RSS

বঙ্গীয় নবজাগরণ প্রসঙ্গে

06 ফেব্রু.

অ্যান্ড্রুজ ও রবীন্দ্রনাথ

(অ্যান এসে অন দ্য বেঙ্গল রেনেসাঁ)
চার্লস ফ্রিয়র অ্যান্ড্রুজ
অনুবাদ: অর্ণব দত্ত

এক

শতবর্ষ পূর্বের বঙ্গীয় নবজাগরণের ধারাটি ষোড়শ শতকের পাশ্চাত্য ইউরোপীয় রেনেসাঁ-চেতনার সঙ্গে আশ্চর্য সাদৃশ্যপূর্ণ। তাই মানুষের ইতিহাসে তার ফলস্রুতিও কিছু কিছু ক্ষেত্রে একই প্রকারের। কারণ, সেদিন যেমন ইউরোপ নতুন জীবনে উদ্বুদ্ধ হয়ে জেগে উঠেছিল, ঠিক তেমনই জেগে উঠছে আজকের এশিয়া।

অন্ধকার যুগের বৌদ্ধিক অসাড়তা কাটিয়ে আরব সভ্যতা ও ইসলামীয় ধর্মবিশ্বাস পাশ্চাত্য জগতকে চমকিত করেছিল। ইউরোপের ক্ষেত্রে সেই ঘটনা ছিল আঘাতস্বরূপ। আর তারপরেই গ্রিক ও লাতিন ধ্রুপদী সাহিত্যের পুনরুদ্ধার তথা খ্রিস্টীয় ধর্মশাস্ত্রের নবতর ব্যাখ্যা একত্রে সেখানে নিয়ে আসে এক পরিপূর্ণ সংস্কার ও নবজাগরণ।
বঙ্গদেশে পাশ্চাত্য সভ্যতাই চমকিত করেছিল প্রাচ্যকে – তাকে উজ্জীবিত করেছিল এক নতুন জীবনে; চালিত করেছিল এক অত্যাশ্চর্য পুনর্জাগরণের পথে। এর পরই পুনরুজ্জীবিত হয়ে ওঠে ধ্রুপদী সংস্কৃত সাহিত্য; প্রাচীন ধর্মগুলির মধ্য থেকেই সাধিত হয় সেগুলির সংস্কার। এই দুই চালিকাশক্তি একযোগে বঙ্গীয় নবজাগরণকে এশিয়ার এক জীবন্ত শক্তিতে পরিণত করে। বঙ্গদেশের অভ্যন্তরে সাহিত্য ও শিল্প-আন্দোলন প্রতিভাত হয় সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা হিসাবে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হন তার রাজমুকুট।

দুই

ঊনবিংশ শতকের প্রথম পাদে বঙ্গদেশের এক জ্বলন্ত প্রশ্ন ছিল ইংরেজি ভাষার বিস্তারকে উৎসাহ দান করা উচিত কিনা। ১৮৩৫ সালে ম্যাকাউলির বিখ্যাত মিনিট বা সভাবিবরণীটিতে ইংরেজি ভাষা প্রতিষ্ঠিত হয় উচ্চশিক্ষার মাধ্যম হিসাবে। স্যার জন সিলে লিখেছেন, ‘বিশ্বে ইতিপূর্বে কখনও অধিক গুরুত্বপূর্ণ কোনও প্রশ্ন আলোচিত হয়নি।’ কথাটি লক্ষণীয়। এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিষয়টি সম্পর্কে অবগত না থাকলে কেবলমাত্র বঙ্গদেশ নয়, বরং প্রাচ্যের সকল দেশের অধিবাসীদের নিকটেই প্রসঙ্গটি দুর্বোধ্য এক অতিরঞ্জন মনে হতে বাধ্য।

ম্যাকাউলি যদিও জয়ী হয়েছিলেন; তথাপি তাঁর কয়েকটি সূত্র ছিল অযৌক্তিক ও যথার্থতারহিত। ধ্রুপদী সংস্কৃত সাহিত্যের উপর বর্ষিত হয় তাঁর ঘৃণা। বাংলা সাহিত্য তাঁর চোখে ছিল নিষ্ফলা। এই ধরনের মন্তব্য করে তিনি এক মর্মান্তিক ভুল করেন। অবশ্য আশ্চর্যের কথা এই যে, ঐরূপ সংকীর্ণ দৃষ্টিভঙ্গি সত্ত্বেও তাঁর বাস্তববাদী অন্তর্দৃষ্টি তাৎক্ষণিকভাবে খুব একটা ভ্রান্ত ছিল না। স্বদেশী পুনর্জাগরণের সেই মুহুর্ত আসলে তখনও আসেনি। প্রয়োজন ছিল বাইরের এক প্রচণ্ড আঘাতের আর সেই প্রয়োজনীয় আঘাতটি হেনেছিল ইংরেজি শিক্ষা।
কিন্তু প্রথম যুগে প্রাপ্ত এই নবজীবন সর্বতোভাবে স্বাস্থ্যকর ছিল না। সহিংস চরম অবিবেচক পথে প্রথমেই তা আঘাত করল প্রাচীন রীতিনীতিগুলিকে; মূলচ্ছেদ করল ধর্মীয় বিশ্বাসসমূহের। সর্বাপেক্ষা গুরুতর বিশৃঙ্খলা দেখা দিল সামাজিক স্তরে। যে অভ্যাসগুলি একান্তই পশ্চিমি, সেগুলির অন্ধ অনুকরণ করতে গিয়ে জন্ম নিল এক দুঃখজনক আদর্শগত বিভ্রান্তি। মেধাবী অকালপক্কতার এই যুগে নয়া জীবনীশক্তি নিয়ে নানাপ্রকার অলীক পরিকল্পনা চলত। তা ছিল স্বেচ্ছাচারী ও উচ্ছৃঙ্খল – কতকটা ঝঞ্ঝাবিক্ষুব্ধ সমুদ্রে হালভাঙা নৌকার মতো।

তিন

যে অবিস্মরণীয় ব্যক্তিত্ব বঙ্গদেশকে এই সংকট থেকে উদ্ধার করেন তিনি মহামতি রাজা রামমোহন রায়। এই অসামান্য মেধাসম্পন্ন মণীষী ছিলেন সমসাময়িককালের অন্যতম শ্রেষ্ঠ এক রাজর্ষি। সেযুগে তাঁর সমকালীনদের অতিক্রম করে এই রাজকীয় প্রতিভা প্রত্যেকটি দ্রুত প্রবহমান নতুন চিন্তাধারার যথাযথ মূল্যায়ন করেন এবং নিজেকে পরিচালিত করে নিয়ে যান প্রায়-নির্ভুল এক আচারপরায়ণতায়। ম্যাকাউলির সমান বাস্তববোধসম্পন্ন রামমোহন অবশ্য কোনও সাধারণ সুযোগসন্ধানী ছিলেন না। তিনি ছিলেন সত্যকার ভবিষ্যদ্রষ্টা; তাঁর মধ্যে ছিল মহাপুরুষোচিত পরম উদ্যমের এক পবিত্র আগুন। বিদ্যাচর্চার ক্ষেত্রে তিনি ছিলেন প্রথম যুগের নব্য পাশ্চাত্যশিক্ষার সক্রিয় পথপ্রদর্শক। ম্যাকাউলির কর্মসূচি তিনি আগ্রহের সঙ্গে এগিয়ে নিয়ে চলেন। কিন্তু তাঁর সেই বিস্ময়কর পূর্ণজীবনের শ্রেষ্ঠ কৃতিত্ব হল বাঙালি জাতির মনে ভারতের অতীত সম্পর্কে এক সত্য শ্রদ্ধাবোধের পুনরুজ্জীবন। পরবর্তীকালে যা এদেশের ধ্রুপদী সংস্কৃত সাহিত্যেরও পুনরুজ্জীবন ঘটায়। সর্বোপরি, তাঁর মাতৃভাষা বাংলাকে তিনি অবজ্ঞা করেননি, বরং বিদ্যাচর্চার ক্ষেত্রে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করেন তাকে।

চার

বঙ্গদেশের বৌদ্ধিক পুনর্জাগরণের পরবর্তী অবিস্মরণীয় ব্যক্তিত্ব ছিলেন রবীন্দ্রনাথের পিতা দেবেন্দ্রনাথ। প্রায় অর্ধশতাব্দীকাল স্থায়ী হয়েছিল তাঁর কর্মপ্রভাব। এই সাহিত্যবৃক্ষের ভূগর্ভস্থ মূল যদি হন রামমোহন রায়, দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর তবে তার সুদৃঢ় তেজদৃপ্ত কাণ্ডস্বরূপ এবং তাঁর পুত্র রবীন্দ্রনাথ সে-বৃক্ষের ফুল ও ফল। সাহিত্যের ইতিহাসে এমন প্রত্যক্ষ পারম্পর্য সচরাচর দৃষ্ট হয় না।

দেবেন্দ্রনাথের ধর্মীয় চরিত্র সমসাময়িক যুগকে তাঁর স্বকীয় নীতিবোধের মহিমায় মহিমান্বিত করেছিল। তাঁর আধ্যাত্মিক কর্তৃত্বের প্রভাব এতই গভীর ছিল যে সর্বসাধারণ্যে তিনি মহর্ষি নামে প্রসিদ্ধি লাভ করেন। ইংরেজি ফ্যাসানের প্লাবনের যুগেও তিনি প্রাচীন ঐতিহ্যসূত্রগুলিকে আঁকড়ে ধরে থাকেন এবং স্বদেশকে তার নিজস্ব ইতিহাসের সঙ্গে সম্পৃক্ত করে এরূপ বন্ধনগুলিকে শক্তিশালী করে তোলেন।
পুত্রদ্বারা অনূদিত তাঁর আত্মজীবনীতে প্রকাশিত হয় আধুনিক বঙ্গদেশের গভীর অধ্যাত্মশক্তি তথা বৌদ্ধিক জ্ঞানলাভের জন্য তাঁর অদম্য পিপাসার কথা। ঠাকুর পরিবার ইতিপূর্বেই আকর্ষিত হয়েছিল রাজা রামমোহন রায়ের বৃত্তের প্রতি। বাল্য থেকে যৌবনে নিজের জীবনে এই মহান সংস্কারকের অমলিন স্মৃতি দেবেন্দ্রনাথের জীবনের অন্যতম পাথেয় প্রতিপন্ন হয়।
ঊনবিংশ শতকের মধ্যভাগে এই সকল প্রারম্ভিক আন্দোলন বঙ্গদেশের বৌদ্ধিক ইতিহাসে এক সৃষ্টিশীল পর্যায়ের সূচনা ঘটায়; যা শুধু বঙ্গীয় নবজাগরণের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে না, সমগ্র প্রাচ্যের নিকট নবযুগের সূর্যোদয় রূপে প্রতিভাত হয়।

পাঁচ

যে চিহ্নটি বঙ্গদেশের এই নবজাগরণের উপর জ্বাজল্যমান, তা হল নব্য পাশ্চাত্য শিক্ষা ও পুনরুজ্জীবিত ধ্রুপদী সংস্কৃত সাহিত্যের মধ্যকার দ্বন্দ্বের চিহ্ন। এযুগের লেখকদের মধ্যে সর্বাপেক্ষা মনোহর তথা ক্ষণস্থায়ী কুসুমটি হলেন তরু দত্ত। তরু দত্ত কেবল ইংরেজি ভাষাতেই গান রচনা করতেন। কিন্তু তাঁর সামগ্রিক সাহিত্যকর্মে পরিব্যপ্ত প্রাচীন সংস্কৃতের সুবাস তাকে পরিণত করে এক জাতীয় সম্পদে। মাইকেল মধুসূদন দত্তও ইংরেজিতে কাব্যরচনা শুরু করেন; কিন্তু সেই সাহিত্যিক সক্ষমতার চূড়াতে অবস্থানকালেই তিনি ইংরেজি ভাষা পরিত্যাগ করে কাব্যরচনা শুরু করেন আশ্চর্য সুনাদিত ও রাজসিক বাংলা ছন্দে। তাঁকে বলা হয় পুনর্জাগরিত বঙ্গদেশের মিলটন। বঙ্কিমের উপন্যাসগুলি প্রতি মুহুর্তে মনে করিয়ে দেয় পাশ্চাত্য রোম্যান্স সাহিত্যিকদের কথা। নব্যবঙ্গের নবলব্ধ সম্পদের আনন্দই যে এগুলির আবির্ভাবের পশ্চাদে বিদ্যমান, তা অনুমান করতে কোনও ভুল হয় না আমাদের।

এই ইংরেজি শিক্ষার প্রতি এ যুগের আকর্ষণ বা নিষ্ঠা যতই থাকুক না কেন, অন্তরে তাঁরা ছিলেন প্রাচীন ভারতীয় আদর্শের প্রতি সত্যবদ্ধ। এই পর্যায়ের শক্তি নিহিত ছিল এখানেই – যে পাথরে তাঁরা নিজেরা খোদিত ছিলেন, সেই পাথর তাঁদের কাছে ছিল অতি সুপরিচিত। নিজেদের জন্মগত অধিকারকে তাঁরা ঘৃণা করতেন না। শুধু ভাষাই নয়, সাহিত্যের নতুন বিষয়ও তাকে নিয়ে আসে মানুষের সন্নিকটে। পশ্চাদপদ গ্রামীণ বঙ্গদেশের জীবন স্থাপিত হয় এক নতুন উপলব্ধির কেন্দ্রে। শুধু বিষয়বস্তুর খাতিরে তার দেহে সংস্থাপিত হয় মধ্যযুগীয় বা প্রাচীন উপাদান। অবশেষে মানুষের মনে জেগে ওঠে এক সার্বভৌম আদর্শচেতনা। স্বদেশী কাব্য ও সংগীতধারার জীবন্ত প্রস্তরের মধ্য থেকে সৃষ্টি হয় প্রকৃত জাতীয় সাহিত্য ও শিল্প।

ছয়

অতীতের এই সমৃদ্ধ ঐতিহ্যের মধ্যে প্রবেশ করেন যুবক কবি রবীন্দ্রনাথ। এই আদর্শচেতনাটিকে বঙ্গদেশের এক জ্বলন্ত উদাহরণে পরিণত করতে সর্বাধিক শ্রমদান করেন তিনিই। আমার এক বন্ধু আমকে একটি ঘটনার কথা বলেছিলেন। একবার প্রবীণ ঔপন্যাসিক বঙ্কিমকে মালা পরিয়ে সম্মানিত করা হয়। বৃদ্ধ মালাটি নিজের গলা হতে খুলে নিয়ে তাঁর পদতলে উপবিষ্ট নবীন সাহিত্যস্রষ্টা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গলায় পরিয়ে দেন সেটি।

বঙ্কিমের একাজ আজ সর্বসাধারণের দৃষ্টিতে তাঁর বদান্যতা ও যাথার্থ্যবোধের পরিচায়ক রূপে গণ্য হয়। যে উচ্চতা অর্জনে অন্যরা প্রাণপাত করছিলেন, অলঙ্ঘনীয় বাধার মধ্যেও রবীন্দ্রনাথ তাঁর সর্বোচ্চ মেধার স্বচ্ছন্দ আয়াসে সেখানে উন্নীত হন। যে শিল্পাদর্শ পূর্বে ধোঁয়াশাচ্ছন্ন ছিল, মানসচক্ষে তা তিনি দেখতে পান সুষ্পষ্ট। এছাড়াও পরবর্তীকালের রচনাগুলির মাধ্যমে তিনি তাঁর পিতৃদেবের অধ্যাত্মব্রতকে এগিয়ে নিয়ে চলেন; সহজ সুন্দরের আবরণে আবরিত করেন তাঁর স্বকীয় ধর্মচেতনাকে।
সাম্প্রতিক বছরগুলিতে তাঁর খ্যাতি লাভ করেছে পরিপূর্ণতা; তাঁর কাব্যে দেখা দিয়েছে দিব্যপ্রেরণার বৈশিষ্ট্য। প্রকৃতির কোলে সীমাহীন আনন্দের তুরীয় অবস্থান থেকে বেরিয়ে তিনি প্রবেশ করেছেন জগতের বিপুল দুঃখরহস্যে; দরিদ্রের বোঝার ভার ভাগ করে নিতে; অবিচল থেকে মৃত্যুর মুখোমুখি হতে; ঈশ্বরের নির্মেঘ দৃষ্টির অনুসন্ধান করতে, তাকে অর্জন করতে।

সাত

এ সব কিছুর মধ্যেই রবীন্দ্রনাথ অবস্থান করেন বঙ্গদেশের হৃদয়ের অত্যন্ত নিকটে। ১৯১২ সালে যখন ওঁর কাছে ছিলাম, তখন দেখতাম শান্তিনিকেতনের ছেলেদের প্রীতিসম্ভাষণের জন্য কিভাবে তাঁর চোখ যেন সমুদ্র পেরিয়ে ছুটে চলত। শিলাইদহে গাঁয়ের মানুষগুলির মাঝেও ফিরে আসতে চাইতেন তিনি; তাদের কাছে তিনি ছিলেন পিতা ও সুহৃদ।

বঙ্গদেশের মাটি থেকে তিনি গ্রহণ করেছিলেন তাঁর গভীরতম অনুপ্রেরণা। তাই সেই বঙ্গদেশ যখন তাঁর সংগীতাভিসারের উচ্চ চেতনাধারায় অনুরণিত হয়, তখন তাতে আশ্চর্যান্বিত হওয়ার কিছুই থাকে না। স্বদেশবাসীর আশাকে উজ্জীবিত করে ইতিহাসের এক অমোঘ মুহুর্তে তিনি তাদের দিয়েছেন ভাবসঞ্জীবনী। শিল্প-সংগীতের দেশে,

বৃহৎ বিশ্বের অন্তর্যামী সত্ত্বা
অনাহতের স্বপ্নে

অবশেষে তাঁর কাব্যের মধ্যে ও মাধ্যমে খুঁজে পেয়েছে অন্তর্দৃষ্টি। আজ বঙ্গদেশ যে স্বপ্নে বিভোর, হয়ত তার সমস্তটা পূর্ণ হবে না কোনওদিন।

উচ্ছ্বাস কলরোল ফুরাবে
হারিয়ে যাবে নেতা ও নৃপতির দল

সাহিত্য ও সাম্রাজ্য – উভয়ের রঙ্গমঞ্চ থেকেই। কিন্তু সংগীত নামক মহৎ মাধ্যমটির দ্বারা উজ্জীবিত গণশক্তি আশান্বিত হয়ে নিনাদিত হবে। আজ নরনারী এমনকি শিশুরাও রবীন্দ্রনাথের দৃষ্টিতে ‘সোনার বাংলা’র স্বরূপটি অনুধাবন করতে সক্ষম।
এই শুভ স্বরূপটি উজ্জ্বল ও দীপ্তিমান। আর এক সসম্ভ্রম পূতচেতনা তার মধ্যে নিহিত যে ঈশ্বর তাঁর সন্তানদের ত্রাণের নিমিত্ত আবিভূর্ত হয়েছেন।
আপামর জনসাধারণের মধ্যে সংগীত ও সাহিত্যের সর্বোচ্চ শক্তির সাহায্যে এই নতুন চেতনাশক্তির জাগরণ পাশ্চাত্য দৃষ্টিতে কিছু অসম্ভব মনে হলেও, একথা অবশ্য স্মর্তব্য যে ভারত আজও অরূপের প্রতি রূপের আস্থায় বিশ্বাসী; যেমন অন্তরের গভীরে, তেমনই বহিরঙ্গে॥

(লেটারস টু আ ফ্রেন্ড – রবীন্দ্রনাথ টেগোর’স লেটারস টু সি এফ অ্যান্ড্রুজ গ্রন্থের সূচনাভাগ থেকে অনূদিত)

 
3 টি মন্তব্য

Posted by চালু করুন ফেব্রুয়ারি 6, 2011 in পুরনো লেখা

 

ট্যাগ সমুহঃ

3 responses to “বঙ্গীয় নবজাগরণ প্রসঙ্গে

  1. Jhumpa Bhaskar Bose

    নভেম্বর 28, 2012 at 12:45 অপরাহ্ন

     
  2. DAS N.C

    নভেম্বর 28, 2014 at 3:53 অপরাহ্ন

    আমি কি আপনাদের ব্লগে লেখা পাঠাতে পারি?

     
    • অর্ণব দত্ত

      অগাষ্ট 22, 2015 at 4:04 পুর্বাহ্ন

      হ্যাঁ, আপনিও আমার ব্লগে লেখা পাঠাতে পারেন।

       

মন্তব্য করুন

Fill in your details below or click an icon to log in:

WordPress.com Logo

You are commenting using your WordPress.com account. Log Out /  পরিবর্তন )

Facebook photo

You are commenting using your Facebook account. Log Out /  পরিবর্তন )

Connecting to %s

 
%d bloggers like this: