভেট লিমিটেড, কলকাতা-০৯, ১৯৯৬
* ‘সর্বজনের রবীন্দ্রনাথ’, শুভঙ্কর চক্রবর্তী সম্পাদিত, রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়, কলকাতা-৫০, ১৪০৫ ব.
* ‘বাল্মীকি রামায়ণ’, হেমচন্দ্র ভট্টচার্য কর্তৃক গদ্যানুবাদিত, তুলি-কলম, কলকাতা-০৯, ২০০৫ সং
* ‘রামায়ণ কৃত্তিবাস বিরচিত’, কৃত্তিবাস ওঝা, হরেকৃষ্ণ মুখোপাধ্যায় সম্পাদিত, সাহিত্য সংসদ, কলকাতা-০৯, ১৯৫৭
* ‘মহাভারত’, রাজশেখর বসু সারানুবাদিত, এম সি সরকার অ্যান্ড সনস প্রাইভেট লিমিটেড, কলকাতা-১২, ১৩৫৬
তমাল নাগ
অক্টোবর 15, 2012 at 9:37 পুর্বাহ্ন
হায় হায়। দাদা এ কি করছেন? ভাগ্যিস এই লেখা বাংলাদেশের বুদ্ধিজীবীরা( স্বঘোষিত) দেখে নাই। তাইলে এতদিন দেখতাম পোস্ট ” শুধু গান না, তিনি নাটকও চুরি করতেন” ।
কিন্তু একটা প্রশ্ন থেকে গেল, যারা নেট ঘেঁটে রবিন্দ্র বিশেষজ্ঞ সাজলেন এবং তিনি কবে কি করেছেন , কার লেখা থেকে টুকেছেন তাঁর পুরো বিবরন দিলেন কিন্তু এই জিনিসটা চোখ এড়ায়ে গেল??????????
সত্যি সেলুকাস বড় বিচিত্র এ পৃথিবী 😀 😀 😀
অর্ণব দত্ত
অক্টোবর 15, 2012 at 10:31 পুর্বাহ্ন
ভাই তমাল, তুমি “অল্পবিদ্যে-ভয়ংকরী”-র দলকে বড়ো বেশি গুরুত্ব দাও। ভাঙা গান চুরি হতে যাবে কেন? হিন্দুস্তানি ও কর্ণাটকি শাস্ত্রীয় সংগীতের সুরকাঠামো থাকে। আগেকার দিনে যখন রেকর্ড ব্যবস্থা আবিষ্কৃত হয়নি, তখন সংগীতকারেরা সুরের নির্দিষ্ট কাঠামো রেখে যেতেন, যাতে পরবর্তীকালেও সুরস্রষ্টারা সেই সুরে নিজেদের গান বেঁধে সেই সুরটিকে বাঁচিয়ে রাখতে পারেন। এটা শুধু শাস্ত্রীয় সংগীতেও হত না, লোকসংগীতেও হত। লালন ফকির কী নিজে সুরকার ছিলেন? তিনি তো বাউলের বাঁধা সুরেই নিজের সৃষ্ট গান বাঁধতেন। রামপ্রসাদী সুরে কমলাকান্ত থেকে নজরুল কত কবি নিজেদের শ্যামাসংগীত বেঁধেছেন। তুমি নজরুলের “শূন্য এ বুকে পাখি মোর” গানটি শুনেছো। পাশাপাশি রবীন্দ্রনাথের “অল্প লইয়া থাকি তাই” গানটিও শুনে দেখো তো, কোনো সাদৃশ্য পাও কিনা! রবীন্দ্রনাথ কিন্তু “অল্প লইয়া থাকি তাই” যখন লেখেন, তখন নজরুলের বয়স দুই!! শাস্ত্রীয় সংগীতের কাঠামো সম্পর্কে যাঁদের ধারণা নেই, তাঁরাই একে চুরি বলেন! বাংলায় একটা প্রবাদ আছে, “দেড় দিনের বোষ্টুম, ভাতেরে কয় অন্ন!” রবীন্দ্রনাথের ধ্রুপদি ভাঙা গান ভারতের অনেক প্রথম সারির শাস্ত্রীয় সংগীতকার গেয়েছেন ও বাজিয়েছেন, তাঁরা কেউ রবীন্দ্রনাথের বিরুদ্ধে চুরির অভিযোগ আনেননি। আর যাদের জীবন ও কর্মের সঙ্গে শাস্ত্রীয় সংগীত দূর অস্ত গানের “গ”-ও নেই, তারা এসেছে মার্গসংগীতের সমঝদার সাজতে!! আর সবচেয়ে বড়ো কথা, রবীন্দ্রনাথ সব ক্ষেত্রেই সুরের উৎস নির্দেশ করেছেন। তুমি বলছ, ইন্দিরা দেবী চৌধুরাণীর বই থেকে তথ্য নিয়ে সবাই রবীন্দ্রনাথকে চোর বলছে! ইন্দিরা দেবী ছিলেন রবীন্দ্রনাথের ভ্রাতুষ্পুত্রী ও ছাত্রী। তিনি তাঁরা কাকা তথা গুরু রবীন্দ্রনাথের কাছ থেকেই গানের উৎসগুলি জেনেছিলেন। রবীন্দ্রনাথ তো ঋণস্বীকার করেছেন!
এবার আসি নাটকের কথায়! নাটকের ব্যাপারে রবীন্দ্রনাথকে কেউ চুরি অপবাদ দেবে না। যদি দেয়, সে বুঝতে হবে সে পাগলেরও অধম; কারণ পাগলও নিজের ভাল বোঝে! একজনের গল্পের উপাদান নিয়ে আরেক জন নাটক-গল্প-উপন্যাস লিখতেই পারেন। এই উদাহরণ ঝুরি ঝুরি আছে। শেকসপিয়রের নাটক অবলম্বনে চার্লস ও মেরি ল্যাম্বের “টেলস ফ্রম শেকসপিয়র”, বাইবেল অবলম্বনে জন মিলটনের (নাস্তিকদের মধ্যে কেউ কেউ তাঁকে গুরুঠাকুর মানেন) “প্যারাডাইস লস্ট” ও “প্যারাডাইস রিগেইন্ড” বিখ্যাত উদাহরণ। শেকসপিয়রের অধিকাংশ নাটকের মূল কাহিনিকার শেকসপিয়র নিজে নন। মধ্যযুগীয় মঙ্গলকাব্যে কী হয়েছে? একই গল্প এক এক কবি এক এক ভাবে লিখেছেন! মীর মোশাররফ হোসেনের “বিষাদসিন্ধু” কী লেখকের মৌলিক কাহিনি??? রবীন্দ্রনাথ যদি চোর হন, তবে এঁরা কী? তোমার রবীন্দ্রনাথকে-চোর-বলা বন্ধু ও বুদ্ধি(!)জীবীদের এই প্রশ্নটা কোরো!
তমাল নাগ
অক্টোবর 15, 2012 at 12:03 অপরাহ্ন
আমি আসলেই এদের একটু বেশি গুরুত্ত দিয়ে ফেলেছিলাম। আপনার সাথে পরিচয় হওয়া টা আমার ধারনার বিশাল একটা পরিবরতন করে দিয়েছে। আমি এখন অনেক আলাদা ভাবে ভাবতে পারছি। আরাও অনেক কিছু পড়তে হবে বুঝতে পারছি। এখন আর কান দেই না। আমার দৃষ্টি কে পরিবরতন করে দেবার জন্য আমি আপনার কাছে কৃতজ্ঞ।
তমাল নাগ
অক্টোবর 15, 2012 at 12:05 অপরাহ্ন
আপনার কাছ থেকে আরও অনেক লেখা চাই। আর আপনার একটা পোস্ট এ দেখলাম রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সব লেখার একটা সংগ্রহ তৈরি হচ্ছে । সাইট টা হলে এড্রেস টা অবশ্যই দেবেন কিন্তু। ভাল থাকবেন। 🙂
অর্ণব দত্ত
অক্টোবর 15, 2012 at 12:40 অপরাহ্ন
হ্যাঁ, তবে ওটা তো আবার সরকারি সাইট। হয়তো সময় লাগবে।